চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে দ্বিতীয় লেগে এক রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে আয়াক্সকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠল টটেনহাম হটস্পার্স। দুই-শূন্য গোলে পিছিয়ে থেকেও দ্বিতীয়ার্ধ্বে লুকাস মৌরার দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে ফাইনাল নিশ্চিত করে টটেনহাম। পরপর দুই রাতে দুটো কামব্যাক ম্যাচ দেখে বিমোহিত ভক্তরা দাবি করেছেন ইউসিএলের নতুন নাম ‘ইউয়েফা কামব্যাক লিগ’ রাখার।
সেমিফাইনালের প্রথম লেগে টটেনহামের ঘরের মাঠে আয়াক্স তাদের ১-০ গোলে পরাজিত করে। অ্যাওয়ে গোলে ম্যাচ জিতে আসায় ঘরের মাঠে বেশ নির্ভার ছিল আয়াক্স। তার উপর প্রথমার্ধ্বেই ডি লিট এবং জিয়েচের গোলে এগিয়ে যাওয়ায় ফাইনালে প্রায় চলেই গিয়েছিল আয়াক্স। কিন্তু আগের রাতে লিভারপুলের দেখানো পথে দ্বিতীয়ার্ধ্বে ফিরে আসে টটেনহাম। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড লুকাস মৌরার পায়ে ভর করে ৩টি গোলের দেখা পেয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে স্পার্সরা। দীর্ঘ ১১ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগে নিশ্চিত হয় আরেকটি ‘অল ইংলিশ ফাইনাল’।
দীর্ঘদিন পর আরেকটি অল ইংলিশ ফাইনালের খবরে প্রিমিয়ার লিগ সমর্থকদের মাঝে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বেশ অনেকদিন ধরেই লা লিগার উগ্র সমর্থকদের কাছে হেয় প্রতিপন্ন হয়ে আসতে হচ্ছে ইপিএল ভক্তদের। টানা পাঁচটি ইউসিএল শিরোপা স্পেনে (৪টি রিয়াল, ১টি বার্সা) যাওয়ায় কোন লিগ সেরা সে প্রশ্নের যুতসই উত্তর দিতে পারছিল না ইপিএল ভক্তরা। তাই, দুই ইংলিশ দল কোণঠাসা অবস্থা থেকে ফিরে এসে ফাইনালে যাওয়ায় স্বভাবতই আনন্দটা একটু বেশি তাদের।
নিখিল বাংলা ইপিএল সমর্থক ফ্রন্টের ব্যানারে একটি আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয় টটেনহামের ম্যাচশেষে। আরামবাগ থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে এসে শেষ হলে একটি পথসভায় ভাষণ দেন সংগঠনটির নেতারা। সহ-সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রথম লেগে হেরেও, আমাদের লিগের দুই দল ফাইনালে গিয়েছে। আমরা কামব্যাক করে ইতিহাস গড়েছি। এই ঐতিহাসিক সমাবেশে আপনাদের সবার সামনে উয়েফার কাছে দাবি জানাই ইউসিএলের নাম বদলে ‘উয়েফা কামব্যাক লিগ’ রাখার।’
এই দাবির সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে লিভারপুল ফ্যান ক্লাব ও নবগঠিত ‘আমরা ছোটবেলা থেকে টটেনহাম সাপোর্টার’। গুটিকয়েক পুরনো সমর্থককে সাথে নিয়ে বিভিন্ন ক্লাব থেকে দলবদল করা সমর্থকরা মিলে এই সংগঠনের সৃষ্টি হয়েছে, এমন অভিযোগকে একদম উড়িয়ে দিয়ে সংগঠনটির সভাপতি বলেন, ‘ম্যাচে হারিকেন ছিল না। কিন্তু আয়াক্সকে আমরা উড়িয়ে দিয়েছি ঘূর্ণিঝড় মৌরায়। এমন ক্লাবকে সাপোর্ট করব না তো কি!’ তিনি এ সময় মৌরাকে উদ্দেশ করে কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ‘মৌরা ঝঞ্ঝার মত উদ্দ্যম...’ কবিতাটি আবৃত্তি করে শোনান।
উল্লেখ্য, গত রাতের ম্যাচটিতে ছিলেন না স্পার্সদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হ্যারি কেন। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচটির হাইলাইটস দেখুন-