ঢাকার সায়েন্স ল্যাব মোড়ে প্রায় দুইদিন পরপর যে ‘ধুমধাম ফাইট ফেস্ট’ বসে, তা এখন আর শুধু দুই কলেজের ছাত্রদের মাঝে নেই—এটা যেন এক প্রকার লোকজ ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। ঢাকা কলেজ বনাম সিটি কলেজের এই চিরন্তন মারামারি শুধু ব্যানারে লেখা ছাত্ররাজনীতির অংশ না, বরং এটা এখন ঢাকার রাস্তায় বেড়ে ওঠা প্রতিটা তরুণের স্মৃতির এক আবশ্যিক টুকরো। সিগন্যালের লাল বাতি, রিকশার হর্ন, আর হঠাৎ করে উদয় হওয়া ‘ডাণ্ডাবাজি’—সবকিছু মিলিয়ে এই এলাকা যেন প্রতিদিন একটা অনানুষ্ঠানিক সিনেমার সেটে পরিণত হয়। আর ঠিক এই রঙচঙে, ধুলোবালি, উত্তেজনায় ভরা বাস্তবতায় অনুপ্রাণিত হয়েই এই ঘটনাগুলো নিয়ে সিনেমা বানানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন Gangs of Wasseypur খ্যাত বলিউড পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ।
কাশ্যপ নাকি সায়েন্স ল্যাবের এক চায়ের দোকানে বসে, এক কাপ দারুণ কড়া লাল চা খেতে খেতেই সিদ্ধান্ত নেন এই সিনেমার প্লট নিয়ে কাজ করবেন। সায়েন্স ল্যাবের দুই কলেজের গ্যাঞ্জামের এই দৃশ্য নাকি কাশ্যপকে মনে করিয়ে দিয়েছে তার নিজের নির্মিত গ্যাং ওয়ারের ক্লাসিক মুহূর্তগুলো। সেখানেই মাথায় আসে সিনেমার নাম—Gangs of Science Lab।
অনেকে বলছেন, এটা কোনো সাধারণ সিনেমা হবে না। Gangs of Science Lab হবে ঢাকার এক প্রজন্মের 'আনডকুমেন্টেড হিস্ট্রি'। এই সিনেমা শুধু ঢাকায় নয়, আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে হইচই ফেলে দিতে পারে, কারণ এর পেছনে আছে বাস্তবতা, কাঁচা আবেগ আর কিশোর বয়সের সেই প্যাশনেট ভুলগুলো—যা পৃথিবীর যেকোনো শহরের তরুণ বুঝতে পারবে। অনুরাগ কাশ্যপও বলছেন, Gangs of Science Lab হবে এমন এক সামাজিক বিশ্লেষণ, যেখানে চায়ের কাপ, ক্লাস ফাঁকি, ফেসবুক পোস্ট, আর TikTok ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ডে শুরু হয় গ্যাং ওয়ার। তিনি এটাকে দেখছেন শুধু মারামারি নয়, বরং শহরের হাফ-রিয়েল, হাফ-সারকাস্টিক এক বাস্তবতার ট্রিবিউট হিসেবে।