হরিবাবুর একটা চোখ ছিল পাথরের। রাতে ঘুমোতে যাবার আগে, হরিবাবু পাথরের চোখটা একটা জল ভর্তি পাত্রে ডুবিয়ে রাখতেন। এইভাবেই চলছিল। হঠাৎই এক বিপদ।
একদিন হরিবাবুর পিপাসা পাওয়ায় ভোরে উঠে ভুল করে ঐ পাত্রের জল খেয়ে ফেললেন। পাথরের চোখ গলায় আটকে তো দমবন্ধ হবার জোগাড়।
হরিবাবু চললেন পাড়ার ইএনটি ডাক্তার কণ্ঠনাদ নন্দীর কাছে। ভাল করে দেখে ডাঃ নন্দী বললেন, ভাই দেরী করে ফেলেছেন। চোখটা বুকে চলে গেছে। আপনি বরং বুকের ডাক্তার ডা. পীনবক্ষ ধরের কাছে চলে যান।
X-ray করা হল। দেখা গেল চোখটা চলে গেছে পেটে। তাই হরিবাবু গেলেন gastroenterolgist ডা. কর এর কাছে। এরপর Endoscopy হল। ডাঃ কর ব্যাজার মুখে বললেন, হারামজাদা চোখটা আরো নীচে চলে গেছে। আপনি proctologist ডা. গুহ্যপ্রিয় গুহ-র কাছে চলে যান।
ডা. গুহের চেম্বারে গিয়ে ওনার সরল হাসি মুখ দেখে হরিবাবু মনে জোর পান। ডা. গুহ বললেন, ধুতি খুলে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন।
ডা. গুহ টর্চ নিয়ে পশ্চাতে দাঁড়িয়ে পড়লেন। পাঁচ মিনিট, কুড়ি মিনিট, আধা ঘণ্টা ধরে হামা দেওয়া হরিবাবুর অতঃপর ধৈর্যচ্যুতি ঘটে। হরি শুধোন, কী ব্যাপার বলুন তো? এতক্ষণ ধরে কী দেখছেন ডাক্তারবাবু?
ডাক্তার গুহ বলে ওঠেন, বিশ্বাস করুন ভাই, জীবনে অন্তত ৫-৬ হাজার rectum দেখেছি। কিন্তু rectum আমার দিকে তাকিয়ে আছে এই প্রথম দেখলাম।
[তারাপদ রায়: বাংলার প্রসিদ্ধ কবি, ছোটগল্পকার ও প্রাবন্ধিক। বাংলা সাহিত্যে হালকা হাস্যরসের সাথে পরিমিত তিক্তরস মিশ্রণের পারঙ্গম স্রষ্টা তিনি।]
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন