ঢাকায় জনৈক বাইকারের নির্লজ্জ অপপ্রচার, স্তম্ভিত দেশবাসী

২৯৫৭ পঠিত ... ২১:৫৫, নভেম্বর ২৯, ২০১৯

সারাবিশ্বে দিনদিন ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে ঘুষের ঘনঘটা। ইউরোপ আমেরিকায় যেখানে ঘুষের কারণে সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা দুর্নীতিতে জর্জরিত। সেখানে একমাত্র ঘুষমুক্ত দেশ হিসাবে বাংলাদেশ এতোদিন বিশ্বের দরবারে মাথা উচু করে দাড়িয়েছিলো। বাংলাদেশি হিসাবে আমরা ছিলাম গর্বিত। কিন্তু এবার ইতিহাসে প্রথমবারের মত বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে ঘুষ শব্দটা ব্যবহার করেছে একজন বাইকার। তিনি তার বাইকের পেছনে নাম্বারপ্লেটের জায়গায় লিখেছেন, 'ঘুষ দেইনি, নাম্বার পেতে দেরি হবে।

এই ঘটনা সারাবিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। বিশ্ববাসীর মনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে, 'তাহলে কি বাংলাদেশেও হানা দিয়েছে ঘুষের কালো থাবা? পৃথিবীর একমাত্র ঘুষমুক্ত দেশটি কি তবে কল্পকাহিনী? বাস্তবে সেখানেও ঘুষ আছে? স্তম্ভিত বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষ৷ অনির্ভরযোগ্য একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, এই ছবিটি দেখামাত্রই পদত্যাগ করতে গিয়েও করেননি দেশের সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রী। তার এক ক্লোজ পিয়ন জানান, ছবিটি দেখে মন্ত্রী সাহেব একেবারে মুষড়ে পড়েন। তাকে দেখেই মনে হচ্ছিল যে তিনি মনে মনে ভাবছেন, 'এই কলংক নিয়ে আমি মন্ত্রীত্ব করব না। আগে এটা সুরাহা হোক। তারপর ভেবে দেখব।'

তবে দেশবাসী আছে প্রশাসনের পক্ষেই। তারা বাইকারের এই প্লেটের লেখাকে, দেশবিরোধী অপপ্রচার হিসাবেই আখ্যায়িত করছে। এর পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র সৃষ্টিকারী বিদেশি শক্তি আছে যারা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাচ্ছে বলেও অনেকের ধারণা।

এক মিরপুরবাসী বাইকার আসাদ উদ্দিনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ঘুষ কী? এটা খায় না পরে? কখনো তো নামই শুনিনি। খাওয়ার তো প্রশ্নই আসে না।' নিজের রেজিস্ট্রেশন করা পালসারের উপর বসে আরেক বাইকার জানান, 'হলিউডের সিনেমা দেখে আমি ঘুষের ব্যাপারে জেনেছি। তবে আমাদের দেশে এইধরনের কিছু থাকার দূরতম সম্ভাবনাও নেই।'

উক্ত বাইকারের কঠোর শাস্তির দাবিতে রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে সাধারণ জনগন। সেখান থেকে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার দায়ে আলোচ্য বাইকারকে অবিলম্বে গ্রেফতার করার দাবিও জানানো হয়।

আমাদের প্রতিনিধি ঐ বাইকারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার ফেসবুক আইডি ডিএক্টিভ অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তার বাসায় গিয়ে ফেসবুক এক্টিভ করতে বললে সে অস্বীকার জানায়৷ এজন্য তার সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।

ঘটনার আরো গভীরে যাচাই করার জন্য eআরকি টিম গিয়েছিলো ছদ্মবেশে বাইকের লাইসেন্স নেয়ার জন্য। সেখানে লাইসেন্স ও নাম্বারপ্লেট দেয়ার কাজে নিয়োজিত অফিসারের কাছে ঘুষের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আগে আপনি বলুন আপনি সাংবাদিক নাকি সত্যিই লাইসেন্স নিতে চান?'

সাংবাদিক হলে কী হবে আর লাইসেন্স নিতে হলে কী হবে, এমন প্রশ্ন করলে ঐ কর্মকর্তা জানান, 'আপনি যদি সাংবাদিক হন তো জেনে রাখুন আমাদের এই ডিপার্টমেন্ট সম্পূর্ণ ঘুষ মুক্ত। এখানে ঘুষের কোনো লেনদেন কখনোই হয়নি। আপনি বিনামূল্যে লাইসেন্স পাবেন যদি পরীক্ষায় পাশ করেন তবেই। আর যদি আপনি সাংবাদিক না হয়ে লাইসেন্স নিতে আসা লোক হন তো আঠারোশো টাকা লাগবে। পরীক্ষায় পাশফেল আমরা দেখব। আপনি টাকা দিয়ে নাম্বারপ্লেট নিয়ে যান।'

আমরা যেহেতু সাংবাদিক ছিলাম সেহেতু আমরা প্রমাণ পেয়ে যাই যে এখানে ঘুষের কোনো নামগন্ধও নেই। আলোচ্য নাম্বারপ্লেটের লেখাটা সম্পূর্ণ গুজব ছাড়া আর কিছুই না।

২৯৫৭ পঠিত ... ২১:৫৫, নভেম্বর ২৯, ২০১৯

Top