এই স্ট্রিটল্যাম্প কি এলিয়েনদের স্বাগত জানাচ্ছে, নাকি পাইলটদের পথ দেখাচ্ছে?

১১২২ পঠিত ... ২০:৫২, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯

বাঁশবাগানের মাথার ওপর চাঁদ উঠেছে ঐ, ছোটবেলার বিখ্যাত এই কবিতা পড়েছেন কমবেশি সবাই। কিন্তু বাশবাগানের মাথার ওপর স্ট্রিটল্যাম্প ওঠা দেখেছেন কেউ? ফেসবুকে সম্প্রতি তানভির চৌধুরী পিয়েল নামক এক ফটোগ্রাফারের তোলা ছবিতে এরকম কিছুই আমরা দেখতে পাই। কবি নজরুল ইসলাম বেঁচে থাকলে ছবিটা দেখে হয়তো বলতেন, 'উর্ধগগনে ওঠে স্ট্রিট লাইট, নিম্নে উতলা ল্যাম্পপোস্ট।'

আকাশের দিকে মুখ করে থাকা স্ট্রিট লাইটের এই ছবিটি তানভীর রহমান পিয়েল নিজের ফেসবুকে আইডিতে আপলোড দিয়ে লেখেন, 'এই ল্যাম্প কী করছে? এলিয়েনদের স্বাগত জানাচ্ছে? পাইলটকে পথ দেখাচ্ছে? চাঁদকে আলো ধার দিচ্ছে? নাকি স্যাটেলাইট থেকে সিগন্যাল রিসিভ করছে?

তিনি অনেক ধরনের অনুমান করলেও eআরকি টিম শুধুমাত্র অনুমানের ওপর নির্ভর করে বসে থাকেনি। eআরকির তিন সদস্যবিশিষ্ট স্ট্রিট লাইট গবেষক দল নেমে পড়েন রাস্তায়। ঐ এলাকার লোকজনের সাথে কথাবার্তা বলে আমরা নানান বিষয় সম্পর্কে জানতে পারি। জনৈক তান্ত্রিক eআরকিকে বলেন, 'রাত বিরাতে জ্বিন-পরী, ভূত-প্রেত, দৈত্য-দানোরা আকাশে চলাচল করে। আলোর অভাবে অনেক সময়ই দেখা যায় তারা একে অন্যের সাথে এক্সিডেন্ট করছে। গত সপ্তাহেই দুইটা ভূত সিরিয়াস আহত হয়েছে। একজনের অবস্থা আশংকাজনক। কিন্তু আমাদের সরকার শুধু মানুষের কথাই ভাবে। ভূত-প্রেতের কথা ভাবে না। এই এলাকায় প্রথম তাদের কথা ভেবে সিটি কর্পোরেশন থেকে ভূতদের জন্য আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।' আগামী নির্বাচনে ভূত সমাজ এই ভূতদরদি মেয়রকেই রাতের অন্ধকারে ভোট দিতে চায় বলেও তিনি জানান।

তবে তান্ত্রিকের এই কথা অস্বীকার করেন ঐ এলাকারই আরেক বিজ্ঞানমনস্ক ব্যক্তি। তিনি জোর গলায় বলেন, 'ভূত প্রেত বলে কিছু নেই পৃথিবীতে। এই লাইট মূলত এলিয়েনদেরকে কোড পাঠাচ্ছে দুনিয়া থেকে। এরকম ঊর্ধমুখী লাইট দেখলেই এলিয়েনরা পৃথিবীতে এসে নামবে।'

আরেকজন বলেন, 'এইহান দিয়া পেলেন যায়। জায়গাডা অন্ধকার বলেই আলো উপরে দেয়া হয়েছে। পেলেনরা যাতে দেখেশুনে যাইতে পারে।'

তবে সবচাইতে মোক্ষম যুক্তিটি দেন ফারজানা নামের এক নারী। তিনি বলেন, 'স্ট্রিট লাইট উপরে আলো দিচ্ছে তার নিজের ইচ্ছায়। এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সে ইচ্ছা করলে নীচে আলো দিবে, ইচ্ছা করলে উপরে দিবে। এখানে আমাদের করার কিছু নেই। কতাছাড়া স্ট্রিট লাইটরা আর কতকাল নিচের রাস্তা দেখবে? তাদেরও আকাশ, চাঁদ, তারা দেখার শখ হতেই পারে। এতে রাজনীতি করার কিছু নেই।'

আমরা সবার ব্যাখ্যা পর্যালোচনা করে একটা সিদ্ধান্তে আসতে যাচ্ছিলাম তার আগেই আমাদের টিমের প্রধান গবেষক কী করে যেন একটু হাই হয়ে যান৷ তারপর সবার মতামত ফেলে দিয়ে রোদ্দুর রায়ের অনুকরণে দরাজ গলায় গেয়ে ওঠেন, 'যেতে যেতে পথে, পূর্নিমা রাতে, স্ট্রিট লাইট উঠেছিলো গগনে।'

তার সাথে একান্ত হয়ে সূদূর কোলকাতা থেকে রোদ্দূর রায় কোরাস ধরেন, 'শালা স্ট্রিটলাইট উঠেছিলো গগনে, বা* স্ট্রিটলাইট উঠেছিল গগনে, বাইন** স্ট্রিটলাইট উঠেছিলো গগনে...'

১১২২ পঠিত ... ২০:৫২, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯

Top