এমন কিছু মুভি আছে যেগুলো দেখলে আপনার মাথা চক্কর দেবেই দেবে। আপনি যদি দুর্বল প্রকৃতির হয়ে থাকেন তবে অসুস্থও হয়ে যেতে পারেন। দিনের পর দিন আপনি ভাবতে থাকবেন এ আমি কী দেখলাম? এমন কিছু ডিস্টার্বিং মুভি যদি আপনার ওয়াচ লিস্টে যোগ করে নিতে পারেন তবে আপনি অন্যকেও এইসব মুভি সাজেস্ট করে ডিস্টার্ব দিতে পারেন।
Oldboy (2003)
‘তোকে আমি ১৫ বছর যাবত আটক রেখেছিলাম কেন প্রশ্ন সেটা না। ১৫ বছর পর কেন তোকে আমি বের করে দিলাম সেটাই হচ্ছে প্রশ্ন।‘
মেয়ের জন্মদিনে কিডনাপ হয় Dae su নামের এক লোক। হঠাৎ করে সে আবিষ্কার করে বদ্ধ একটা রুমে সে বন্দি। সেই রুমে কিছুক্ষণ পর পর কারা যেন এসে তাকে অচেতন করে দেয়। ছোট্ট একটা ছিদ্র দিয়ে মাঝেমধ্যে খাবার এনে দেয়। কিন্তু কে বা কারা তাকে কোন অপরাধেই বা বন্দি করে রেখেছে কিছুই জানে না Dae su. এভাবে কেটে যায় ১৫ বছর। ১৫ বছর পর তাকে মুক্তি দেয়া হয়। কেন তাকে মুক্তি দেয়া হয়? এই প্রশ্ন থেকেই মূল মুভির গল্প শুরু হয়। Dae su চরিত্রে অভিনয় করেছেন কোরিয়ান কিংবদন্তি অভিনেতা চই মিন সিক। The vengeance trilogy'র দ্বিতীয় এই মুভিটিতে চই মিন সিক তার জীবনের শ্রেষ্ঠ অভিনয় করে ফেলেছেন। এই মুভিতে চই মিন একটি জীবন্ত অক্টোপাস খেয়ে ফেলেছিলেন। প্রতিশোধ যে কত ভয়াবহ হতে পারে তা এই মুভি না দেখলে অনুভব করা অসম্ভব। মুভিটি প্রথম দিকে স্লো মনে হলেও দর্শকদের জন্য শেষদিকে রয়েছে এমন এক টুইস্ট যা দেখে আপনি মানসিকভাবে ধাক্কা খাবেন এটা নিশ্চিত।মুভিটি পরিচালনা করেছেন পার্ক চ্যান উক। এর Imdb রেটিং ৮.৪।
Cannibal holocaust (1980)
এই মুভিটি শুধু ডিস্টার্বিংই নয়, পৃথিবীর জঘন্যতম মুভি বলা যেতে পারে এটিকে। ৪০টিরও বেশি দেশে মুভিটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই মুভিতে বাস্তবিক অর্থেই পশু হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। মুভিতে গল্প বলতে কিছু নেই। পশু হত্যা, ধর্ষণ আর খুন খারাবিতে এতোই পরিপূর্ণ যে, কোন মুভিখোরই এই মুভি দেখতে সাজেস্ট করতে চাইবে না। আদিবাসীদের নিয়ে ডকুমেন্টারি করতে একদল মানুষ জঙ্গলে যায়। সেখানে গিয়ে তারা আদিবাসীদের নির্যাতন করে, তাদের পশু হত্যা করে। পালটা প্রতিশোধ নেয় আদিবাসীরা এদের হত্যা করে। পরে আরেকটি টিম যায় সেখানে কি অবস্থা তা আঁচ করতে। আবারও নৃশংসতা আর বর্বরতা। ১৯৮০ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি দুর্বলচিত্তের কারো দেখা উচিত নয়। মুভিটির Imdb রেটিং ৫.৮।
Incendies (2010)
১+১ এ ২ হয়। কিন্তু ১ হতে কখনো কি শুনেছেন? বোধহয় সিনেমার ইতিহাসের সবচেয়ে ডিস্টার্বিং মুভির নাম Incendies. ১+১ এ কিভাবে ১ হতে পারে সেই উত্তরই খুঁজবেন দর্শক পুরো মুভি জুড়ে। শেষাংশে এমন এক ধাক্কা খাবেন মনে হবে যেন মুভিটি না দেখলেই মনে হয় ভাল ছিল। মুভির প্লট আবর্তিত হয় যুদ্ধ ও যুদ্ধের নির্মম বাস্তবতাকে উপস্থাপনের মাধ্যমে। লেবাননের গৃহযুদ্ধের সময় নাওয়াল মারওয়ান নামের এক মহিলা ১৫ বছর জেলখানায় বন্দি থাকে। তারপর কানাডায় এসে তার দুই ছেলেমেয়ে হয়। সিমন মারওয়ান ও জেন মারওয়ানকে নিয়ে তিনি এখানেই থিতু হোন। নাওয়াল মারা যাওয়ার আগে তার ছেলেমেয়েদের কাছে কয়েকটা চিঠি রেখে যান। সেই চিঠিতে তিনি বলেন, জেন ও সিমনদের আরেকটা ভাই আছে এবং তাদের বাবাও জীবিত। লেবাননে গিয়ে তাদের খুঁজে বের করতে হবে। শুরু হয় জেন ও সিমনের দীর্ঘ অনুসন্ধান। অবশেষে তারা তাদের ভাই ও বাবাকে খুঁজে পেতে সমর্থ হয়। কিন্তু এভাবে তাদের খুঁজে পেতে চায়নি তারা। প্রচণ্ড রকমের এক টুইস্ট দিয়ে শেষ হয় মুভিটি। ২০১০ সালে মুভিটি মুক্তি পাওয়া মুভিটি ২০১১ সালে অস্কারের সেরা বিদেশি ভাষার চলচিত্র হিসেবে মনোনয়ন পায়। কানাডিয়ান এই মুভিটির Imdb রেটিং ৮.৩।
Wrong turn (1-7)
আমেরিকান ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ইতিহাসে হরর বা স্ল্যাশার জনরার সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং ভয়ংকর মুভি হচ্ছে Wrong turn নামের এই মুভি সিরিজটি। ২০০৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোট ৭টি মুভি নিয়ে এই সিরিজটি সাজানো হয়েছে। Whitakers নামের এক নরখাদক জাতের জঙ্গলে বাস। তাদের জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে যেকেউ যেতে চাইলেই তাদের উপর শুরু হয় Whitakersদের বীভৎসতা। মানুষ খুবলে খাওয়া তাদের নেশা। প্রচুর ভায়োলেন্স দেখানো হয় মুভির ৭টি পার্টেই। নরখাদকদের হাত থেকে বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা আর নৃশংসতা মুভিটিকে ডিস্টার্বিং করে তুলেছে। Wrong turn 4 এ Whitakers দের উৎপত্তি ও Wrong turn 6 এ এই Whitaker পরিবারের ইতিহাস দেখানো হয়। দুর্বল হৃদয়ের মানুষের জন্য মুভিটি নট রেকোমেন্ডেড।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন