১.
ভাতিজি ফোন দিয়েছে। বয়স ছয় বছর। ফোন ধরলাম।
-হ্যালো, নোমান হিহিহি, নোমান হিহিহি
-জ্বি বলো
-নোমান হিহিহি, বলো তো তুমি যদি বিয়ে করো তোমার বৌয়ের নাম কী হবে? হিহিহি
-আমি তো জানিনা। তুমি বলো।
-হিহিহি তুমি বিয়ে করলে তোমার বৌয়ের নাম হবে নোমানী। হিহিহি।
২.
গত ফেব্রুয়ারির ঘটনা। বাড়ির উঠানে সন্ধ্যায় বিশাল মিটিং বসেছে। মিটিং-এ আলোচনার বিষয় আমার বিবাহ। অসফল আলোচনার শেষে সবাই একমত পোষণ করলো, 'বিয়ে করতেই হবে। হাতে টাইম ৬ মাস।'
আমি তখনো সাইলেন্ট মুডে। ততক্ষণে ব্যাপারটা সালিশের পর্যায়ে চলে গেছে। আমার শাস্তি ধার্য হয়ে গেছে। ছয় মাসের মধ্যে বিয়ে করতে হবে। পাত্রী দেখা লাগলে পনেরো দিনের মধ্যে জানাতে হবে, না দেখা লাগলেও জানাতে হবে। আর চাইলে আমি কাউকে ভাগিয়েও বিয়ে করতে পারি। এই ব্যাপারে আপত্তি করার কেউ থাকবে না! বিয়ে করে ফেসবুকে ছবি আপলোড দিয়ে তাদেরকে ট্যাগ করলেই হবে!
৩.
একমাস পর ভাবীর ফোন।
-কী ব্যাপার পনেরো দিনের কথা বলে একমাস হলো। তোমার ডিসিসান কী?
-পালিয়ে বিয়ে করবো।
-কাকে?
-অনেককেই বলেছি কেউ রাজি হচ্ছে না। পালিয়ে বিয়ে করার জন্য পাত্রী দেখা যায়? ধরেন পাত্রী দেখে পছন্দ করে প্রস্তাব দিলাম চলেন পালিয়ে যাই!
৪.
পাত্রী দেখা হয়েছে। আবার ফোন।
-একটা পাত্রী আমাদের পছন্দ হয়েছে। চিটাগং কবে আসবা?
-দেখতে কেমন?
-সুন্দর, মিষ্টি।
-আমার সাথে ডেটে যাবে?
-কী বললা?
-জ্বি না মানে ইয়ে এই তো, মানে তারিখ ডেট, ডেড বুঝেন নাই আমার ফোনটা ডেড। ভেরি স্যাড, পরে ফোন দিবো।
৫.
সেই ঘটনার মাস দশেক পর।
-তা কী বলো তুমি। অনেকদিন তো হলো। তোমার ভাবতে কতো টাইম লাগে? তুমি হ্যাঁ বললেই আমরা পাত্রী দেখা শুরু করবো। দেখবো?
-পাত্রী দেখে কী হবে?
-বিয়ে করবা। বয়স কতো হইছে খেয়াল আছে?
-বিয়ে করে কী হবে?
-এই যে সকাল বিকাল গাইগুই করো খাওয়া দাওয়া হয় না, শরীর খারাপ এইসব হবে না। বৌ ভালো ভালো রান্না করবে। ভালো ভালো খাবা।
-কাচ্চি বিরিয়ানী?
-কাচ্চি না শুধু তেহারী, ফ্রাইড রাইস খিচুড়ী সব রাঁধবে।
-তাহলে ঠিকাছে। কাচ্চিতে আলু গোটা গোটা নাকি পিস পিস করে দেয় জেনে নিবেন।
-তুমি যেমন চাও তেমন দিবে। আমি মাকে বলতেছি। আমরা পাত্রী দেখি। পছন্দ হলেই বিয়ে। এরমাঝে কোনো ঝামেলা করা চলবে না। অনেক ঝামেলা করছো।
-কিন্তু ভাবী, একটা প্রবলেম!
-কী প্রবলেম? বলো। রাজি হইছো আর কোনো প্রবলেম নাই।
-ধরেন আমার যদি দুইটা পাত্রী পছন্দ হয় সেক্ষেত্রে আমি কী দুইটা বিয়ে করতে পারবো?
ভাবী দীর্ঘক্ষণ চুপ করে বললো, তোমার বিয়ে করার ইচ্ছা নাই সেইটা বলো। দুইটা পছন্দ হইলে দুইটা বিয়ে করবা। চারটা হইলে চারটা করবা। আমরা পাত্রী দেখতেছি।
আমি মনে মনে চারটা বিয়ে করার জন্য অপেক্ষা করছি।




পাঠকের মন্তব্য