দুবাইয়ের ঝলমলে শহর, যেখানে ব্যস্ত এলাকা থেকে শুরু করে মরুভূমির নিস্তব্ধ প্রান্তর, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বিত্তবানদের সেকেন্ড হোম হিসেবে জনপ্রিয়। দেশের সম্পদ বিদেশে সরিয়ে সেখানে সম্পদ পাহাড় গড়ার তালিকায় হাজারও নাম থাকলেও, শুধু দুবাইতেই ৫০০০ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে বাংলাদেশের ৪৬১ জনের। এসব ধনী ব্যক্তি, আনভীর সোবহানের নেতৃত্বে, নিজেদের রেমিট্যান্সযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দাবি করছেন।
দুবাইয়ের বুর্জ খলিফার ৮০ তলার একটি লাক্সারি কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি তুলে ধরেন তারা। অনুষ্ঠানে আনভীর সোবহান বলেন, বাংলাদেশ থেকে যারা ডলার পাঠায়, তাদের রেমিট্যান্সযোদ্ধা বলা হয়। আমরা যারা দেশের টাকা বিদেশে নিয়ে আসি, আমাদের কেন এই সম্মান দেওয়া হবে না?
তাদের দাবি, দেশের বাইরে থেকে ডলার পাঠানো যেমন অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি দেশের টাকা বিদেশে নেওয়া ও সেখানে বিনিয়োগ করা কিংবা না করেও বসিয়ে রাখা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সুনামের জন্য সহায়ক। তারা আরও বলেন, সরকার আমাদের কাজের স্বীকৃতি দিক এবং আমাদের জন্য বিশেষ সুবিধাসমূহ চালু করুক। বিশেষ করে, দেশ থেকে টাকা প্রেরণ করলে ১০% বোনাসের ব্যবস্থা করা হোক। এতে আমরা আরও উৎসাহিত হব।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে এই দাবি পৌঁছেছে। মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, রেমিট্যান্সযোদ্ধা হিসেবে কারা স্বীকৃতি পাবেন এবং কারা রেমিট্যান্স ডাকাত, তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করা প্রয়োজন। যারা বৈদেশিক মুদ্রা দেশে নিয়ে আসেন, তারা রেমিট্যান্সযোদ্ধা। আর যারা দেশের টাকা বিদেশে সরিয়ে নেন, তাদের রেমিট্যান্স ডাকাত বলা যেতে পারে। আনভীর সোবহানসহ বাকিদের যদি রেমিট্যান্স ডাকাতের স্বীকৃতি দাবি থাকে, সেটা আমরা দ্রুত বিবেচনা করতে পারি।
তবে মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করেছে, প্রকৃত রেমিট্যান্সযোদ্ধারা অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। তাদের সুরক্ষা ও স্বীকৃতি দিতে সরকার সবসময় সচেষ্ট। অন্যদিকে, রেমিট্যান্স ডাকাতদের কার্যকলাপ দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।