সাধারণের চোখে হয়ত সে সুশ্রী ছিল না।
আমিও তাহাকে যে খুব সুন্দরী মনে করিতাম তাহা নহে–কিন্তু তাহাকে ভালবাসিতাম। তাহার চোখ দুটিতে যে কি ছিল তাহা জানি না। তেমন স্বপ্নময় সুন্দর চোখ জীবনে কখনও দেখি নাই। দুষ্টু বলিয়াও তাহার অখ্যাতি ছিল।
সেই কুরূপা এবং চঞ্চলা মিনি আমার চিত্ত-হরণ করিয়াছিল! তাহার চোখ দেখিয়া আমি মুগ্ধ হইয়াছিলাম।
মনে আছে তাহাকে একদিন নিভৃতে আদর কইয়া বলিয়াছিলাম– ‘ইচ্ছে করে তোমার চোখ দুটো কেডে রাখি।‘
‘কেন?’
‘ওই দুটোই ত আমাকে পাগল করেছে। আমি সব চেয়ে ওই দুটোকেই ভালবাসি।‘
এত ভালবাসিতাম–কিন্তু তবু তাহাকে পাই নাই।
অজ্ঞাত অপরিচিত আর একজন আসিয়া বাজনা বাজাইয়া সমারোহ করিয়া তাহাকে লইয়া চলিয়া গেল।
প্রাণে বড্ড বাজিল।
কিন্তু সে বেদনা হয়ত মুছিয়া যাইত যদি সঙ্গে সঙ্গে আর একটা মর্মান্তিক ঘটনা না ঘটিত।
মিনি যখন বাপের বাড়ী আসিল, দেখি, তাহার দুটি চক্ষুই অন্ধ। কারণ শোনা গেল যে চোখে গোলাপ জল দিতে গিয়া সে ভুলক্রমে আর একটা ঔষধ দিয়া ফেলিয়াছে।
...
আমার সঙ্গে আড়ালে একদিন দেখা হইয়াছিল।
বলিলাম– ‘অসাবধানতার জন্যে অমন দুটি চোখ গেল!’
সে উত্তর দিল– ‘কেন যে গেল তা যদি না বুঝতে পেরে থাক তাহলে না জানাই ভাল!’
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন