'তাকে খেলতে দেখলে বিশ্বাস করতাম, অমরত্ব আছে'

৩৭৮ পঠিত ... ১৬:১৩, নভেম্বর ২১, ২০১৯

[শুধু উরুগুয়েই না, সমগ্র লাতিন আমেরিকার জনপ্রিয়তম ও প্রভাবশালী লেখক এদুয়ার্দো গালেয়ানো। কবি, উপন্যাসিক, সাংবাদিক, ইতিহাসবেত্তা এই লেখক দুনিয়াজুড়ে জনমানুষের আকাঙ্ক্ষা আর স্বপ্নকে তার কলমে তুলে ধরেছেন অসামান্য স্বার্থকতার সাথে। গালেয়ানোর আরেকটা পরিচয়, ফুটবল বিষয়ে অগ্রণী একজন লেখক হিসাবে। তাকে বলা হয় ‘বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য লেখক।’ ‘সকার ইন দ্য সান এন্ড শ্যাডো’ বইটা লিখেছেন বিশ্ব ফুটবলের বহুবর্নিল ইতিহাস নিয়ে। ১৯ নভেম্বর ১৯৬৯ সালে পেলে তার এক হাজারতম গোলটি করেন। বইটাতে গালেয়ানো তিনটা এন্ট্রি লিখেছেন এই কিংবদন্তি ফুটবলারকে নিয়ে। এখানে প্রাসঙ্গিক এন্ট্রিটার অনুবাদ দেয়া হলো।]

তাকে নিয়ে রচিত হয়েছে হাজারো গান। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি বিশ্বসেরা আর ফুটবলের রাজার খ্যাতি পান। বয়স ২০ হওয়ার আগেই ব্রাজিল সরকার তাকে ‘জাতীয় রত্ন’ হিসেবে ঘোষণা দেয়, যাকে কোনোভাবেই রপ্তানি করা যাবে না। ব্রাজিল দলের হয়ে তিনটা বিশ্বকাপ ও ক্লাব সান্তোসের হয় দুটো শিরোপা জিতে নেনে পেলে। এক হাজারতম গোলের পরেও তার কোনো থামাথামি ছিলো না। একের পর এক ৮০টিরও বেশি দেশে ১৩শ’র বেশি ম্যাচ খেলেছেন। গোল করেছেন প্রায় ১৩শ। একবার পেলে যুদ্ধ পর্যন্ত থামিয়ে দিয়েছিলেন: নাইজেরিয়া ও বিয়াফ্রা তার খেলা দেখার জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে।

তার খেলা দেখা যুদ্ধবিরতি না শুধু, আরও বেশি কিছুর যোগ্য। অনায়াসে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ ভেদ করে পেলে জোরে ছুটলে মনে হতো মাখনের ভেতর ছুরির চালনা হচ্ছে। আর হঠাৎ থেমে পড়লে তার পায়ে সৃষ্ট জটিল নকশাময় গোলকধাঁধায় দিশা হারিয়ে ফেলতো প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়েরা। লাফিয়ে উঠলে মনে হতো, তিনি বাতাসের সিঁড়ি বেয়ে উঠছেন। পেলে ফ্রি কিক নিলে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়েরাই তার দৃষ্টিনন্দন গোল দেখতে গোলপোস্টের দিকে ফিরে তাকাতো।      

ব্রাজিলের প্রত্যন্ত এক গ্রামের গরিব এক ঘরে জন্মেছিলেন তিনি। পৌছেছিলেন কৃষ্ণাঙ্গদের জন্যে নিষিদ্ধ ক্ষমতা আর খ্যাতি চুড়ায়। মাঠের বাইরে তিনি একটা মুহূর্তও ব্যয় করতেন না, হিসেবি পেলের পকেট থেকে একটা কয়েন পর্যন্ত পড়তো না। কিন্তু আমাদের মধ্যে যারা তাকে খেলতে দেখার মতো সৌভাগ্যবান, তারা পেত অসামান্য সুন্দর উপহার: অমরত্বের আকাঙ্ক্ষা জাগানিয়া এমন সব মুহূর্ত যা দেখে আমরা বিশ্বাস করতাম, অমরত্ম আছে।

৩৭৮ পঠিত ... ১৬:১৩, নভেম্বর ২১, ২০১৯

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top