ইভিনিং কোর্সের আদলে ইভিনিং র‍্যাগ-ডে করতে যাচ্ছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা

৪৭০ পঠিত ... ১৫:২৫, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২০

[এটি একটি স্যাটায়ার সঙবাদ। এটাকে সিরিয়াসলি নেয়া একটি অত্যন্ত ‘অমানবিক’, ‘নিষ্ঠুর’ ও ‘নীতিবহির্ভূত’ ব্যাপার হবে!]

গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর জানায়, একাডেমিক কাউন্সিলের এক সভায় কথিত ’র‌্যাগ ডে’ নামক ‘অমানবিক’, ‘নিষ্ঠুর’ ও ‘নীতিবহির্ভূত’ উৎসব আয়োজন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, শিক্ষাজীবন শেষ হলে ক্যাম্পাসে ‘র‌্যাগ ডে’ উৎসবের মাধ্যমে তা উদ্‌যাপন করে থাকেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে এবার ক্যাম্পাসে এই ধরনের উৎসব আয়োজন নিষিদ্ধ করল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে নিষিদ্ধ করার চেয়েও শিক্ষার্থীদের কাছে বিস্ময়কর ঠেকেছে র‍্যাগ ডে সম্পর্কে প্রশাসনের ব্যবহৃত এই তিনটি বিশেষণ, যার মর্মার্থ বুঝতে পারছে না কেউই।

র‍্যাগ ডে নিষিদ্ধের খবরে প্রথমে বিচলিত হয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা। নাচে-গানে ভরপুর এই অনুষ্ঠান থাকে স্নাতক সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীদের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। র‍্যাগ ডে কেমন হবে, কীভাবে করবে, কী আয়োজন থাকবে, তা নিয়ে ফার্স্ট ইয়ার থেকেই যেন শিক্ষার্থীদের মধ্যে থাকে নানান পরিকল্পনা। তাই বিচলিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে এই ‘বিচলতা’ কাটিয়ে উঠতে বেশি সময় নেননি শিক্ষার্থীরা। ঢাবিতে চলমান নানান ইভিনিং কোর্সের অনুপ্রেরণায় ‘ইভিনিং র‍্যাগ ডে’ করতে চান শিক্ষার্থীদের একাংশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ইভিনিং কোর্সের রমরমা অবস্থা। ইভিনিং কোর্স যেন ঢাবির নতুন ঐতুহ্য। আর তাই তো সেই ঐতিহ্য অনুসরণ করেই ইভিনিং কোর্সের আদলে শিক্ষার্থীরা ইভিনিং র‍্যাগ ডে উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, 'সাধারণ র‍্যাগ ডে নিষিদ্ধের কথা বলা আছে। কিন্তু ইভিনিং কিংবা নাইট র‍্যাগ ডে নিয়ে তো কিছু বলা নাই। আমরা তাই ইভিনিং র‍্যাগ ডে সেলিব্রেশনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা নিশ্চিত, এটা নিষিদ্ধ হবে না। জানেন তো, শিক্ষকরা ইভিনিং শুনলেই কেমন খুশিতে ডগমগ হয়ে যান!' 

প্রথমে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালেও উল্টো এখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে সাধুবাদ জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। একজন বলছিলেন, 'দিনে সেলিব্রেশন করাটা আসলেই ঝামেলা ছিল। র‍্যাগ ডে থাকে শীতকালে। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে জোগাড়যন্ত্র করা বিশাল প্যারা। এখন স্যাররাও সন্ধ্যায় প্রাইভেটে ক্লাস নিতে যাবে। আমরাও সুন্দরমতো আরাম-আয়েশ করে ইভিনিং র‍্যাগ ডে সেলিব্রেট করব। চিল ম্যান!'

ইভিনিং র‍্যাগ ডে নিষিদ্ধ করলে কী করবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে এক শিক্ষার্থী ডিপজলের মতো হাসতে হাসতে  বলেন, 'অ্যাম আই এ জোক টু ইউ? একদিন ইভিনিংয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসেন। ইভিনিং কত মজাদার জিনিস টের পাবেন। ইভিনিং হইলো সোনার ডিম পাড়া হাঁস, মিয়া। রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে, কিন্তু ইভিনিং? ইভিনিং হইলো অনন্ত-যৌবনা। এর কোন শেষ নাই!' 

[আপডেট: ৩ সেপ্টেম্বর আরও একটি প্রজ্ঞাপনে ঢাবি প্রশাসন র‍্যাগ ডের উপরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও, 'অমানবিক', 'অসৌজন্যপূর্ণ' ও 'শৃঙ্খলা পরিপন্থী' ঘটনা এড়ানোর দিকে জোর দিয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা ইভিনিং র‍্যাগ ডের ব্যাপারে এখনও অটল আছেন কিনা, তা জানা যায়নি।]

৪৭০ পঠিত ... ১৫:২৫, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২০

Top