বাংলার ফেসবুকে শুরু হয়েছে ‘নো বাথ উইন্টার’ ক্যাম্পেইন

১২৬৩ পঠিত ... ২১:২৫, ডিসেম্বর ২১, ২০১৯

নো শেভ অক্টোবর, ইংকটোবার, নো ব্রা ডে এর মতো এবার বাংলার ফেসবুকে শুরু হলো নো বাথ উইন্টার ক্যাম্পেইন। শীতকালে গোসলের মতো মহামারির কবলে পড়ে মৃত্যুঝুঁকি কমানোই এই ক্যাম্পেইনের মূল উদ্দেশ্য। ধারণা করা হয়, এমন উদ্দেশ্য নিয়েই হাজার বছর ধরে বাংলাদেশের যুবসমাজ বাস্তবে শীতে গোসল না করে নো বাথ উইন্টার পালন করে আসছে। ফেসবুকে আসার পর কেউ কেউ ফেসবুকে হ্যাশট্যাগ ১৫ দিন গোসল করি না লিখে স্ট্যাটাস দেয়ার মাধ্যমে এই ক্যাম্পেইনকে জনপ্রিয়ও করতে চেয়েছে। তবে এই বছর থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে গোসল না করার এই ক্যাম্পেইন।

প্রতিবছর শীতে পানি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজার রাখার কারণে এলাকায় খচ্চর খসরু নামে পরিচিতি পাওয়া 'নো বাথ উইন্টার' ক্যাম্পেইনের অন্যতম মুখপাত্রের কাছে এই ক্যাম্পেইনের মুখ্য উদ্দেশ্য জানতে চাওয়া হলে তিনি নো বাথ উইন্টার ক্যাম্পেইনের সাথে একাত্ত্বতা ঘোষণা করার শর্তে eআরকি টিমকে জানান, 'মূলত শীতে গোসল করতে গিয়ে মৃত্যুহার কমানোই মূল উদ্দেশ্য হলেও এই ক্যাম্পেইনের আরো কিছু উদ্দেশ্য রয়েছে। তাছাড়া শীতকালকে একটা ট্রিবিউট দেয়ার চিন্তা থেকেও আমরা এই ক্যাম্পেইন রান করেছি।'

গোসল না করার জন্য এবার আরো শক্ত যুক্তি দাঁড় করানো যাবে এমন আশা বুকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত eআরকি টিম ক্যাম্পেইনটি সম্পর্কে আরও জানতে চাইলে খচ্চর খসরু বলেন, 'শীতকে একটু সম্মান, সমীহ করা আর কি। শীতকালে সবাই গণহারে বিয়ে করার সাহস দেখিয়ে শীতকালের মতো একটি দূর্ধর্ষ ঋতুকে পুরাই ফালতু বানাইয়া ফেলছে। শীতকালকে তার প্রাপ্য মর্যাদা ও সমীহ ফিরিয়ে দেয়াও আমাদের এই ক্যাম্পেইনের অন্যতম উদ্দেশ্য। আগের যুগে দেখতেন না, কোন শক্তিতে অবহেলা করলে সেই শক্তি সব ছারখার করে দিতো। সেজন্যই আমরা শীতকে তার প্রাপ্য সম্মান ফিরিয়ে দিয়ে তাকে শান্ত রাখতে চাই। আদতে এটা মানবজাতির তথা এই বিশ্বের জন্যই কল্যাণকর।'

তিন ঘন্টা ধরে সাহস সঞ্চয় করে গোসল করতে ঢুকে নো বাথ ক্যাম্পেইনের খবর পেয়েই বাথরুম থেকে এক লাফে বের হয়ে দৌড়ে এসে ক্যাম্পেইনে চেক ইন দেয়া এক এন্টি-গোসলম্যান জানান, 'খুব উপকার হইলো! শীতে গোসল করি না বলে কত অপমান-অপদস্ত হয়েছি এতদিন। ঘর থেকেও বের করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে বাসার লোকজন। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে গোসলের মোটিভেশন চাওয়ায় খচ্চর বলেছে কতজনে। এবার একটা আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাওয়া গেলো! ভাবতে ভালো লাগছে, আমার মতো এমন আরও তরুণ-তরুণীরা আছেন, যারা গোসল না করতে ভালোবাসেন।'

গায়ে এক মগ পানি ঢেলেই কোমায় চলে যাওয়া একজন আইসিইউ থেকে গায়ে তার-তুর লাগানো অবস্থায় ক্যাম্পেইনের ইভেন্টে লাইভে এসেই স্লোগান ধরেন, 'গুশীল (যারা গোসল করতে বলে)-এর চামড়া, তুলে নিবো আমরা। মানি না মানবো না, গোসল আর করবো না।'

নো বাথ উইন্টার ক্যাম্পেইনের আওতায় কি শুধু গোসলই পড়বে? এমন দারুণ এক প্রশ্নের জবাবে ক্যাম্পেইনের অন্যতম এক উদ্যোক্তা বলেন, 'সেভ ওয়াটারও এই ক্যাম্পেইনের আরো একটি উদ্দেশ্য। সেজন্য শুধু গোসল না, পুরো শীতকাল জুড়ে যেকোন ধরণের পানির স্পর্শে না আসাও এই ক্যাম্পেইনের এক্টিভিটির মধ্যে পড়ে।'

গোসল করেও ফেসবুকে গোসল করি না লিখে স্ট্যাটাস দেয়া মিথ্যাবাদীদের অনুপ্রবেশের ব্যাপারেও সাবধান করেন ক্যাম্পেইনের উদ্যোক্তারা। এই ধরনের অনুপ্রবেশকারীদের ধরতে ‘এক শীত এক জামা’ নামে একটি সাব-ক্যাম্পেইনের কথাও ভাবছেন তারা। এই সাব-ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণের জন্য শীত শুরু হওয়া থেকে শেষ হওয়া পর্যন্ত একই জামায় থাকতে হবে, এবং গায়ের মধ্যে ৩ সেন্টিমিটার স্তর বিশিষ্ট ময়লাও দেখাতে হবে।

গণদাবির মুখে ক্যাম্পেইনে নতুন আরেক এজেন্ডা যোগ করেন তারা। সেই এজেন্ডায় বলা হয়, 'শুধু শীত না, অন্যান্য সিজনে বৃষ্টি হয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত শীত নেমে আসলেও এই ক্যাম্পেইন পালন করা যাবে।'

এছাড়া এপিজে আবুল কালাম নামে একটি আইডি থেকে নো বাথ উইন্টার ক্যাম্পেইনে একটি পোস্ট দেখা যায়, 'সাহস দেখিয়ে প্রতিদিন গোসল করে ফেলাটাই গোসল নয়, একবার গোসল করার জন্য পুরো শীতের সিজন ধরে সাহস সঞ্চয় করাটাই প্রকৃত গোসল।'

১২৬৩ পঠিত ... ২১:২৫, ডিসেম্বর ২১, ২০১৯

Top