এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান, সঙ্গীতশিল্পী এবং আরও নানা গুণে গুণান্বিত ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্ব ডঃ মাহফুজুর রহমান এবারের বইমেলায় দেখিয়েছেন তার আরও একটি প্রতিভার ঝলক! এই বইমেলাতেই বের হয়েছে তার স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ 'স্মৃ্তির আল্পনা আঁকি'! বইয়ে আঁকাআঁকি সংক্রান্ত কী আছে তা অবশ্য জানা যায়নি। মূলত তুমুল পাঠকপ্রিয়তার কারণেই বইটির কোনো কপি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। তবে বইটি না পড়েই অন্তরে লেখকের স্মৃতির আল্পনা অনুভব করে তৈরি করা হয়েছে একটি বিশেষ eআরকি বুক রিভিউ!
এবারের বইমেলা থেকে আমার যদি কোন প্রাপ্তি থাকে সেটা হল জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ডক্টর মাহফুজুর রহমানের সাড়া জাগানো উপন্যাস- 'স্মৃতির আল্পনা আঁকি' কেনা। যদিও দুর্ভাগ্যবশত আমি তার অটোগ্রাফ নিতে পারিনি।
মিজান পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত এই বইটি সম্পূর্ণ ভীন্নধর্মী একটি গ্রন্থ। বই এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লেখক তার সুনিপুণ দক্ষতায় স্মৃতির আল্পনা এঁকেছেন। ছোটবেলায় হাফ-প্যান্টের জিপারে 'ইয়ে' আটকে যাওয়া থেকে শুরু করে কৈশোরে গার্লস স্কুলের সামনে ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা, সব রকম স্মৃতি নিয়েই খেলা করেছেন তিনি।
কথা সাহিত্যিক মাহফুজুর রহমান এই বই-এর প্রথম ভাগে তার স্কলারশিপ প্রাপ্তি এবং পিএইচডি-এর সময়কার স্মৃতিময় আলাপচারিচা এঁকেছেন। স্কলারশিপ পেয়ে তিনি যখন দৌড়ে বাসায় এলেন তখন সেখানে বাংলা সিনেমার মত হৃদয়বিদারক এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। এরপর তার বিদেশগমন এবং অপরিচিত স্থানে মানিয়ে নেয়ার যুদ্ধ শুরু হয়। এসবই উঠে এসেছে তার গ্রন্থে।
আত্মজীবনীমূলক বইটি পড়ার সময় হুমায়ূন আহমাদের 'হোটেল গ্রেভারইন'-এর কথা বারবার মনে পড়ছিলো। মনে হচ্ছিল বাংলাসাহিত্য পেয়ে গেছে দ্বিতীয় 'হুমায়ূন'!
রঙতুলি ছাড়াও যে আল্পনা আঁকা যায় সেটা এই বই-এ প্রমান করেছেন মাহফুজুর রহমান। বইটির মাঝের অধ্যায়গুলোতে ছিলো তার প্রেম-ভালবাসা আর সুখী দাম্পত্যজীবনের আল্পনা আঁকা।
প্রেমের স্মৃতিগুলো দিয়ে আল্পনা আঁকার সময় মাহফুজুর রহমান আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। যতবার তিনি 'ইভা' নামটি লিখেছেন ততবার তিনি ব্রাকেটে তিনটি লাভ ইমো দিয়েছেন।
মাঝের তিনটি অধ্যায় ছিলো পুরোপুরি ইভাময়। তাদের প্রথম দেখা হওয়া, প্রোপোজ করা, ডেটিং এ যাওয়া, সব কিছুই তিনি বর্ণণা করেছেন তুমুল রোমান্টিক ভাবগাম্ভীর্যে । এ যেন এক প্রেমের দীর্ঘ আল্পনা। এই অংশকে মাহফুজুর রহমান সংক্ষেপে 'ইভাম্যানিয়া' হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
শেষের দিকে মাহফুজুর রহমান তার প্যাশন এবং প্রফেশন নিয়ে স্মৃতির ডালি খুলে বসেন। এ ব্যাপারে তিনি একটা কথাই বলেছেন, 'সব ছাড়তে পারবো কিন্তু গান ছাড়তে পারবো না কখনো।' গানের জন্য তার ত্যাগ-তিতিক্ষা নিয়ে যত স্মৃতি আছে সব উঠে এসেছে এ সকল অধ্যায়ে।
একাধারে গায়ক, মডেল, বৃহৎ উদ্যোক্তা, এত কিছু হওয়ার পেছনে তিনি ইভা রহমানের অবদান এর কথা বারবার উল্লেখ করেছেন। আবেগ আপ্লুত হয়ে তিনি লিখেছেন, 'তোমায় দেখলে মনে হয়, হাজার বছর তোমার সাথে ছিলো পরিচয়'।
বই এর শেষ পর্যন্ত পড়লেই শুধু বোঝা যায়, কেন মাহফুজুর রহমান উৎসর্গপত্রে লিখেছেন - 'শুধু তুমি, তুমি, তুমি!'
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন