অনলাইন ক্লাসে প্রথম দিন: এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য বাংলা রচনা সাজেশন

৯২৬ পঠিত ... ১৯:২৫, জুন ২৭, ২০২০

সামনেই এইচএসসি পরীক্ষা। কত সামনে আমরা তা জানি না, কেউই তা জানে না, কিন্তু সামনে যে এইটা শিওর। এবার এইচএসসি পরীক্ষার আগে পরীক্ষার্থীরা পাচ্ছে অনন্তকাল সময়। তাই এবার প্রশ্নও কিন্তু হতে পারে অন্যরকম, একটু বাস্তবভিত্তিক বা সময়োপযোগী। তাই প্রস্ততিও নিতে হবে সেভাবেই। শিক্ষার্থীদের জন্য তাই আমরা দিচ্ছি কিছু স্পেশাল সাজেশন, আজকে রইলো বাংলা সেকেন্ড পেপার, প্রবন্ধ রচনা।   

 

অনলাইন ক্লাসের প্রথম দিন

 

ভূমিকা
জীবনের প্রথম সবকিছুই স্পেশাল। আমার অনলাইন ক্লাসের প্রথমও দিনও স্পেশাল ছিলো। তবে ক্লাস করবো সেজন্য না, আমার ল্যাপটপ জীবনে প্রথমবারের মতো আম্মার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, এবার ল্যাপটপ নিয়ে বসে থাকলেও আম্মা বকবে না। এক্সাইটমেন্টের অন্যতম কারণ এটা। আমার ল্যাপটপ জীবনে প্রথমবারের মতো একটু আদর আপ্যায়ন পেলো। সকালে আম্মা নিজ উদ্যোগে ল্যাপটপ চার্জে দিলো, একটু মুছেও দিলো।

দিনটি যেভাবে আসলো
আমার অনলাইন ক্লাসের যেটা প্রথম দিন, সেটাই অন্যান্যদের জন্য ষষ্ঠ দিন। মূলত ক্লাসের কথা না জানার অজুহাতে ৩ দিন ও ইন্টারনেট কানেকশন ঠিক না থাকার অজুহাতে আরো ২ দিন ক্লাস মিস দিয়েছি। ষষ্ঠ দিনে পাশের বাসার আন্টি মারপত ক্লাসের কথা আম্মার অবগতি হলে এর বেশি ফাঁকি দেয়া সম্ভব হয়নি। অবশ্য ক্লাসের ব্যাপারে আম্মার অবগতির পরই অনলাইন ক্লাসের জন্য আলাদা সফটওয়্যার ক্রয়ের খাত বাবদ ৭৫০ টাকা বিল তুলে নিয়েছি।

পথের বর্ণনা
সকাল থেকেই ল্যাপটপ সামনে নিয়ে বসে পড়ি। ক্লাসে সমস্যা হবে বিধায় আমার রুমে আম্মা-আব্বার প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি। তবে, আম্মার শর্ত অনুযায়ী দরজা বন্ধ করার অনুমতি মেলেনি। ল্যাপটপ খুলে অনলাইন ক্লাসে যাওয়ার পথেই পড়লো ফেসবুক। সেখানে ঢুকে মনোযোগের সাথে নিউজফিডের সৌন্দর্য উপভোগ করেছি। ফেসবুকের দু-ধারে বিশেষ কোন ইস্যু না থাকায়, গ্রুপগুলো থেকে ঢুঁ মেরে মেসেঞ্জারে গিয়েছি। ওখানে গিয়ে দেখি তুখোড় গ্রুপে 'ক্লাস শুরু হয়ে গেছে, সবাই চলে আসো' বলে একটা লিংক দিয়ে রেখেছে। ওদিকে না তাকিয়ে আমি স্কুলের পাশের ইন্সট্রাগ্রামের সৌন্দর্য উপভোগের নিমিত্তে প্রবেশ করি। থরে থরে সাজানো নানাবিধ ফুলের মাঝখান থেকে হুট করে ক্রাশের নতুন পিকচারটার দিকে চোখ পড়ে যায়। একটা লাভ রিএ্যাক্ট দিয়ে ইন্সট্রাগ্রাম থেকে বের হয়ে ক্লাসের ঢুকে গিয়েছি।

ভালো লাগা
ক্লাসে ঢুকেই দেখি ক্লাস ইতোমধ্যে ১৮ মিনিট অতিক্রম করে ফেলেছে। স্যার লেকচারদানে বেশ ব্যস্ত। আমি ২ মিনিটের জন্য ফ্রিজ হয়ে ছিলাম। এরপর টানা ৩ মিনিট 'স্যার আমার কথা শোনা যাচ্ছে' বলে কাটিয়েছি। একবারতো ভুলে আমার ক্রাইম পার্টনারকে উদ্দেশ্য করে 'মামা সিক্রেট কনভারসেশনে আয়' বলে ফেলেছি। নেটের সমস্যা বলে মোট ৫ বার লাইন কেটে দিয়েছি। এত কিছুর পরও স্যার চক, ডাস্টার, মার্কার ছুড়ে মারতে না পারায় ব্যাপক মজা পেয়েছি।

খারাপ লাগা
অনলাইন ক্লাসের প্রথমদিন হিসেবে যে উষ্ণ অভ্যর্থনা পাওয়ার আশা করেছিলাম তা পাইনি। ক্লাসে ঢোকা মাত্রই স্যারের 'কিরে ফাঁকিবাজ, ৫ দিন পর আপনার নেট ঠিক হলো?' বাক্যে অনেক মনে কষ্ট পেয়েছি। অবশ্য তৎক্ষণাৎ পাশের ট্যাবে বন্ধুর পাঠানো মিম দেখে দ্রুত মুভ অন করে নিয়েছি। তুখোড় গ্রুপের ইন্টারনেট স্পিড দেখে মনটা খারাপ হয়েছে। একবারের জন্যও লাইন কেটে যায়নি। সৃষ্টিকর্তা যাকে দেয় একদম হাতখুলে দেয়। ওদেরকে মেধাও দিয়েছে, ভালো ইন্টারনেটও দিয়েছে।

মজার স্মৃতি
পুরো ক্লাসটাই আসলে মজার ছিলো। স্যারের সাথে আম্মার দেখা হওয়ার মূহুর্তটা সবচেয়ে বেশি মজার মূহুর্ত। ক্লাস শেষ হওয়ার আগে আগে আম্মা ক্যামেরার সামনে এসে স্যারকে বলছে, স্যার ওকে বুঝান, ও বাঙ্গি, কাঠাল, করলা কিছুই খায় না।

উপসংহার
পরিশেষে অনলাইন ক্লাস শেষ হলো। কিন্তু ক্লাসে কী হয়েছে, কী পড়িয়েছে, কী পড়া দিয়েছে আমি কিছুই জানতে পারিনি। এতে খুব একটা সমস্যাও হয়নি। তুখোড় গ্রুপের গ্রুপ কনভারসেশন থেকে একটা ধারণা পেয়েছি।

৯২৬ পঠিত ... ১৯:২৫, জুন ২৭, ২০২০

Top