বিসিবি বনাম ক্রিকেটার্স ম্যাচ ড্র, ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ সাকিব আল হাসান

১২৭৩ পঠিত ... ১৬:৩০, অক্টোবর ২৪, ২০১৯

ক্রিকেট বিশ্ব এমন টেস্ট ম্যাচ আগে দেখেনি। ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্ত জুড়ে ছিলো টানটান উত্তেজনা। 'লাগান' সিনেমার সেই বিখ্যাত ম্যাচের পরে উপমহাদেশের ইতিহাসের জীবন মরণ ম্যাচ হয়ে গেলো বিসিবি বনাম ক্রিকেটার্সদের এই ম্যাচটি।

যুগ যুগ ধরে হয়ে আসা টসে হেরে গিয়েই কোন ধরণের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ক্রিকেট ইতিহাতে এই প্রথম দেশের সব ক্রিকেটার মাঠে নামেন। নেমেই ভড়কে দেন প্রতিপক্ষ বিসিবিকে। মাঠে নেমেই ক্রিকেটাররা সবাই যুগ যুগ ধরে অর্জন করা বাস্তব অভিজ্ঞতার আগুণ ঝরা প্রতিফলন ঘটান। সাকিবের নেতৃত্বে ব্যাট করার সুযোগ পান ১১ জন। আশ্চর্যজনক ভাবে এই প্রথম ১১ জনই ক্রিকেটিয় অপব্যবস্থার জবাবে সমান তালে রান করেন। বিসিবির সামনে ১১ রানের বিশাল লক্ষ্য দাঁড় করিয়ে মাঠ ছেড়ে যান।

এমন বিশাল লক্ষ্যের আকস্মিকতায় বেশ ভড়কে যায় বিসিবি একাদশ। ব্যাটিং করার কথা থাকলেও রান অটো হয়ে যাবে এমন বিশ্বাসে ব্যাটিং না করে আক্রমণের সুবিধার্থে বোলিং করতে নামেন বিসিবি অধিনায়ক নাজমুল হাসান পাপন। মাঠে নেমেই টাইগার ক্রিকেটারদের শরীর তাক করে ছুড়তে থাকেন একের পর এক ইনসুইঙ্গার। কিন্তু শরীর তাক করা ইন্সুইঙ্গারে কোন কাজ না হওয়ায় বিসিবি একাদশ টাইগার ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে ম্যাচ পাতানো ও বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগ আনেন। মাঝে মাঝে টাইগার একাদশকে স্লেজিং করতেও দেখা যায় বিসিবি একাদশের। যদিও দর্শক ও সমালোচকরা বিসিবির এই অবস্থানকে ক্রিকেটিয় স্পিরিট বিরোধী বলে মত প্রকাশ করেন।

ম্যাচ ও পিচের কন্ডিশন বিবেচনায় ম্যাচের তৃতীয় ইনিংস ও নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস টাইগার ক্রিকেটারদের জন্য বেশ কঠিন হবে বলেই মনে করা হচ্ছিলো। কিন্তু ইনিংসের শুরুতেই ক্যাপ্টেনের বুদ্ধিদীপ্ত ও আত্মবিশ্বাসী সিদ্ধান্তে ভাবনার আকাশের সকল মেঘ কেটে যাওয়ারই আভাস পাওয়া যায়। বিসিবির শরীর তাক করে ছোড়া বলগুলোকে বেশ ভালোভাবেই খেলেছেন টাইগার একাদশের বদলি খেলোয়াড় জনাব মুখপাত্র। একই সাথে ক্রিকেটিয় জবাবে নাখোচ করে দিয়েছেন বিসিবির সকল মুখস্থ অভিযোগ।

আগের ইনিংসের বিশাল লক্ষ্যের সাথে আর ২ রান যোগ করে মোট ১৩ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেন বিসিবি একাদশের সামনে। ইনিংস শেষে মাঠ ছাড়ার সময় টাইগার ক্যাপ্টেনের খেলে দিয়েছি টাইপ আত্মবিশ্বাস ম্যাচকে নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসারই পূর্বাভাস দিচ্ছিলো।

এই ঐতিহাসিক ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসের দিকেই চোখ ছিলো পুরো ক্রিকেট বিশ্বের। ১৩ রানের বিশাল লক্ষ্যের কেমন জবাব দেন বিসিবি। প্রথম ইনিংসের মতো আক্রমণাত্মক শুরু করবেন নাকি বুদ্ধিদীপ্ত শুরু? কিন্তু অবস্থা বেগতিক দেখে, বিসিবি একাদশ ডিফেন্সিভ শুরুকেই বুদ্ধিমানের কাজ ধরে নেন। যদিও শুরুতে আক্রমণাত্মক শুরু করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু টাইগার ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাসের সামনে আক্রমণাত্নক শুরু করে কোন ধরণের সফলতা না পেয়ে ডিফেন্সিভভাবেই শুরু করেন।

শুরুতে টাইগারদের ১৩ রানের লক্ষ্যের বিপরীতে ৯ রান তুলতেই হিমশিম খায় বিসিবি একাদশ। অতঃপর বিসিবি ইনিংস ডিক্লেয়ার করলে তৃতীয় দিন শেষেই ম্যাচটি ড্র বলে ঘোষণা করা হয়।

বুদ্ধিদীপ্ত অধিনায়কত্ব ও অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের জন্য ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হন টাইগার ক্যাপ্টেন সাকিব আল হাসান।

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

টস: এই ম্যাচের টস যুগ যুগ ধরেই হয়ে আসছিলো। সেখানে হেরেই মাঠে নামেন টাইগার একাদশ।
প্রথম ইনিংস (টাইগার একাদশ): ১১ রান/সব ক্রিকেটারই অপরাজিত
প্রথম ইনিংস (বিসিবি একাদশ): ০ রান, স্লেজিং, অভিযোগ, ষড়যন্ত্রতত্ত্ব, অটো! অটো! অটো! খেললে খেলবে না খেললে নাই, মিরাজের বাবা মুশফিকের বাবা...
দ্বিতীয় ইনিংস (টাইগার একাদশ): ২ রান/সব ক্রিকেটারই অপরাজিত, নারী ক্রিকেটারদের সংযুক্তি (মোট ১৩ রান)
দ্বিতীয় ইনিংস (বিসিবি একাদশ): ৯ রান (ডিক্লেয়ার)
ফলাফল: ম্যাচ ড্র
ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ: সাকিব আল হাসান

১২৭৩ পঠিত ... ১৬:৩০, অক্টোবর ২৪, ২০১৯

Top