ঈদের দিন সালামি এড়িয়ে যাওয়ার ১০টি নিনজা টেকনিক

৩৮৭৩ পঠিত ... ১৮:২৪, জুন ০৩, ২০১৯

ঈদুল ফিতর অর্থাৎ রোজার ঈদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সালামি। যুগের পর যুগ ধরে বাচ্চারা ঈদের দিন সকালে নামাজ পড়ে এসে মুরুব্বিদের সালাম করে সালামি আদায় করে নিচ্ছে। আবার ক্যালেন্ডারের পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে একটা সময় এই বাচ্চারাই বড় হয়ে সালামি দেওয়া শুরু করে। অবশ্য বিষয়টা এতটা সহজ সরল না মোটেও। এক সময় যারা সালামি শিকারী থাকেন, তারাই বড় হয়ে সালামি অস্বীকার করা শুরু করতে থাকেন।

সালামিকে অনেকে বলেন অর্থনৈতিক আগ্রাসন। এই অর্থনৈতিক আগ্রাসন থেকে বাঁচতে আপনি যেসব পন্থা অবলম্বন করতে পারেন, তাই ভেবেছে eআরকি। eআরকি প্রণীত এই ১০টি নিনজা টেকনিক অনুসরণ করে আপনিও বেঁচে যেতে পারেন সালামি দেওয়ার হাত থেকে। 

 

১# ডেসটিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলতে পারেন

মনে আছে সেই ডেসটিনির কথা? প্রায় এক দশক আগে যারা বাংলাদেশের সকলকে ধনী করে তোলার চমৎকার এক মিশনে নেমেছিল। এই মিশনে অংশ নিয়ে বিভিন্ন বয়সের অগণিত মানুষকে হারাতে হয়েছিল অর্থকড়ি। যারা সালামি চাইতে আসবে, তাদের জানিয়ে দিন আপনি ডেসটিনি প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন। তবে কমবয়সী কেউ হলে এসব বিশ্বাস করবে না, বরং আপনাকেই প্রতারক ভাবতে পারে।

 

২# পিঁপড়া আপনার ধনসম্পদ খেয়ে ফেলেছে

যেহেতু আপনার কাছে কম বয়সীরা সালামি চাচ্ছে, তার মানে তারা আপনাকে বড়লোকই (ধনী অর্থে) ভেবে নিয়েছে। আর কথায় আছে ‘পিঁপড়ায় খাইব বড়লোকের ধন (সম্পদ অর্থে)!’ আপনি তাদের বলুন, পিঁপড়ারা ঐ কথাকে বেশি সিরিয়াসলি নিয়ে আপনার ধনসম্পদ খেয়ে ফেলেছে। ফলে আপনার পক্ষে আর সালামি দেওয়া সম্ভব না। অবশ্য এসব বলে বাচ্চাদের হাত থেকে বাঁচতে পারলেও, একটু বড়দের কাছে আপনি ভর্ৎসনা পেতে পারেন।  

 

৩# হাত মোছা টিস্যু দিতে পারেন

আপনি তাদের হাত মোছার টিস্যু দিতে পারেন। টিস্যু পেয়ে বিস্মিত সালামিপ্রত্যাশীদের বুঝিয়ে বলুন যে, টাকা হচ্ছে হাতের ময়লা, আর ময়লা মানেই খারাপ। তাই আপনি তাদের ময়লা না দিয়ে, একেবারে ময়লা পরিষ্কারে টিস্যুই দিচ্ছেন। সেক্ষেত্রে তারা আপত্তি তুলতে পারে, আপনি তাদের হাত ‘ময়লা’ করার সুযোগ না দিয়ে শুধুমাত্র টিস্যু দিচ্ছেন কেন?

 

৪# আর্টসেলের তৃতীয় অ্যালবাম রিলিজের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে ট্রিট দিবেন

বিএনপির ঈদের পরের আন্দোলনের মতো আর্টসেলের তৃতীয় অ্যালবামও যেন হয়ে আছে অমাবস্যার চাঁদ। এক যুগ ধরে আর্টসেল বলে আসছে সামনের বছরই তাদের থার্ড অ্যালবাম রিলিজ হবে। আপনি এই সুযোগটাই নিতে পারেন। সালামি চাইতে আসলে বলবেন যে, এসব ছোটখাটো এমাউন্টের সালামি নিয়ে কী হবে! তার চাইতে আর্টসেল পরের অ্যালবাম রিলিজ করলে সেই অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে আপনি তাদের গ্র্যান্ড ট্রিট দিবেন। এতে করে তারা গ্র্যান্ড ট্রিটের আশায় বিভ্রান্ত হবে।

