নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী যখন ব্যান্ড তারকা!

৪৯৯ পঠিত ... ২০:১৩, অক্টোবর ০৬, ২০১৮

নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানীর দেখা কোথায় পাওয়া যায়? নিশ্চয়ই ভাবছেন কোন গুরুগম্ভীর সেমিনারে কিংবা তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে বা ল্যাবরোটরিতে! কিন্তু এ বছর এমন একজন নোবেল পেয়েছেন তার দেখা পেতে আপনার কোন সেমিনার বা কনফারেন্সে যেতে হবে না, তাকে দেখা যায় কনসার্টের মঞ্চে। চেকপয়েন্ট নামের এক ব্যান্ডের হয়ে মোটাসোটা এই ভদ্রলোক হারমোনিকা বাজিয়ে চলেন একমনে।

এই ভদ্রলোকের নাম জেমস এলিসন। মার্কিন এই অঙ্কোলজিস্ট ক্যান্সার নিয়ে গবেষণার জন্য জাপানি বিজ্ঞানী তাসুকু হোনজোর সাথে যৌথভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল জিতেছেন। দেহের কোন একটি অংশে অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন ক্যান্সারের প্রথম ধাপ, এরপর এই কোষ বিভাজন টিউমারে রূপান্তরিত হলে সেটি ক্যান্সারের দিকে ধাবিত হতে পারে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা পূর্ণরূপে কাজ করতে পারলে এই টিউমার কোষ বিনাশ করা সম্ভব। কিন্তু এই দুই বিজ্ঞানী আলাদা আলাদা গবেষণায় দেখতে পান, ক্যান্সার আক্রান্ত দেহে কিছু প্রোটিন দেহের ইমিউন সিস্টেমকে কাজ করতে বাধা দেয়। অনেকটা বাড়ির দারোয়ানকে বেঁধে রেখে ডাকাতি করার মতো বিষয়।

এই দুই বিজ্ঞানী নিজ নিজ গবেষণায় দুটি ভিন্ন প্রোটিনকে সনাক্ত করতে সক্ষম হন বেশ কাছাকাছি সময়ে। এই দুই প্রোটিনের আবিষ্কার এদের নিয়ে পরবর্তী গবেষণার দ্বার উন্মোচিত করেছে। গবেষকরা আশা করছেন, খুব দ্রুতই ক্যান্সারের বিরুদ্ধে বেশ কার্যকরী এবং কম খরচে চিকিৎসাব্যবস্থা আবিষ্কার করে ফেলা যাবে। এসব ভেবেই এবারের নোবেল পেয়েছেন এই দুই বিজ্ঞানী।

টেক্সাস ইউনিভার্সিটির এমডি অ্যান্ডারসন ক্যান্সার সেন্টারের অধ্যাপক জেমস এলিসন তার কিছু সহকর্মী বিজ্ঞানীদের গড়া ব্যান্ড ‘চেকপয়েন্ট’-এ হারমোনিকা বাজান। এই ব্যান্ডের মূল উদ্যোক্তা প্যাট্রিক হু এবং থমাস গ্যাজেওস্কি, হু অ্যান্ডারসন ক্যান্সার সেন্টারের একজন গবেষক আর থমাস শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের একজন অধ্যাপক। গবেষণার পাশাপাশি হু কিবোর্ড আর থমাজ বাজান গিটার। এক সম্মেলনে দেখা হলে তারা কথাপ্রসঙ্গে এই ব্যান্ডের আইডিয়া পান। তারপর ধীরে ধীরে ক্যান্সার নিয়ে কাজ করা এবং সংগীতে আগ্রহী কয়েকজন গবেষক ও বিজ্ঞানীকে জড়ো করে শুরু করেন ব্যান্ড চেকপয়েন্ট। চেকপয়েন্ট শব্দটি ক্যান্সারের অনাক্রম্যবিদ্যার একটি পরিভাষা। চেকপয়েন্ট হচ্ছে অনাক্রম্যতন্ত্রের নিয়ন্ত্রক।

চেকপয়েন্টের মূল লক্ষ্য হচ্ছে কনসার্টে গান পরিবেশনার পাশাপাশি সেখান থেকে অর্থ সাহায্য নিয়ে ক্যান্সার গবেষণায় কাজ করা। এদের কনসার্টে বড় পর্দায় ভিডিওতে ক্যান্সার নিয়ে তাদের গবেষণার নানা রকম তথ্য ভাসতে থাকে। জেমস এলিসন অসাধারণ একজন গবেষক, এর পাশাপাশি তার শিক্ষার্থীরা তাকে ‘খ্যাপাটে হারমোনিকা বাদক’ বলেও ডেকে থাকে। ডিসেম্বরে স্টকহোমে জেমস এলিসনের সাথে যাবে তার হারমোনিকাও। নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী পুরস্কার নিতে যেয়ে নিজেই অতিথিদের মাতিয়ে আসবেন সুরের মুর্ছনায়, এমনটা নিশ্চয়ই খুব একটা দেখা যায় না!   

 

৪৯৯ পঠিত ... ২০:১৩, অক্টোবর ০৬, ২০১৮

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top