গরু কেনার জন্য ফেসবুক মোটিভেটররা যে মোটিভেশনাল স্পিচ দিতে পারেন

৫৪১ পঠিত ... ১৭:২০, আগস্ট ১০, ২০১৯

মোটিভেশনাল স্পিচ ব্যাপারটি সাম্প্রতিক সময়ে বেশ হিটে আছে। মোটিভেশনাল স্পিকারদেরকে নিয়ে যতই ট্রল করা হোক না কেন, তারা কিন্তু মোটিভেশন দেয়ার ব্যাপারে মোটেও ডিমোটিভেটেড হন না! আমরা তাদের ডিমোটিভেট করতেও চাই না। বিখ্যাত মানুষদেরও প্রয়োজন হয় মোটিভেশনাল স্পিচের। সাকিব ভাইকেই দেখুন, শিশির ভাবী তাকে মোটিভেট করে কী করে কেল্লা ফতে করে দিলেন! কিন্তু এই কোরবানির মৌসুমে যদি এমন হয় যে আপনি গরু কিনতে চান অথচ মোটিভেশনের অভাবে পারছেন না, তাহলে কী করবেন? আবার আপনি যদি অন্যকে গরু কেনার ব্যাপারে মোটিভেট করতে চান, তাহলেই বা কী করবেন? eআরকি তাই নিয়ে এসেছে দু পক্ষের জন্যই সুন্দর এক সমাধান, রেডিমেড গরু কেনার মোটিভেশনাল স্পিচ--- 

 

 

এই গরু কেনার মৌসুমে ইনবক্সে প্রচুর নক পেয়েছি। অধিকাংশ ছেলেমেয়েই তাদের গরু নিয়ে খুবই হতাশ। হতাশায় তারা দিনে ঘুমায়, রাতে ঘুমাতে পারে না। গরুর চোখের মত কালো হয়ে গেছে প্রত্যেকের চোখ। 

যেমন একটি ছেলে একটু আগে ইনবক্সে নক করে বলল, 'ভাইয়া, আমাদের গরুটা একটু ছোট। গরুর গায়ের রঙটাও ফর্সা না। এটা নিয়ে খুব ডিপ্রেসড হয়ে পড়েছি।' 

গতকাল একটা মেয়ে বলল, 'ভাইয়া আব্বু এখনো গরু কিনতে যায়নি। বন্ধুদের কাছে আমি মুখ দেখাতে পারছি না। খুব ডিপ্রেসড লাগছে।' এরকম অসংখ্য হতাশাব্যাঞ্জক নক পাচ্ছি প্রতিনিয়ত। 

আমি তোমাদের একটা কথাই বলব, ‘ডোন্ট বি আপসেট গাইজ। গরুর চোখের দিকে তাকাও। দেখবে সেখানে আছে মৃত্যুর ভয়, আছে একাকী দড়িতে আটকে থাকার হতাশা। আছে সত্যিকারের ডিপ্রেশন। তোমার কীসের এত হতাশা? তুমি তো মুক্ত। তোমার গলায় কোন দড়ি নেই। চোখ কচলে উঠে বসো। গুগলে সার্চ দাও। দেখো গাবতলীর হাট কত সুন্দর!' 

গরু ছোট বলে মন খারাপ কোরো না। হয়তো গরু ছোট বলেই তোমার ঈদের দিন কম কাজ করতে হবে। মাংস তাড়াতাড়ি সংগ্রহ করা হয়ে যাবে। বি পজিটিভ ম্যান। এভ্রি গরু হ্যাজ ইটস ওউন বিউটি।

গরু কেনার আগে মন শক্ত করো। যা হবে, ভালো হবে। গরুর সাইজ পছন্দ হচ্ছে না? গরুর শিং বাঁকা? লেজটা ছোট? প্লিজ ডোন্ট থিংক যে তুমি ব্যর্থ। মাথা উঁচু করে একটু সামনে দেখো। দেয়ার আর লটস অব গরুজ টু বি চোজেন। 

