ডিসেম্বরের ১৫ দিন চলে যাওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে জাশির নেতাকর্মীরা। আজ ১৭ ডিসেম্বর ক্যালেন্ডারের দিকে তাকিয়ে দলটির নীতি-নির্ধারণী পর্যায় থেকে জানানো হয়েছে, বিপদ আর মাত্র অর্ধেক বাকি। বাকি ১৫টা দিন কোনোমতে পার করতে পারলেই কেল্লাফতে! আগামী ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরে সব সহ্য করে যান।
দলীয় এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ডিসেম্বর মাসটা আমাদের জন্য বরাবরই একটু অ্যালার্জিক। চারদিকে তাকালেই লাল-সবুজ পতাকা, দেশাত্মবোধক গান আর '৭১-এর সেই সব পুরনো কাসুন্দি। এই যে মানুষজন কথায় কথায় আল-বদর, আল-শামস আর রাজাকারদের বীরত্বের (পড়ুন: নির্মমতার) কথা মনে করিয়ে দেয়, এতে আমাদের ইমোশনাল ড্যামেজ হয়। এছাড়া এখানে সেখানে আমাদের মহানায়কদের অপমানও সহ্য করতে হয়! কিন্তু কী আর করা! কিছু তো আর করার নেই! ডিসেম্বরকে তো আর আমরা ক্যালেন্ডার থেকে ফেলে দিতে পারবো না। সুতরাং দাঁতে দাঁতে চেপে, কোনোভাবে মাটি কামড়ে এই কয়টা দিন কাটায়ে দিতে হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা জানি ১৬ ডিসেম্বর আপনাদের কাছে মনে হয় ১৬ বছরের সমান। এই দিনটিতে টিভিতে যে পরিমাণ আর্কাইভ ফুটেজ দেখানো হয়, তাতে নিজেদের পূর্বপুরুষদের উজ্জ্বল সব কীর্তিকলাপ (যেমন, সারেন্ডার বা দালালি) দেখে নেতাকর্মীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। তবে আলহামদুলিল্লাহ, এবারের ১৬ তারিখটা আমরা কোনোমতে কম্বলের নিচে কাটিয়ে দিয়েছি।
বাকি ১৫ দিন নিরাপদে কাটাতে নেতাকর্মীদের জন্য বিশেষ কিছু গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এই কয়দিন লাল-সবুজ রঙ এড়িয়ে চলছে। ইতিহাসের বই-খাতা থেকে দূরে থাকতে। বিশেষ করে '৭১-এর ইতিহাস লেখা বই দেখলে 'ভূত' দেখার মতো আচরণ করতে বলে হয়েছে। প্রোফাইলে 'কামিং সুন ২০২৬' লিখে আপাতত অফলাইনে চলে যাওয়ার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। কেউ যদি 'বিজয় দিবস কেমন কাটল?' জিজ্ঞেস করে, তবে তাকে 'সেক্যুলার ষড়যন্ত্র' বলে এড়িয়ে যাওয়ারও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বিবৃতি শেষে এক নেতা বলেন, ভাইসব, আর মাত্র কটা দিন। ডিসেম্বর গেলেই জানুয়ারি। তখন আর কেউ পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে কথা বলবে না। নতুন বছরে আমরা আবার নতুন করে 'সব ভুলে যাও' প্রজেক্ট শুরু করতে পারবো। ততক্ষণ পর্যন্ত ধৈর্য ধরুন, দরকার পড়লে ১৫ দিন রোজা রাখুন যাতে মুখ খুলতে না হয়!


