কমছে না সড়ক দুর্ঘটনা। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে নতুন সড়ক আইন করার পর পরই তা বাতিলের জন্য পরিবহন শ্রমিকরা নেমেছেন আবারো পরিবহন ধর্মঘটে। এদিকে বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী, প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ চালক কোনো লাইসেন্স ছাড়াই গাড়ি চালান (সূত্র: সৈনিক যুগান্তর)। এমন পরিস্থিতিতে শোনা যাচ্ছে নতুন এক দাবির কথা। একেরও কম সূত্র থেকে জানা গেছে, বাসে ওঠার জন্য যাত্রীদের লাইসেন্স করানোর নিয়ম চেয়ে নতুন আইন প্রনয়ণের জন্য শীঘ্রই আন্দোলনে নামতে পারেন পরিবহন শ্রমিক।
যাত্রীদের লাইসেন্স করানোর এই আইনটাকেই ন্যায়বিচার দাবি করে লাইসেন্সবিহীন এক ড্রাইভার জানান, 'জান যার, ট্রেনিং লাগবে তার। আমাগো জান লইয়া কোন চিন্তা নাই। এক্সিডেন্ট হইয়া গেলে বাসের জানালা দিয়ে নেমে উসাইন বোল্ট গতিতে দৌড়াইয়া তাজমহলে চলে যাওয়ার ট্রেনিং আমাগো নেয়াই আছে। যুক্তির কথায় আসেন।' এরপর তিনি নিজের এমন যুক্তিতে সমর্থনের আশায় আশেপাশে তাকানোর আগেই আশপাশ থেকে ‘ঠিক ঠিক’ রব চলে আসে।
যাত্রীদের লাইসেন্সের জন্য কেমন ট্রেনিং দরকার বলে মনে করেন? নিজের জান বাচাতে দিক-নির্দেশনার আশায় আমাদের প্রতিনিধির এমন প্রশ্নে এক হেলপার জানান, 'এই মনে করেন, বাসে এক পা উঠাইলেই আমরা গিয়ার ১ নাম্বার থেকে ৪ নাম্বারে নিয়া টান দিমু। এক্ষেত্রে নিজের নিচের পা’টা বাচানোর দায়িত্বও যাত্রীদেরই। কীভাবে গাড়ি টান দিলেও অলৌকিক শক্তিতে বাসে উঠে যাইতে হবে তা যাত্রীদের শেখানো উচিত। নামার ক্ষেত্রেও সেইম। এক পা নামালেই আমরা আবারো টান দিমু। যাত্রীগোরে নাইমাও যাইতে হইবো আবার রাস্তায় পড়াও যাইবো না! তাছাড়া ‘আগে বাম পা দেন’ বলার ট্রেনিং তো আমাগো আছেই।'
এক বাস রাস্তায় এসে যেভাবে অন্য বাসকে ধাক্কা দেয়, ঠিক তেমনই গতিতে এই হেলপারকে থামিয়ে অন্য একজন বলেন, 'মনে করেন মাঝে মাঝে মেজাজ গরম হইলে আমরা যাত্রীদেরকে বাস থেকে ধাক্কাও দিমু। ধাক্কা দিলেই পইড়া যাওন যাইবো না। শক্ত কইরা বাসের রড ধইরা রাহন লাগবো। বাসের রডগুলো তো আর এমনি এমনি দেয়া হয় নাই! হালার নিজেগো অসাবধানতায় পইড়া মরবো আর দোষ হইবো আমাগো!'
যাত্রীদেরকে জানের মায়া ছেড়ে দেয়ার মতো মানসিকভাবে শক্ত থাকার ট্রেনিং দেয়ার কথাও জানান একজন। তিনি বলেন, 'বাসে উঠার আগে জানের মায়া ছেড়ে দিলেই কিন্তু হয়ে যায়। যেটার মায়াই নাই, সেটা চলে গেলে আর হাউকাউও হবে না। আর যেহেতু বাসে উঠলে জান চলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি সেহেতু দেশের সকল মানুষরে এই ট্রেনিং দেয়া উচিত।'
একজন দার্শনিক ড্রাইভার বিড়িসদৃশ একখানা শলাকা ফুঁকতে ফুঁকতে বলেন, 'মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান! মরণরে সেম্পনলি মাইনা লইতে শিখেন। রোজ একটু একটু করে জনসংখ্যা কমানোর লাইগা আমাগোরে ধন্যবাদ দিবেন তা না! আমগোরে খালি হয়রানি করেন। এভাবে আমাগো হতাশা বাড়াইয়া দিলে যাত্রীগো লাইসেন্স লইয়াও আর লাভ হইবো না! লাইসেন্সওয়ালা যাত্রীরেও হেরপর খাইয়া ফালামু! এই দেশের মানুষের কবে যে বুদ্ধিসুদ্ধি হইবো!'