টিএসসির ১০ টাকার সিঙ্গাড়া সমুচা খেতেই বাংলাদেশে এসেছি: ট্রেভর জেমস দ্য ফুড রেঞ্জার

২৮৯০ পঠিত ... ২০:৩৭, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯

ট্রেভর জেমস, দ্য ফুড রেঞ্জার। খাবারপ্রেমীদের একটি পরিচিত নাম। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘুরেফিরে সেসব দেশের নিজস্ব খাবারগুলো খেয়ে ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও ধারণ করেন ট্রেভর জেমস। বিশ্বের কাছে তুলে ধরেন বিভিন্ন দেশের খাবার ও সংস্কৃতি। সম্প্রতি তিনি এসেছিলেন বাংলাদেশে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, এসেছিলেন আমাদের সবার প্রিয় ঢাবি ক্যাম্পাসেও, খেয়ে গেছেন ঢাবির রাস্তার পাশের পানিপুরি। তাই 'দেশে আসছেন ভাই ট্রিট দেন' বলার জন্য আমরাও খোঁজা শুরু করলাম ফুড রেঞ্জারকে।

ঢাবি ক্যাম্পাসে ট্রেভর জেমস (ছবি: Beauty of DU Campus)

ভদ্রলোকের সাথে ফেসবুকে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে ম্যাসেজ সিন করে রাখেন। কোন রিপ্লাই দেন না। আমরাও কম যাই না, ইনবক্সে কেকা ফেরদৌসির নুডলসের বিভিন্ন রেসিপি পাঠিয়ে টোপ ফেললাম। পানি ছাড়াই টোপ গিললেন ফুড রেঞ্জার। সাথে সাথে রিপ্লাই, আই জাস্ট লাভ ইট। ইটস সো ইয়াম্মি। হাউ ক্যান আই হেল্প ইউ?

ভদ্রলোক নানান দেশের স্ট্রিট ফুড চেখে বেড়ান। তাই রাস্তার পাশে সিঙ্গাড়া-সমুচা ও চায়ের দোকানের পাশেই আমরা দাঁড়িয়ে পড়লাম সাক্ষাৎকারপর্ব সারতে। কলা ভর্তা খেতে খেতে আলাপ শুরু হলো।

-তা বড় ভাই, বাংলাদেশে আসার প্ল্যানটা কবে আপনার মাথায় এলো?

প্রশ্ন শুনে তিনি মোবাইল করে একজন বয়স্ক ভদ্রলোকের ছবি দেখালেন। প্রোপিক স্থির হলেও দেখে মনে হচ্ছে ভদ্রলোকের সামনের পাকা চুলগুলো বাতাসে দোল খাচ্ছে। আমরা চিনতে পারলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসি। ট্রেভর জেমস ভদ্রলোকের ছবির দিকে নির্দেশ করে বললেন, 'দিস ইয়ং ম্যান। এই ইয়ং ম্যানের কারণে আমি বাংলাদেশে এসেছি। হোয়াট এ ট্যালেন্টেড ম্যান। আই এম জাস্ট গ্রেইটফুল টু হিম।'

এরপর তিনি জানালেন এক অশ্রুতপূর্ব তথ্য! সপ্তাহখানেক আগে ইনবক্সে তিনি একটি মেন্যু পান। মেন্যুতে রয়েছে চা, সমুচা, সিঙ্গাড়া ও চপ, কিন্তু এই সবকিছু মাত্র ১০ টাকা। গুগলে মেন্যুটির ইমেজ সার্চ করে জানতে পারলেন, গিনেজ বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির এই ১০ টাকার সেট মেন্যুটি। দেখা মাত্র তিনি চায়না ট্যুর ক্যান্সিল করে ব্যাগপত্র নিয়ে এয়ারপোর্টে ছুটে যান।

'ঢাবি ক্যাম্পাসে এসে তাহলে পানিপুরি খেলেন কেন?' এমন প্রশ্নের উত্তরে ফুড রেঞ্জার বললেন, 'জ্যামের কারণে টিএসসি পৌঁছতে দেরি হয়ে গিয়েছিল। ভেতরে গিয়ে দেখি চা সমুচা সিঙ্গাড়া চপ সব শেষ, টোটালি আউট অফ স্টক। আই ক্যান আন্ডারস্ট্যান্ড দ্য ডিমান্ড। অনলি টেন টাকা... দ্রুত শেষ হয়ে যাবে তাই স্বাভাবিক! কিন্তু কিছু তো খেতেই হয়, তাই অগত্যা পানিপুরি খেয়েই কাজ চালালাম।'

তবে বাংলাদেশের স্ট্রিট ফুডের প্রশংসাও শোনা গেলো তার কন্ঠে, 'আই ওয়েন্ট টু মিরপুর ইয়েস্টারডে। মিরপুরের স্ট্রিট ফুডও একসেপশনাল। কোনো মশলাপাতি নেই, ভেরি সিম্পল। স্টিল ইট ইজ ভেরি টেস্টি। হাউ কাম?'

আমরা মিরপুরের স্ট্রিট ফুডের সাথে রাস্তার ধুলাবালির সম্পর্কের কথা জানালে ফুড রেঞ্জার একটু চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, 'হোয়ার ইজ দ্য ওয়াশরুম?' আমরা তাকে স্থানীয় একটি পাবলিক টয়লেটের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেলাম। ফুড রেঞ্জার সাহেব এরপর প্রাকৃতিক কাজকর্মে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় সাক্ষাৎকারেরও ইতি টানতেই হলো।

 

আরও পড়ুন-

২৮৯০ পঠিত ... ২০:৩৭, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top