পৃথিবীর সবচেয়ে মজার জোক

৮৫২৭ পঠিত ... ১৭:০৫, নভেম্বর ১৩, ২০১৯

পৃথিবীর সবচেয়ে মজার জোক কোনটা?

অন্তত বেশিরভাগ লোক কোন জোকটারে সবচেয়ে বেশি ফানি মনে করে, এমন ভাবনা কি আপনার মাথায় কখনও আসছে?

রিচার্ড ওয়াইজম্যানের মাথায়  কিন্তু সেই ২০০১ সালেই আসছে। এই ব্রিটিশ মনোবিজ্ঞানী রীতিমতো পৃথিবীর সবচেয়ে মজার জোকটা খুজে পেতে এক্সপেরিমেন্ট শুরু করে দেন। ওয়াইজম্যান তার সহকর্মীরে নিয়া লাফল্যাব নামের ওয়েবসাইট চালু করেন। ওয়েবসাইটে জোক সাবমিট করার পাশাপাশি জোকের রেটিং দেয়ার জন্যে আছে গিগলোমিটার নামের স্কেল। 

বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ সেখানে জোক সাবমিট করেন এবং গিগলোমিটারে রেটিং দিয়ে যান। ১২ মাসে প্রায় ৪০০০০ জোক আর ২ মিলিয়ন রেটিং জমা হয় লাফল্যাবে। এতো ব্যাপক আকারে জোক স্টাডি আর হয় নাই। ফলে গিনেস বুকস অফ রেকর্ডেও নাম ওঠে।  

৩ অক্টোবর ২০০২ -এ ওয়াইজম্যান ঘোষনা দেন তারা পৃথিবীর সবচে মজার জোকটা খুঁজে পাইছেন। 

তবে তার আগে রিচার্ড ওয়াইজম্যানের লাফল্যাবের জনমত জরিপের ৪০০০০ জোকের মধ্যে  রানার আপ হওয়া জোকটা পড়া যাক: 

মাঠের মধ্যে শার্লক হোমস আর ওয়াটসন ক্যাম্প ফেলছে। তাবুর ভেতরে ঘুমায়ে ছিল দুইজনে।

মধ্যরাতে ওয়াটসনরে জাগায়ে হোমস বললো, ওয়াটসন, আকাশের দিকে তাকাও। বলো কী দেখতেছো।

ওয়াটসন: দেখতেছি অজস্র তারা, হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ তারা। 

হোমস: এখান থেকে তুমি কী সিদ্ধান্তে যাবা?  

ওয়াটসন:  হুম, যদি লক্ষ কোটি তারা থেকে থাকে আর তাদের ক্ষুদ্র একটা অংশও গ্রহ হয় তাইলে সেইখানেও পৃথিবীর মতো গ্রহ থাকতে পারে। আর পৃথিবীর মতো গ্রহের অস্তিত্ব থাকলে সেখানে জীবনও থাকতে পারে।

হোমস:  **মার! আমাদের তাবুটা চুরি হয়া গেছে।

ওয়াইজম্যানের মতে, কোনো কিছু অধিকাংশ মানুষের কাছে ফানি লাগতে হইলে গল্পের/জোকের ক্যারেক্টারগুলি খুবই আইডেন্টিফায়েবল এবং কার্টুন-লাইক অর্থাৎ স্টেরিওটাইপ হওয়া *একটা* জরুরি পূর্বশর্ত।

জোক বা ফানি ন্যারেটিভে চরিত্রেরা বেশি কমপ্লেক্সিটি ধারণ করতে পারে না। খুবই লিনিয়ার হয় ক্যারেক্টারগুলি। কমিক ন্যারেটিভে বোকা মানে খুবই বোকা (এতই বোকা যে...!)। লোভী মানে চরম লোভী অন্য কোনো ট্রেইট আছে বলেই মনে হয় না… এইরকম। 

এই জোকটাতে হোমস স্পষ্টত স্মার্ট আর ড. ওয়াটসন বোকা এমন স্টেরিওটাইপ কাজ করে। এই জোকে হোমসের জায়গায় ওয়াটসনকে বসাইলে মজাটা কমে আসে। আরেকটা ব্যাপার হলো, ব্যাকগ্রাউন্ড নলেজ। যারা শার্লক হোমস চরিত্রটা সম্পর্কে আদৌ কোনো ধারণা রাখে না তাদের চাইতে যারা রাখে তাদের কাছে জোকটা বেশি ফানি লাগবে। 

কৌতুকের ভাষান্তর প্রায় অসম্ভব একটা ব্যাপার। তা-ও যতটুকু সম্ভব, বিজয়ী জোকটা ছিল মোটামুটি এমন:

জঙ্গলে দুই শিকারী শিকারে গেছেন। হঠাৎ একজন অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটায়ে পড়ে। চক্ষু কোটরাগত। অবস্থা মৃতবৎ। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেছে। অপর শিকারী উত্তেজিত হয়ে এমার্জেন্সি সার্ভিসে ফোন করেঃ ‘আমার বন্ধু মারা গেছেন। এখন আমি কী করতে পারি?’

অপারেটর বলল, শান্ত হোন। আমি হেল্প করতেছি। প্রথমে, এনশিওর করেন যে উনি আসলেই মারা গেছেন।

তারপর সংক্ষিপ্ত নীরবতা। তারপর গুলির শব্দ। এবার ফোনে সেই শিকারি বলছে, ওকে। এবার?

অলংকরণ: শফিক হীরা

সবচে বেশি রেটিং পাওয়া এই জোকটা সাবমিট করছেন ম্যানচেস্টারের ৩১ বছর বয়সী (এখন তার বয়স  ৪৮ বছর) সাইকিয়াট্রিস্ট গুরপাল গোসাল।  

বিশেষ করে জরিপে প্রথম স্থান লাভ করা এই জোকটা তার নিজের কাছে খুব মজার মনে হয় কিনা জানতে চাওয়া হইলে ওয়াইজম্যান বলেন:

‘আমার মনে হয় পৃথিবীর সবচে মজার জোকটা খুব একটা মজার না। এইটা ভয়াবহ। সম্ভবত, সবচেয়ে মজার না, বরং পৃথিবীর সবচেয়ে স্বচ্ছ, বৈশিষ্ট্যহীন, এবং বৈশ্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য জোকটা আমরা খুঁজে পেয়েছি।    

রিচার্ড ওয়াইজম্যানের মতে, জোকটা উল্লেখযোগ্য কারণ ভিন্ন ভিন্ন দেশের ও সংস্কৃতির নারী-পুরুষ এবং বুড়ো-খোকা সবার কাছেই জোকটা মজার লেগেছে।  সাবমিট করা অনেক জোক নির্দিষ্ট গ্রুপের লোকের কাছ থেকে অনেক বেশি রেটিং পাইছে, কিন্তু এই জোকটার গ্রহণযোগ্যতা ছিলো পুরা বিশ্বজুড়ে।

৮৫২৭ পঠিত ... ১৭:০৫, নভেম্বর ১৩, ২০১৯

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top