সেন্টমার্টিন গিয়ে যে ১০টি উপায়ে পরিবেশ নষ্ট করতে পারেন

১৯০০ পঠিত ... ১৫:৩৭, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৮

চলছে সেন্টমার্টিন যাওয়ার ধুম। এ ব্যাপারে গুণীজনেরা বলেছেন, মানুষ তিন প্রকার- যারা সেন্টমার্টিন ঘুরে এসেছে, যারা এখন সেন্টমার্টিনে আর যারা সেন্টমার্টিন যাবে। কিন্তু শুধু কি ঘুরে আসলেই হবে, বাঙালি ঐতিহ্য ধরে রাখতে সে জায়গার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ভারসাম্য নষ্টও তো করতে হবে, নাকি? পরিবেশবিদদের অনুমান, যেভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক ভারসাম্য এবং প্রাণিবৈচিত্র্য, অচিরেই সমুদ্রগর্ভে হারিয়ে যাবে আমাদের প্রিয় সেন্টমার্টিন দ্বীপ। চলুন জেনে নিই, কী উপায়ে আপনি এই হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আরো বাড়িয়ে তুলতে পারেন!

 

১# সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথেই পরিবেশের ক্ষতি করা শুরু করে দিন। শিপে শুধু গাঙচিলকে উড়তে দেখলেই আর ছবি তুললেই হবে না, অনেক অনেক পাউরুটি, চিপসও খাওয়াতে হবে যেন তাদের বংশবিস্তার বাঁধাগ্রস্থ হয়। শুধু এক ব্র্যান্ডের চিপস গাঙচিলের যথেষ্ট ক্ষতি করতে পারবে কিনা এমন কনফিউশন থাকলে মিস্টার টুইস্ট, পটেটো ক্র্যাকার্স এমন কয়েক প্রকারের চিপস নিতে পারেন, যেন কোনোভাবেই বংশবিস্তার না করতে পেরে গাঙচিলেরা ক্রমেই বিলুপ্ত হয়ে যায়। গাঙচিলদের জন্য 'ব্যুফে' টাইপ কোনো অফারও চালু করতে পারেন, এতে বাদ যাবে না একটি গাঙচিলও!

২# আশেপাশে কোনো প্রাণি পেলে তাদের ভয় দেখান। সামুদ্রিক প্রাণিদের বাসায় সাজানোর জন্য খুটিয়ে নিয়ে আসুন।

৩# বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় প্রবালগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুতরাং, এইসব প্রবাল-ছাল সরিয়ে ফেলতে হবে। সেন্টমার্টিনের স্মৃতি রাখার জন্য (যেহেতু শুধু ছবি তোলাও যথেষ্ট নয়!) শুধু ছোট প্রবালগুলো কেন, ট্রাক কিংবা ট্রলার নিয়ে বড় বড় প্রবালগুলোও তুলে আনুন। তাহলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় তা সেন্টমার্টিনসহ পুরো দেশকে বাঁচাতে পারবে না।

৪# আগুন জ্বালিয়ে ক্যাম্পিং করুন। এ ধরনের ক্যাম্পিংয়ের জন্য কাছিমদের ডিম পাড়ার পরিবেশ ইতোমধ্যেই ধ্বংস হয়ে গেছে, তবে যা অবশিষ্ট রয়েছে তাও যেন আর না থাকে।

৫# সেন্টমার্টিনে গিয়ে প্রচুর কেনাকাটা করুন। এতে নতুন নতুন ব্যবসায়ীরা উৎসাহ পেয়ে সেখানে গেড়ে বসবেন। দেখবেন অচিরেই কক্সবাজারের পাশাপাশি সেন্টমার্টিনেও খোলা হয়েছে মেরিন সিটি শপিং কমপ্লেক্সের মতো 'সুবিশাল' শপিং মল! আর বোঝেনই তো, যত বেশি মানুষ তত বেশি দূষণ।

৬# কেয়া বনে গিয়ে ছবি তোলা সেন্টমার্টিন ভ্রমণের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ছবি তোলা শেষ হয়ে গেলে এরপর সম্রাট শাহজাহান স্টাইলে কেয়া গাছের পাতা-টাতা ছিঁড়ে ফেলুন... যেন আপনার ছবিটা ইউনিক হয়, অন্যরা আর ভবিষ্যতে এইসব বনে ছবি না তুলতে পারে। না থাকবে বন, না তোলা হবে ছবি!

৭# চিপসের প্যাকেটগুলো অবশ্যই অনেকদূর হেঁটে ডাস্টবিনে ফেলবেন না। পাশেই তো নাফ নদী আর বঙ্গোপসাগর। এমন স্বচ্ছ, নীল প্রাকৃতিক ডাস্টবিন থাকতে কেনই বা অত কষ্ট করবেন! চিপসের প্যাকেট, কফির প্লাস্টিক কাপসহ অন্যান্য সকল অপচনশীল আবর্জনা সব সমুদ্রে ফেলুন।

৮# সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার পাশাপাশি নিজেই জাল নিয়ে মাছ ধরতে নেমে যান। স্টার ফিশ, সীল মাছ যা পাবেন সব ধরে ফেলবেন। দরকার হলে নিজেই একটি মাছের বাজার দিয়ে দিন।

৯# প্রচুর শব্দ করুন। এমন নিশ্চুপ, নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে গান, হইহুল্লোড় না করলে তো হয়ই না! এতে শব্দ দূষণ যেমন হবে, তেমনই সেন্টমার্টিনের প্রাণিরাও ভয় পাবে।

১০# ধুমপান করে যেখানে সেখানে সিগারেটের ফিল্টার ফেলুন। প্রবালের মধ্যে গুজে নতুন স্থাপত্যও তৈরি করে ফেলতে পারেন।

১৯০০ পঠিত ... ১৫:৩৭, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৮

Top