কথিত ‘র্যাগ ডে’ নামে ‘অমানবিক, নিষ্ঠুর ও নীতিবহির্ভূত উৎসব আয়োজন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে অবশ্য ‘হালকা ধমক’ দিয়েই সে নিষেধাজ্ঞা তুলেও নেয় তারা। তবে র্যাগ ডেকে এসব উপাধি দেওয়ায় হেসেই মরে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু আপনি কি জানেন এসব উপাধি আসলেই যৌক্তিক? eআরকির যুক্তিবাদী আইডিয়াবাজরা খুঁজে পেয়েছেন বেশ কিছু যুক্তি! নিজেই দেখুন!
যে কারণে ‘অমানবিক’
১# মাননীয় স্পিকার, র্যাগ-ডে অবশ্যই অ-মানবিক। কারণ এখানে মানবিক ছাড়াও বিজ্ঞান এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।
২# র্যাগ-ডেতে মানুষের চেয়ে সাউন্ডবক্স আর ক্যামেরা কাজ থাকে বেশি। সাউন্ডবক্স আর ক্যামেরা ছাড়া র্যাগ-ডে অচল। যে অনুষ্ঠানে মানুষের চেয়ে সাউন্ডবক্স আর ক্যামেরার ভূমিকা বেশি, সেই অনুষ্ঠান অবশ্যই অমানবিক মাননীয় স্পিকার।
৩# এই একবিংশ শতাব্দীতে গরু দিয়ে মানুষ হাল চাষ পর্যন্ত করে না। মানুষের এতই পশুপ্রেম। আর র্যাগ-ডেতে ছেলেপেলে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে ক্যাম্পাস চক্কর দেয়। সাউন্ডবক্সের শব্দে ঘোড়ার কান ঝালাপালা হয়ে যায়। ঘোড়া অভিযোগ জানাতে পারে না বলে কি শিক্ষার্থীরা এরকম অমানবিকতা করে যাবে মাননীয় স্পিকার?
যে কারণে নিষ্ঠুর
১# মাননীয় স্পিকার, র্যাগ-ডে অবশ্যই নিষ্ঠুর। র্যাগ-ডেতে উচ্চস্বরে গান বাজানো হয়। এতে করে গাছের পাখ-পাখালি উড়ে যায়। কাক শান্তিমত মানুষের মাথায় ইয়ে করতে পারে না। এটা কি নিষ্ঠুরতা নয় মাননীয় স্পিকার?
২# মাননীয় স্পিকার, সিংগেলরা জানে র্যাগ-ডে কতটা নিষ্ঠুর। কাপলরা হাজারো এংগেলে ছবি তোলে। কালচারাল নাইটে জয়েন্টলি পারফর্ম করে। সিংগেলরা শুধু চিপায় দাঁড়িয়ে দেখে যায়। এ হেন নিষ্ঠুরতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মেনে নিতে পারে না!
৩# মাননীয় স্পিকার, র্যাগ-ডে উদযাপন করা মানে পরোক্ষভাবে এটা মনে করিয়ে দেওয়া, তোমার দিন শেষ! নাহ! মাননীয় স্পিকার এ হতে পারে না। শিক্ষার্থীরা আমাদের নাড়ি ছেড়া ধন। তাদের সাথে সম্পর্ক শেষ? এই নিষ্ঠুরতার আমরা করতে পারব না!
যে কারণে নীতিবহির্ভূত
১# মাননীয় স্পিকার, র্যাগ-ডে অতি অবশ্যই নীতিবহির্ভূত। র্যাগ-ডেকে তারা বলে গ্রাজুয়েশন সমাপনী অনুষ্ঠান। অথচ অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার আগেই তারা এটা উদযাপন করে। শুধু তাই নয়। ফাইনাল পরীক্ষা দিলেই তো হলো না। তুমি তো ফেলও করতে পারো। তখন? এদিকে আগেই তুমি নেচে-কুঁদে র্যাগ-ডে সেলিব্রেট করে ফেলছ। হইলো কিছু?
২# মাননীয় স্পিকার, ছেলেমেয়েদেরকে তাদের মা-বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে পাঠিয়েছে। র্যাগ-ডে করার জন্য নয়। এটা নীতির সাথে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক।
৩# এই যে র্যাগ ডের দিন ছেলেদের টিশার্টে ফাকবয়, অমুকখোর, তমুকওয়ালাসহ আরও সুন্দর সুন্দর উপাধি লেখো; তারপর ছেলেটাকে ওই টি-শার্ট গুম করে ফেলতে হয়। ছেলেটা/মেয়েটা টি-শার্ট টাকা দিয়ে কিনে নাই? টি-শার্টটা সে একদিনের বেশি পরতে পারল না। এটা নীতিবহির্ভূত না?
এইবার আপনেরাই বলেন, প্রশাসন ভুল কী বললো!
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন