মেগান মার্কেলের সাক্ষাৎকার পড়ে বাংলাদেশি বধূরা বললেন, ফার্স্ট টাইম?

১২৭১ পঠিত ... ১৮:৩৫, মার্চ ১১, ২০২১

BANGLADESHI-wife-first-time (1)

'ব্রিটিশ রাজপরিবারের জৌলুসপূর্ণ জীবনে থেকেও ভালো ছিলেন না প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী ও সাবেক মার্কিন অভিনেত্রী মেগান মার্কেল। ডাচেস অব সাসেক্স বলেন, পরিবারের মধ্য থেকেও  তিনি এত বিচ্ছিন্ন ও নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ছিলেন যে একটা সময় বেঁচে থাকার ইচ্ছাই হারিয়ে ফেলেন। ভাবছিলেন আত্মহত্যা করবেন।' 

মেগানের সাক্ষাৎকারের এ অংশ পড়ে দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে গৃহবধূ আসমা আক্তার কমেন্ট করেন, 'আপা, সেম টু সেম। আমারও কিন্তু একই অবস্থা। আমারও আপনার মত সারাদিন এ জদকদ:*&,,যজি/////%জ্বজ'।

এই কমেন্টের পরের অংশের মর্ম আমরা উদ্ধার না করতে পারলেও আসমা আক্তারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তিনি কমেন্ট লেখার সময় তার শ্বাশুড়ি রুমে চলে আসায় ফোন লুকাতে গিয়ে হাতের চাপে অমন লেখা ওঠে এবং কমেন্ট আপলোড হয়। 'আমি বলতে চাইতেছিলাম যে, আমারও আপনার মত সারাদিন এ...', লাইনটা আবারো কেটে যায়। 

শ্বশুরবাড়িতে, তথা বাকিংহাম প্যালেসে মেগান ও তার ছেলের গায়ের রং ‘শ্যামলা’ হওয়ায় বাঁকা কথা শোনা নিয়ে চৌধুরী বাড়ির পার্ট টাইম উদ্যোক্তা বউ ও ফুলটাইম রাঁধুনী শায়লা চৌধুরী বলেন, ‘গায়ের রঙ কালো হওয়ায় তো বাপের বাড়ি থেকেই কথা শুনে আসছি। শ্বশুরবাড়িতে তো এসব বলবেই। আমার শ্বাশুড়ি তো জামাইকে আরেক বিয়ে করতে বলছিল যেন বাচ্চারা কালো না হয়। তবে এইসব আর কেয়ার করি না। অনলাইনে জামা-কাপড়ের ব্যবসা দিছি। আপুরা আমার সার্ভিস আর আচরণেই মুগ্ধ। গায়ের রঙ দেখতে আসে না।’

স্বামীর চেয়ে বেশি বেতনের চাকরি করায় সদ্য চাকরি ছেড়ে স্বামীর সেবায় বাড়িতে থাকতে বাধ্য করা হয় মিস নায়লাকে। তিনি মেগান মার্কেলকে মধ্যাহ্নভোজে যেতে না দেওয়ার খবর শুনে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘লোকে কী বলবে শুনে যদি মেয়েদের ঘর থেকে বের না হতে দেওয়া হয়, তাহলে শিক্ষিত বউ ঘরে আনে কেন? আমাদের কী জীবন নাই? প্রিন্সেসের তো অন্তত জামাইটা পাশে আছে। কিছু মেরুদণ্ডহীন লোক তো বউয়ের বেশি বেতনও সহ্য করতে পারে না।’ 

‘প্রিন্সেসের গল্প শুইনা তো নিজেরেই প্রিন্সেস প্রিন্সেস লাগতেছে। জীবনে কাজের দিক দিয়া হাফ সিনডেরেলা হইলেও এত কাহিনী শুনে মনে হইলো, প্রিন্সেসের লাইফ আর আমার লাইফ তো একই।’ এমনটি জানালেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গৃহবধূ। রাজপরিবার বা মধ্যবিত্ত পরিবার যেটাই হোক, সকল স্তরের সব ধরনের নারীর জীবনের গল্পই যে এক, এটিই বোধহয় তার চাক্ষুস প্রমাণ।

আশার কথা হলো বাপের বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়ি, সবখানে এত অপমান সকল নারী এখন আর মুখ বুজে সহ্য করেন না। প্রিন্সেস হয়েও রাজপরিবারের জীবন ছেড়ে দিয়ে মেগান মার্কেল যেমন সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, তেমনি হাজারো নারী তার বিষাক্ত পরিবার ছেড়ে বের হয়ে এসে স্বাবলম্বী হোক, এটি আমাদের প্রত্যাশা। 

১২৭১ পঠিত ... ১৮:৩৫, মার্চ ১১, ২০২১

Top