 

৫# রণ পা বানিয়ে নিন

লম্বা কাঠের পা লাগিয়ে হাঁটার (এবং দৌড়ানোরও) প্র্যাকটিস করতে থাকুন। এরপরের কাজটা সহজ। সালামি চাইতে আসলেই লম্বা পায়ে বড় বড় কদমে পালিয়ে যান। পালাতে না পারলেও সমস্যা নেই। বাচ্চারা সালাম করতে আসলে আপনার পা খুঁজে পাবে না… আর রণ পায় সালাম করলেও আপনি সেই সালামকে অস্বীকার করতে পারবেন। তবে রণ পা পরে পালিয়ে যাবার সময় সাবধান, দুর্ঘটনায় ভূপাতিত হতে পারেন।  

 

৬# পায়ে সাপ পেঁচিয়ে রাখুন

বাচ্চারা তো বটেই কিশোর বয়সীরাও সাপ ভয় পায়। ফলে আপনি যদি পায়ে সাপ পেঁচিয়ে রাখতে পারেন তাহলে তেমন কোন চিন্তা নেই, সাপের ভয়েই কেউ আর কদমবুসি করে সালামি চাইতে পারবে না। অবশ্য এজন্য আপনাকেও সাপের ভয়, করতে হবে জয়। তবে খুবই বিশ্বাসযোগ্য প্লাস্টিকের সাপও পেঁচিয়ে রাখতে পারেন পায়ে।

 

৭# ডিগবাজি দিয়ে ঘোরাফেরা করুন

ছোটবেলায় আমরা সবাই কমবেশি ডিগবাজি দিয়ে অভ্যস্ত ছিলাম। সেই অভ্যস্ততা ফিরিয়ে এনে ডিগবাজি দিয়ে চলাচফেরা করার প্র্যাকটিস শুরু করুন। তাহলে ঈদের দিনটা আপনি সালামি শিকারীদের দেখলেই ডিগবাজি দিতে শুরু করতে পারবেন। এতে দুটো সুবিধা। এক, আপনাকে সালাম করার মতো অবস্থায় কেউ পাবে না। আর দুই হচ্ছে, ডিগবাজির মাধ্যমে পল্টি খেয়ে আপনি নিজেই যোগ দিতে পারেন সালামি শিকারীদের দলে!

 

৮# নিজেকে কূলহারা কলঙ্কিনী ঘোষণা করুন

সবার কাছে নিজেকে ‘কূলহারা কলঙ্কিনী’ বলে অভিহিত করুন। তাদের মনে করিয়ে দিন কূলহারা কলঙ্কিনীকে কারো ছোঁয়ার কথা না। ফলে কেউ আপনাকে স্পর্শ করবে না এবং সালামও করতে পারবে না পা ছুঁয়ে। আপনিও বেঁচে যাবেন সালামি থেকে।

 

৯# নিজেকে কমিউনিস্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করুন

আপনি যদি নিজেকে কমিউনিস্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন, তাহলে তাত্ত্বিক আলোচনার মাধ্যমে সালামি শিকারিদের বিভ্রান্ত করে দিতে পারেন। শ্রম ছাড়া টাকা দেওয়াটা যে অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট করে সেটি তাদের বোঝাবেন। এছাড়াও বাচ্চাদের হাতে টাকা গেলে সেটি দিয়ে তারা পুঁজিবাদী ভোগ-লালসায় মেতে উঠতে পারে, এসবও বোঝান। প্রচুর দার্শনিক ও অর্থনৈতিক পরিভাষায় করা আপনার এসব আলোচনা শুনে বাচ্চারা খুব দ্রুতই সালামি ছাড়াই স্থানত্যাগ করতে বাধ্য হবে। 

 

১০# হুট করে নেচে উঠুন 

পা ছুঁয়ে সালাম না করতে পেরে অতি বুদ্ধিমান কেউ কেউ আপনাকে সরাসরি সালাম দিয়ে সালামি চাইতে পারে। এমন কেউ সালামি চাইতে 'আসসালামু আলাইকুম' বলার সাথে সাথে বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় গান ‘আসসালামুআলাইকুম বেয়াইন সাব’ গাইতে গাইতে আইটেম গান স্টাইলে নাচানাচি শুরু করে দিতে পারেন। এতে করে সালামিপ্রার্থী হতভম্ব ও শঙ্কিত হয়ে সরে পড়বে।

৩৮৭৩ পঠিত ... ১৮:২৪, জুন ০৩, ২০১৯

Top