লেখা: রাতুল খান
বৌ বাপের বাড়ি গেছে। আমি আরাম করে শুয়ে শুয়ে ফেসবুকিং করতেছিলাম আর কম্পিউটারে অঞ্জন দত্তের গান শুনতেছিলাম, 'একদিন বিকেলে বৃষ্টিতে.. থাকবে না সাথে কোনো ছাতা...।‘
হঠাৎ বিনা নোটিশে মধ্যপ্রদেশে নিম্নচাপ শুরু হয়ে গেল। তাড়াহুড়ো বিছানা থেকে নেমে করে বাথরুমের সামনে রাখা চটি জুতায় পা গলালাম, এমন সময় বিছানায় রাখা মোবাইল ফোনটা বেজে উঠলো।
কল আগে না মল আগে, এই উচ্চমার্গীয় চিন্তা স্থগিত রেখে এক পা খালি, অন্য পায়ে চটি পরে ছেঁচড়াতে ছেঁচড়াতে গিয়ে মোবাইলটা তুলে নিলাম। বৌয়ের ফোন।
'কী কর প্লাটিনাম?' মধুর কণ্ঠে বলল বৌ। (আসলে প্লাটিনাম না, অন্য ধাতুর নাম বলছিল, লজ্জায় বলতে পারতেছি না)
'বাথরুমে যাবো, চটি পরতেছিলাম, এমন সময় ফোন দিলা ।' ডানপায়ে চটিটা গলাতে গলাতে উত্তর দিলাম।
'কী? কী পড়তেছিলা?'
'চটি পরলাম, এখন বাথরুমে যাচ্ছি।' চট করে চটি পরা পায়ের দিকে তাকিয়ে উত্তর দিলাম।
'ছিহ! এখনও তুমি চটি পরো?' মেঘস্বরে বলে বৌ। 'বিয়ের আগে নাহয় একটা কথা ছিলো!'
'তুমি এত রেগে যাচ্ছ কেন? চটিতে সমস্যা কী? খালি পায়ে...'
'কী? খালি গায়ে? খালি গায়ে চটি পড়ে এখন বাথরুমে যাচ্ছো?'
'হ্যাঁ। বাথরুমে যাওয়ার আগে চটি পরবো না? আশ্চর্য! নাকি বাথরুমে ঢুকে চটি পরবো?'
'ছিহ! তোমাকে আমি কত ভাল ভাবতাম! আমি বাসায় নেই... আর তুমি এই সুযোগে...' ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলল বৌ। হতভম্ব আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে কট করে ফোনটা কেটে দিল।
চটি পরে বাথরুমে যাওয়ার কথা মধ্যে ভাল আর খারাপ হওয়ার কী আছে বুঝতে পারি না আমি।
অঞ্জন দত্তও তো চটি পরতো। ওই তো কম্পিউটারে অঞ্জন দত্ত গাচ্ছে ... 'একদিন বিকেলে বৃষ্টিতে ... ভিজে যাবে চটি জামা মাথা!'
আচ্ছা, এই গানের কি আসলে অন্য কোনও মিনিং আছে?
চটি বলতে অন্য কোনো চটি বুঝিয়েছে অঞ্জন?
আর মাথা বলতে অন্য কোনো মাথা?
আর বৃষ্টি বলতে অন্য কোনো বৃষ্টি?
যে বৃষ্টিতে ওই মাথা ভিজে যায়?
কিছুই মাথায় ঢোকে না আমার।
চটি পরে আমি বাথরুমে গিয়ে ঢুকি!
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন