চলছে বইমেলা। চলছে লেখকদের অটোগ্রাফ ফেস্টিভাল। কোন কোন লেখক অটোগ্রাফ দিতে গিয়ে কলমের কালি শেষ করে ফেলছে। কেউ বা নতুন কলম কিনে রেখেও পাঠকের অভাবে অটোগ্রাফ দিতে পারছে না। তবে বইমেলার বাইরেও এই অটোগ্রাফ ম্যানিয়া ছুঁয়ে গেছে কারওয়ান বাজারের মাছ বিক্রেতা সিরাজকেও। কারওয়ান বাজারে গিয়ে জানা গেছে, মাছের গায়ে অটোগ্রাফ দেয়া ছাড়া মাছ বিক্রি করছেন না তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে সিরাজ মিয়ার অটোগ্রাফসহ মাছ কিনে তার সাথে কথা বলি আমরা। অটোগ্রাফ বিষয়ে সিরাজ মিয়া বলেন, ‘একজন লেখক অটোগ্রাফ দিতে পারলে আমি কেন পারবো না? মাছ বিক্রেতা বলে কি আমি লেখক না? লেখকরা নিজেদের বইকে নিজেদের সন্তান বলে, আমার মাছগুলোও আমার সন্তান। ওরা ছিলো পোনা, আদর যত্ন আর খাবার দিয়ে ওদেরকে মাছ করে তুলছি। বিশ্বাস না হলে ওদের জিজ্ঞেস করেন, ওদের বাবার নাম কী? বলবে সিরাজ।’
সিরাজ মিয়াকে তার বউ আঁছিয়া বানু একটা কলমও গিফট করেছেন। সেই কলম দিয়েই অটোগ্রাফ দিচ্ছেন তিনি। যদিও এই কলম দিয়ে লিখতে গিয়ে সিরাজ মিয়া কিছুটা সমস্যার মুখোমুখী হচ্ছেন। তবু থামছেন না। সিরাজ মিয়া বলেন, ‘কয়েকবার লিখলে তারপর লেখা উঠে। এরপর একটা মার্কার কলম কিনছি। ওইটা দিয়ে দুইবার লিখলে হয়ে যায়। মার্কার কলম দিয়ে অটোগ্রাফ দিলে তা নিয়ে কোন বিতর্ক নেই তো? বিতর্ক থাকলে এটাও চেঞ্জ করবো।’
তবে সিরাজের এমন কাণ্ডে কিছুটা ঝামেলায় পড়েছে সিরাজের দোকানের অন্যান্য কর্মীরা। অনেক ক্রেতা সিরাজ না থাকলে মাছ নিচ্ছে না। তারা বলছেন, স্টলে সিরাজ মিয়া না থাকলে ওনার অটোগ্রাফ পাওয়া যায় না। আর ওনার অটোগ্রাফ ছাড়া মাছ নিলেই সেই মাছে নাকি মাছের স্বাদও পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়া যাচ্ছে মুলার স্বাদ। সিরাজের স্টলের এক কর্মী বলেন, ‘হেয় আমগোরে অটোগ্রাফটা শিখায়া দিলেই তো পারে। আমরাই দিলাম। হের নামতো আমরা লিখতে পারি।’