সমাজবিজ্ঞানী টিভিএস পালসার বলেছেন, 'পথ খুঁজতে হয় না, পথ তৈরি করতে হয়'। তেমনি তুমিও তোমার পথ তৈরি করে নাও। গরুর হাটে ভিড় থাকবেই। ভিড় ঠেলে পথ বানাও। একটু এগোলেই পাবে সেই কাঙ্ক্ষিত গরুটাকে। 

গরু কি রাস্তায় বসে পড়বে নাকি ছুটে পালিয়ে যাবে, এসব নিয়ে অযথা দুঃশ্চিন্তা করবে না। যদি গরু ছুটে যায়, চেজ ইউর গরু। যদি রাস্তায় বসে পড়ে, ক্যারি ইউর গরু টু ইউর ডেসটিনেশন। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখো, দেখবে, সাফল্য আসবেই। 

গরুর আকাশচুম্বী দাম শুনে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়াটা বোকামি। উঠে দাঁড়াও। গরুই কিনতে হবে এমন কোনো কথা কি কোথাও লেখা আছে? গরু যদি না কিনতে পারো, ছাগল কেনো! সাধ্যের মধ্যে একটা সুন্দর নাদুস-নুদুস ছাগল কিনে বাসায় ফেরার যে শান্তি তা তুমি লাখ টাকার গরুতেও পাবে না। সব চেয়ে বড় কথা হল, রাস্তায় ছাগল দেখে সাধারণত কেউ দাম জিজ্ঞেস করে না। তুমি বেঁচে গেলে দাম বলার অহেতুক বিড়ম্বনা থেকে। দেখলে জীবন কত সুন্দর? 

 

 

আর যারা এখনো গরু কিনতে পারোনি, একটু বুদ্ধি খাটাও। গরুর সাথে সেলফি তোলাটাই তো আসল, তাই না? হাটে চলে যাও। সেখানে গিয়ে সব চেয়ে দামি গরুটার সাথে তুলে ফেলো সেলফি। দিয়ে দাও আপলোড। ক্যাপশনে লিখে দাও, ওটা তোমারই গরু। ব্যাস! হয়ে গেলো! ঘাসের সৌন্দর্য বোঝার জন্য কাউকে গরু হতে হয় না। গরুর মতো মন থাকলেই চলে। 

অযথা গরু কেনার মতো ব্যাপারে মন খারাপ করে সুইসাইডাল চিন্তাভাবনা করার দিন আর নেই ব্রো! তোমার একটা পজিটিভ চিন্তাই পারে কোরবানির ঈদটাকে সুন্দর করতে। বি পজিটিভ ম্যান এন্ড উইম্যান। তুমি কি জানো, গরুর রক্তের গ্রুপও B-পজিটিভ? 

গরুর মত হও। দেখো, কত প্রতিকূলতার মাঝেও গরু দাঁড়িয়ে থাকে তোমার ঈদের আনন্দের জন্য। তোমার আনন্দের জন্য এই গরু নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছে। তেমনি তোমাকেও হাসিমুখে থাকতে হবে তোমার বাবা-মা এর আনন্দের জন্য। কারন তুমিও তো তাদের কাছে গরুই। 'গরুর মত কথা বলিস না তো' অথবা 'তুই একটা আস্ত গরু' এরকম কথা মায়ের কাছে কতবার শুনেছো, ভেবে দেখো। দেখবে মনটাই ভালো হয়ে গেছে। 

তাই আর হতাশা নয়। এখনই স্ট্যাটাস দিয়ে দাও, 'আমি পারবো। আমাকে পারতেই হবে।' জীবনের সব সফলতাকে মুখে নিয়ে জাবর কাটতে কাটতে একদিন নেক্সট সফলতাও আসবে। শুধু একটু সময়ের ব্যাপার মাত্র।

৫৪১ পঠিত ... ১৭:২০, আগস্ট ১০, ২০১৯

Top