লকডাউনের জন্য বিশেষ প্রণোদনা চাইলেন ট্রাফিক পুলিশরা

৩৭৯ পঠিত ... ১৫:৪২, এপ্রিল ১৯, ২০২০

করোনার প্রকোপ ঠেকাতে দেয়া লকডাউনে বিশাল বিশাল ব্যবসায় যেমন ভাটা পড়েছে, তেমনি একেবারে পথে বসেছেন দিন আনি দিন খাই হিসাবের শ্রমিকেরা। তবে দিন এনে দিন খাওয়া আরেক পেশাজীবী ট্রাফিক পুলিশদের দৈনিক রোজগারেও বড় রকমের ভাটা পড়েছে। অথচ বড়বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য সরকার হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করলেও, ট্রাফিক পুলিশদের দৈনিক ইনকামে ভারসাম্য রক্ষায় নেই কোন হ্যান্ডশেক প্যাকেজও। ফলে বিপাকে পড়ে, নিজেদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার অনুরোধ জানিয়েছেন ট্রাফিক পুলিশরা।

ঢাকাস্থ ট্রাফিক পুলিশদের একাংশ হ্যান্ডশেক পার্টির অন্যতম সংগঠক বলেন, 'কতদিন রাস্তায় ট্রাক, পিকাপ, লরি নাই! দেখি না তেমন রিক্সা, ভ্যানও। তাদের সাথে হ্যান্ডশেক করতে হাতটা কেমন নিশপিশ নিশপিশ করে।'

ভদ্রলোকের দুঃখে দুঃখিত হয়ে তার সাথে হ্যান্ডশেক করতে গেলে তিনি হাত সরিয়ে নিয়ে বলেন, 'আপনার সাথে হ্যান্ডশেক করে লাভ নাই। বরকত বেশি পিকআপ ভ্যান আর ট্রাক-মামাদের হ্যান্ডশেকে। আপনি পারলে আমাদের এই দুঃখের কথা সরকার পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে আমাদের জন্য একটা প্রণোদনা প্যাকেজ বের করে আনেন। এরপর আমিই আপনার সাথে বরকতময় হ্যান্ডশেক করবো কথা দিলাম।'

এ পর্যায়ে তিনি নিজের হাতের দিকে বিষণ্ণভাবে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে স্যানিটাইজার দিয়ে নিজেই নিজের হাত কিছুক্ষণ কচলে নেন।

ঢাকাস্থ ট্রাফিক পুলিশদের আরেকাংশ 'অডিট পার্টি'ও জানান নিজেদের কষ্টের কথা। দুঃখ ভারাক্রান্ত গলায় বাইনোকুলার দিয়ে দূরের রাস্তায় গাড়ি খুঁজতে খুঁজতে এক কর্মকর্তা বলেন, 'কতদিন গণপরিবহনগুলোর কাগজপত্র দেখি না। হাত, চোখ, মাথা, পকেট সবই কেমন খালি খালি লাগে। ইশারা দিলেই ড্রাইভারটা গাড়ি থামিয়ে দৌঁড়ে দৌঁড়ে আসতো। আহ! চোখের আর পকেটের শান্তি আছিলো সেই দৌঁড়। এখন দৌঁড়ানো তো দূরে থাক, কেউ ফাঁকিও দিতে চায় না। ফাঁকি দিবে কোত্থেকে, রাস্তায় তো কেউ নাইই! এই মুহূর্তে সরকার আমাদের প্রণোদনা না দিলে আমাদের মাস পার করা তো দূরের কথা, দিন পার করাই কষ্ট হয়ে যাবে।'

তবে আলাদা চিত্র দেখা গেছে মিরপুর ১০ নম্বরের ফায়ার সার্ভিসের সামনের জনৈক ট্রাফিক পুলিশের ক্ষেত্রে। লাঠির বাড়ি খাওয়া এক পরিব্রাজক মারফত জানা গেছে, সবজির ভ্যান, সবজির রিক্সাওয়ালা মামাদের সাথে তিনি এখনো নিরবচ্ছিন্ন হ্যান্ডশেক করে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে তিনি প্রকাশ না করার শর্তে মন্তব্য করেন, 'প্রতিবার হ্যান্ডশেকের পর হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নিচ্ছি, সমস্যা নাই। সরকার যদি আমাদের কিছু প্রণোদনা দেয়, সাবানের বদলে স্যানিটাইজার ইউজ করবো।'

৩৭৯ পঠিত ... ১৫:৪২, এপ্রিল ১৯, ২০২০

Top