বহুদিন আগে অর্ডার দেয়া প্রোডাক্টগুলো পেলে রাখবেন কোথায়, দুশ্চিন্তায় ইভ্যালি গ্রাহকরা

৪২৫ পঠিত ... ১৭:৩২, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২

Evaly

দিনাজপুরের দিপু। পেশায় ছাত্র। ইভ্যালির সাইক্লোন অফারে সুলভ মূল্যে অর্ডার করেছিলেন একটি ফ্রিজ। টাকাও পরিশোধ করেছিলেন অগ্রিম। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাসে বন্ধ হয়ে যায় অনলাইন মার্কেটপ্লেস ইভ্যালি।

ইভ্যালি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবারের চাপে পড়েন দিপু। তার বাবা তাকে প্রতিদিন ‘ফ্রিজ কোথায়’বলে প্রশ্নবানে জর্জরিত করতেন। তিনি বারবার বলতেন, ‘একটু অপেক্ষা করুন। ফ্রিজ চলে আসবে।‘

কিন্তু অপেক্ষায় আর কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত গত কোরবানির ঈদের আগে বাজার থেকে নিয়মিত দামেই তাকে ফ্রিজ কিনতে হয়।

এদিকে আইনি জটিলতা কাটিয়ে আবারও ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছে ইভ্যালি। ইভ্যালির নতুন পরিচালনা বোর্ড জানিয়েছে ধীরে সবার পাওনা এবং পণ্য বুঝিয়ে দেয়া হবে। এমন খবরে মুষড়ে পড়েছেন দিপু।

এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘আব্বা নতুন ফ্রিজ কিনে আনার পর বাসায় আর কোনো যায়গায় নাই। ইভ্যালির নতুন ফ্রিজটি আমি এখন রাখবো কোথায়? রাসেল ভাই আমাকে এ কোন পরীক্ষার মধ্যে ফেললেন?’

একই সমস্যায় পড়েছেন রাজশাহীর তরুণ ব্যবসায়ী রাজেশ। তিনি বলেন, সাইক্লোন অফারে টেলিভিশন অর্ডার দিয়েছিলাম। কিন্তু এর মধ্যে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় বউএর সাথে গিফট হিসেবে নতুন টিভি চলে এসেছে। এখন রাসেল ভাইয়ের টিভিটা আমি রাখবো কোথায়?’

শ্বশুরবাড়ির টিভি বাদ দিয়ে ইভ্যালির টিভি দেখলে শ্বশুরবাড়ির সাথে সম্পর্কের অবনতিরও আশংকা করছেন রাজেশ। দীর্ঘশ্বাস ফেলে রাজেশ বলেন, ‘এ কোন পরীক্ষার মধ্যে পড়লাম?’

আরেক সমস্যায় পড়েছেন সিলেটের সাদিয়া। তিনি বলেন, ‘আমি অর্ডার দিয়েছিলাম জামা এবং প্যান্ট। এখন আমার কী হবে?’

এগুলোতে কী সমস্যা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইভ্যালির সাইক্লোনের সময় আমার স্বাস্থ্য একটু বেশি ছিলো। এই দুই বছরে আমি নিয়মিত জিম এবং ডায়েটের মাধ্যমে ওজন কমিয়েছি ২০ কেজি। এখন কী আর অগুলো আমার হবে?’

দীর্ঘশ্বাস ফেলে তিনি বলেন, ‘ঐ জামা প্যান্ট নিয়ে আমি এখন কোথায় যাবো?’

বনানীর বদরুল, পেশায় সরকারী চাকরীজীবী। তিনি অর্ডার দিয়েছিলেন চিনি, মিষ্টি দই এবং কুল ড্রিংক্স। কিন্তু এই দুই বছরে তার উচ্চরক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস ধরা পড়েছে। ডাক্তারের পরামর্শে এখন এগুলো খাওয়া বন্ধ। তিনি বলেন, ‘এই চিনি আর দই এখন  কী করবো তা ভেবেই আমার প্রেশার আর ডায়াবেটিস এখন বাড়তির দিকে। কী যে বিপদ!‘

পঞ্চগড়ের পলাশ প্রেমিকা পারুলের জন্য অর্ডার দিয়েছিলেন মেয়েদের ৩৮ সাইজের জুতা। কিন্তু তার প্রেম ভেঙ্গে গেছে। শুধু তা-ই নয়, গতমাসে তিনি পিংকি নামের অন্য এক মেয়েকে বিয়েও করে ফেলেছিলেন।

এখন গভীর দুঃশ্চিন্তায় দিন কাটছে পলাশের। তিনি বলেন, বউকে বলেছি, সে-ই আমার জীবনের প্রথম এবং শেষ নারী।  আমার বউএর জুতার সাইজ ৪১। এখন যদি রাসেল ভই ৩৮ সাইজের মেয়েলী জুতা বাসায় পাঠিয়ে দেন, তাহলে আমার কী অবস্থা হবে বুঝতে পারছেন? বউ ঐ জুতা দিয়ে আমাকে পেটাবে।‘

এ কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন পলাশ।

৪২৫ পঠিত ... ১৭:৩২, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২

Top