মার্চেই স্কুল-কলেজ খোলার ঘোষণায় হঠাৎ বেড়ে গেছে ঝাড়ুর বিক্রি

৪৬৭ পঠিত ... ০৩:১৩, মার্চ ০২, ২০২১

করোনাভাইরাস মহামারীর শুরু হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছিল সরকার। এক বছর পর সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দিয়েছে। সচিবালয়ে শনিবার এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানান আগামী ৩০ মার্চ সরকার স্কুল ও কলেজ খুলে দেবে।

march-school-jharu-min

এদিকে এ খবরে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ঝাড়ুর বাজারেও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত বইপত্র পরিষ্কার করতে সবাই এখন ঝাড়ু কিনতে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সুযোগ বুঝে অসাধু ব্যবসায়ীরা ঝাড়ুর দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাজারে স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনতে মাঠে নামতে পারে মোবাইল কোর্ট। বাণিজ্যমন্ত্রী একটি ফেক আইডি থেকে অসৎ ব্যবসায়ীদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, 'যারা সুযোগের অসদ্ব্যবহার করে ঝাড়ুর দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের ঝাড়ুপেটা করা হবে।'

বাংলাদেশের বাজারে আগে সাধারণত পিঁয়াজ, আলু, টমেটো এসবের সিন্ডিকেটের কথা শোনা যেত। এবার নতুন শোনা গেলো ঝাড়ু সিন্ডিকেটের নাম।

পুরান ঢাকায় দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ঝাড়ু বিক্রি করেন হানিফ মিয়া। তিনি eআরকির এই প্রতিবেদককে জানান, ‘ম্যাট্রিক বা ইন্টার পরীক্ষা রেজাল্টের দিন মিষ্টির দোকানে যেমন চাপ পড়ে, এখন আমার দোকানে তেমন চাপ।’ 

ঝাড়ু বিক্রির দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি জানান, এই রকম পরিস্থিতি তিনি কোনোদিন দেখেননি। 

রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান দুই নম্বর মোড়ের পাশে সাধারণত হকারদেরকে বসতে দেয় না পুলিশ। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। মোড়ের চারপাশে ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে ঝাড়ু বিক্রি করছেন অনেকে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় পুলিশকে ভালো অঙ্কের উৎকোচ দিয়ে এখানে ব্যবসা করছেন তারা। সব খরচ বাদ দিয়েও ভালো ব্যবসা হচ্ছে তাদের। 

স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার ঘোষণায় অনেক শিক্ষার্থী আবার পড়ছেন বিব্রতকর অবস্থায়। কেউ কেউ তো ভুলেই গেছেন তিনি কোন শ্রেণীতে পড়তেন কিংবা ক্লাসে তার রোল কত ছিল। অনেকে আবার তন্ন তন্ন করে খুঁজেও বাসায় বইয়ের কোনো হদিস পাচ্ছেন না। 

eআরকির এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় নবম শ্রণীর শিক্ষার্থী আফসারা আঞ্জুমানের। দীর্ঘ অপেক্ষার পর তিনি মনে করতে পারলেন যে তিনি নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। কিন্তু বইয়ের কথা মনে পড়তেই তার মুখখানা শুকিয়ে গেলো। তিনি জানান, মাসখানেক আগে ভুলবশত পুরোনো ও অব্যবহৃত বই মনে করে তিনি তার পাঠ্যবইগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন স্কুল খোলার ঘোষণা আসার পর মনে পড়েছে যে সেগুলো তার নিজেরই বই ছিল। 

নিজের এমন বোকামির জন্য তিনি লজ্জিত বলেও জানালেন। 

তবে সবার মতো বাজার থেকে ঝাড়ু কিনলেও বই মোছা শেষে সেটি লুকিয়ে রাখবেন বলে জানালেন দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আরিফ আদনান। তার এই সিদ্ধান্তের কারণ কি, এমন প্রশ্নের উত্তরে আদনান বলেন, ‘'স্কুল খুলবে মানে পরীক্ষাও হবে। পরীক্ষা হবে মানে রেজাল্টও দেবে। আর রেজাল্ট দিলে আম্মা যদি হাতে ঝাড়ু পায়...’

৪৬৭ পঠিত ... ০৩:১৩, মার্চ ০২, ২০২১

Top