রেহানা মরিয়ম নূর : পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবিগুলোর মতো নয়!

৮১৬ পঠিত ... ১৭:১৯, জুন ১৫, ২০২২

Rehana-mariyam-noor

 

রেহানা মরিয়ম নূর। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত সিনেমা। 

২০২১ সালে এ চলচ্চিত্রটি ৭৪তম কান চলচ্চিত্র উৎসব আসরের আঁ সেরতাঁ র‍্যগার বিভাগে নির্বাচিত হয়। এটি এ বিভাগে স্থান পাওয়া প্রথম বাংলাদেশী চলচ্চিত্র।

এশিয়া প্যাসিফিক স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ডসের (অ্যাপসা) ১৪ তম আসরে চলচ্চিত্রটি যৌথভাবে গ্র্যান্ড জুরি পুরস্কার অর্জন করে এবং একই আসরে চলচ্চিত্রটির অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জয় করেন।

এই চলচ্চিত্র নিয়ে ৪৩তম বিসিএসেও প্রশ্ন এসেছে। ইন্ট্রো দেখে বোঝা যাচ্ছে রেহানা মরিয়ম নূর কতটা আলোচিত সিনেমা।

ইন্ট্রো আরও বাড়ানো যায়। আপাতত ইন্ট্রো শেষ করে  প্রশ্নে চলে যাই। এই সিনেমা কতজন বাংলাদেশী দর্শক  দেখেছেন? প্রশ্নটা কেন জিজ্ঞেস করছি তা নিশ্চয়ই পাঠকের বোঝার কথা।

অস্কার কিংবা কানে পুরস্কারপ্রাপ্ত সিনেমা নিয়ে আমাদের 'অ্যালার্জি' আছে। এসব সিনেমা নিয়ে আমাদের একটা দর্শন আছে। এসব বুদ্ধিজীবীদের সিনেমা। সাধারণ দর্শকের মাথার উপ্রে দিয়ে যাবে! সমাজ বদলানো কঠিন কোনো ‘মেসেজ' থাকবে আর থাকবে ঝিমানো কাহিনি। দেখতে বসলে ঘুম চলে আসে নতুবা মাথার উপ্রে দিয়ে যায়!  

সে কারণেই এই প্রশ্ন, আমরা কতজন এই সিনেমাটা দেখেছি? আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এবং পরিচিত বন্ধু-বান্ধবের পরিসংখ্যান বলে অনেকেই এই সিনেমা দেখেনি। আমি নিজেও এতদিন দেখিনি।

অবশেষে ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম 'চরকি'-তে রেহানা মরিয়ম নূর দেখলাম। খুব আগ্রহ নিয়ে দেখতে বসেছি সেরকম কিছু না। ভাবলাম অলস সময় আছে, দেখি তাহলে, টেনেটুনে দেখে দ্রুত শেষ করা যাবে!

কিন্তু আমাকে টেনেটুনে দেখতে হয়নি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমান আগ্রহ নিয়ে শেষ করেছি।

এই কারণেই বলছি, এই সিনেমা অন্যান্য পুরস্কারপ্রাপ্ত সিনেমার মতো নয়। মানের দিক থেকে অবশ্যই পুরস্কারপ্রাপ্ত সিনেমার মতো, কিন্তু অন্য কাহিনীও আছে।

এই সিনেমায় বোদ্ধা দর্শকের পাশাপাশি সাধারণ দর্শককে আকৃষ্ট করার উপাদান আছে। যেমনটা ছিলো অস্কারপ্রাপ্ত 'প্যারাসাইট' সিনেমায়।

রেহানা মরিয়ম নূরে 'মেসেজ' আছে। সেই মেসেজ নিয়ে বিতর্কও আছে। তা থাকতে পারে। দর্শকের নিজস্ব ভাবনার সুযোগ দিতে হবে। পরিচালক যা ভাবতে বলছে, দর্শক তা নাও ভাবতে পারেন। ভিন্নমতকে সহজভাবে গ্রহণ করতে হবে। তা অবশ্য রেহানা মরিয়ম নূর টিম করেছে।

তবে, এই সিনেমায় শুধু 'মেসেজ' না, আরও অনেক কিছু আছে।

আজমেরী হক বাঁধনের অভিনয় দারুণ। মনে হচ্ছিল তিনি অভিনয় করছেন না, বাস্তবেই তাঁর এই জীবন, তিনি এই জীবন যাপন করছেন, আর তাঁকে না জানিয়ে গোপন ক্যামেরায় শ্যুট করা হয়েছে। মনে হচ্ছিল, পর্দায় নয়, জীবন্ত আজমেরী হক বাঁধন আমার সামনে চলাফেরা করছে! তাঁর অস্বস্তি আমাকে অস্বস্তিতে ফেলছে!

সিনেমায় বাঁধনের একটা ছোট মেয়ে আছে। এই পিচ্চিটার অভিনয়… একেবারে আগুন প্রতিভা! কী সুন্দর অভিনয়!

পরিচালক আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদকে ধন্যবাদ দিতে হয় এই কারণে যে, তিনি প্রতিটা চরিত্রকে সমান গুরুত্ব দিয়েছেন। কাউকে খাপছাড়া মনে হয়নি।

এই কাহিনী আপনাকে শ্বাসরুদ্ধকর এক যাত্রায় নিয়ে যাবে, যে যাত্রা শেষ না করে ফেরার কোনো পথ নেই!

৮১৬ পঠিত ... ১৭:১৯, জুন ১৫, ২০২২

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top