করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর একটি কাল্পনিক সাক্ষাৎকার

১৯২৩ পঠিত ... ২২:১১, এপ্রিল ১০, ২০২০

মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এর আগে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কোথায় কী হচ্ছে তিনি কিছুই জানতে পারেন না। আবার একাত্তর টিভির একটি অনুষ্ঠানে আমরা দেখেছি, করোনা পরিস্থিতি সংক্রান্ত যেকোনো প্রশ্ন করলেই হুটহাট মন্ত্রীর নেটের লাইন চলে যায়। যেহেতু মাননীয় মন্ত্রীর নেটের লাইন বেশ খারাপ, আবার আমাদের নেটও খুব একটা সুবিধার না, সাক্ষাৎকার নেয়ার জন্য তাই আমরা ভিডিও কলিংইয়ে না গিয়ে স্বপ্নের সাহায্য নিয়েছি। সাঙবাদিক রায়হান আমিন এর কল্পনাতে নেয়া এই সাক্ষাৎকারটি কেউ সিরিয়াসলি নেবেন না প্লিজ!

প্রশ্ন: এই মুহূর্তে আপনি তো অনেক ব্যস্ত সময় পার করছেন। ব্যস্ততার মধ্যে করোনা সচেতনায় নিজের সুরক্ষার জন্য আপনি কী করছেন ?
মন্ত্রী: দেশে করোনা আসার পর থেকেই আমি এক জোড়া গেলাভস আর মাস্ক কিনি। প্রতিদিন এটা ব্যবহার করি, রাতে বাসায় গিয়ে ধুয়ে ফেলি। এছাড়াও থানকুনি পাতা আর লেবু চা খাচ্ছি।

প্রশ্ন: আমরা দেখলাম সংবাদ সম্মেলনে আপনার পিছনে অনেক লোক দাড়িয়ে থাকে, এ নিয়ে আপনির প্রশ্নেরও সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে আপনি কি কিছু বলবেন?
মন্ত্রী: ওরা আমার সামনে দাঁড়ালে তো ক্যামেরায় আমাকে দেখা যাবে না। এজন্যই ওরা পেছনে থাকে। এ নিয়ে সমালোচনার কী আছে!

প্রশ্ন: করোনা মোকাবেলায় যেখানে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে সেখানে বাংলাদেশ কতটুকু প্রস্তত? প্রস্ততিগুলো কি কি ?
মন্ত্রী: আমরা শতভাগ প্রস্তত আছি। নদীমাতৃক দেশ হিসেবে আমাদের দেশে প্রচুর পানি আছে, ঢাকার ওয়াসার পানিতে আমরা ব্লিচিং যোগ করে দেবো। স্যানিটাইজারও দেয়া যেতে পারে। এসব পানি দিয়ে হাত ধুলে করোনা ভাইরাস আক্রমন করবে না। এছাড়াও ভয়াবহতা দেখা দিলে এডিস মশা তো আছেই। আগে থেকেই ডেঙ্গু হয়ে গেলে করোনা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।

প্রশ্ন: আপনি বললেন ইউরোপ-আমেরিকা যে ভুল করছে, আমরা তা করবো না। ব্যাপারটা একটু ব্যাখ্যা করবেন?
মন্ত্রী: ইউরোপ-আমেরিকা দ্রুত করোনা করোনা টেস্ট করাতে শুরু করে। এতেই তাদের আক্রান্ত সংখ্যাও দ্রুত বেড়ে যায়। আমরা তাদের মতো না করে দ্রুত ধীরে করবো। এতে আক্রান্তের সংখ্যা ওদের মতো হুট করে বেড়ে যাবে না ।

প্রশ্ন: এত ধীর গতিতে টেস্ট করালে যে মৃতের সংখ্যা অধিক হবে সেক্ষেত্রে আপনার করনীয় কি!
মন্ত্রী: টেস্ট তো ধীর গতিতেই হয়। টেস্ট ক্রিকেট খেলা দেখেন নাই? সেটা তো ধীরেই খেলা নিয়ম।

প্রশ্ন: করোনা শনাক্তে আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ কিট নেই কেন? আপনি কি ব্যাপারটা একটু ব্যাখ্যা করে বলবেন?
উত্তর: দেশের কৃষকরা যে পরিমাণ কীটনাশক ব্যবহার করছে, কীট আর থাকবে কেমনে? সব শেষ। তবে আমাদের দেশের কীটনাশক আন্তর্জাতিক মানের।

প্রশ্ন: ডাক্তারদের জন্য নাকি পর্যাপ্ত পিপিই নেই। তো এই অবস্থায় ডাক্তাররা কিভাবে চিকিৎসা করবে?
উত্তর: বাংলাদেশে এই সময়ে তীব্র গরম থাকে, এই গরমে পিপিপি পরে কাজ করলে ডাক্তারদের ঘাম হবে। এই ঘাম শরীরে শুকালে তাদের ঠান্ডা লাগবে, সর্দি হবে, জ্বর হবে, সেখান থেকে করোনা হতে পারে। পিপিপি না থাকলেই তাই সুস্থ থাকার সম্ভাবনা বেশি।

প্রশ্ন: আমাদের দেশে পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটর নেই। রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকলে কি দেশে ভেন্টিলেটরের সংকট সৃষ্টি হবে।
মন্ত্রী: পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটর নেই কথাটা সঠিক না। আমার বাসায় টোটাল ১৬টা ভেল্টিলেটর আছে । এছাড়া বাংলাদেশের প্রতিটি বাসা বাড়িতে ৪/৫ করে ভেন্টিলেটর আছে।

প্রশ্ন: অক্সিজেনও প্রচুর লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনাদের কোন প্রস্ততি আছে কি?
মন্ত্রী: দেশে বর্তমানে লকডাউন চলতেছে। অধিকাংশ গাড়িই বন্ধ। প্রয়োজন হলে গাড়ির সিলিন্ডার গুলো খুলো অক্সিজেন ভরে নেওয়া হবে। বায়ুদূষণ কম হওয়াতে বাতাসে অক্সিজেনও বিশুদ্ধ হচ্ছে।

প্রশ্ন: দেশে মাত্র ১১২টা আইসিইইউ বেড আছে, এই অবস্থায় এই সংখ্যাটা কি নগন্য নয়?
মন্ত্রী: আমরা অলস জাতি, খাইতে দিলে শুইলে চাই। রোগীরা যেন অলস না হয়ে যায় তাই বেড কম দিয়েছি। রোগীকে দাঁড়ানো অবস্থায় আইসিইউ সেবা দিয়েই সুস্থ করে পাঠিয়ে দেয়া হবে।

১৯২৩ পঠিত ... ২২:১১, এপ্রিল ১০, ২০২০

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top