সম্প্রতি ‘বাংলাদেশের মিরপুর চিড়িয়াখানার খাঁচা থেকে বেড়িয়ে গিয়েছে এক সিংহী’ এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে প্রাণীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যানিমেল বুকে। পেরেগ্রিন ফ্যালকনের গতির চেয়েও দ্রুতগতিতে এই খবরে সয়লাব হয়ে গেছে সব জায়গা। এরপরপরই গোটা বিশ্বের নেটিমেলদের মধ্যে দেখা তীব্র প্রতিক্রিয়া।
সিংহদের গার্লস গ্রুপ ‘দ্য বিগ লেডি কিটিস’ এ এক সিংহী তৎক্ষণাৎ পোস্ট করে বলে, ‘ওহ শীট! বাংলাদেশে ওরা এখনো খাঁচায় থাকে! আমরা তো জন্ম থেকেই সাফারীতে!’ সেই পোস্টে কমেন্ট করে দুবাইয়ের এক সিংহী জানায়, ‘এই সিংহী কি কোনো অপরাধ করেছে? তাকে কেন বন্দি করে রাখা হয়েছে?’
যুক্তরাষ্ট্রের সিংহী গোত্রের এক নেতৃস্থানীয় সিংহী অবশ্য ট্রল করে জানায়, ‘ওদের দেশে তো এমনটাই হবে। আর কিছু দিন যেতে দাও গার্লস, দেখবে এত এত মানুষ হবে ঐখানে যে ওরা মানুষ রাখার জন্য ও এমন খাঁচা বানাবে, হা হা হা এটাই বাস্তব!’ নেপালের এক সিংহী অবশ্য প্রতিবাদের সুরে বলেছে , ‘আমাদের মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশে তো জন্মাওনি, কষ্টের রকমফের তোমরা অনেকে জানোই না। আমাদের কষ্ট তোমাদের বোঝার সাধ্য নেই।’
সিংহ ছাড়াও বাঘ, জিরাফ, হায়েনা, হাতি, বেবুন, জলহস্তী, জেব্রা তাদের নিজ নিজ সোশ্যাল গ্রুপে ক্ষোভ প্রকাশ করে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফির এক কন্ট্রোভার্সিয়াল মডেল হরিণ তার পেইজে লিখেছে, বাংলাদেশের এই ঘটনাটা আমার কানে এসেছে। শুনেছি খাঁচা থেকে বের হয়ে নাকি সে হরিণের খাঁচার পাশেই বসেছিল। সেইম অন হার! আমি অবশ্য খুশি এটা জেনে ঐদেশে সিংহরা হরিণ তাড়া করার স্বাদ কেমন তা জানে না। জানলে আর খাঁচায় যেত না। শুনেছি তাকে খাঁচায় ফেরত নেয়া হয়েছে আবার। থ্যাংকস গড!’
দক্ষিণ আফ্রিকার এক কবি সিংহ নিজের পরিবারের ছবি পোস্ট করে ঘোষণা দিয়েছে, ‘বাংলাদেশের ওই সিংহকে আমি আমার প্রাইডে নিয়ে আসতে চাই। জানি না মেয়েটা কখনও কখনও সবুজ ঘাসে ঘুমিয়েছে কিনা, ধূলোয় ধূসোরিত হয়ে নিজেকে ধূলিসাৎ করেছে কিনা। জানি না, জানি না কতদিন সে দৌড়ায় না। পায়ের জয়েন্টগুলো ঠিকঠাক কাজ করে কিনা, সে জোরে লাফ মারে কিনা জানি না। আমার মন উড়ে যায়, বাংলাদেশের সুদূর একটা রুমে যেথায় চিপায় ঐ, পড়ে আছে সুন্দরী এক সিংহী মেয়ে!’
বিবিসি আর্থের এক উঠতি গন্ডার তারকা ঘটনা টের না পেয়ে একদিন পর নানান প্রাণীদের গ্রুপের পোস্টে একনাগাড়ে কমেন্ট করেই যাচ্ছে, ‘কন্টেস্ক্ট কী?’
ওর কমেন্টে কেউ রিপ্লাই দিচ্ছে না। রিপ্লাই দিলেও টের পাবে হয়তো এক সপ্তাহ পর। ততদিনে হয়তো অন্য কোন প্রাণির সাথে অন্য কন্টেস্ক্ট চলে আসবে। দুনিয়াতে মাথা ঘামানোর জিনিসের অভাব আছে নাকি!


