অনেক ঝাকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশের প্রিমিয়ার লীগের উদ্ভোধনী অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানকে নেচে-গেয়ে ভরিয়ে তোলার জন্য ভারত থেকে উড়িয়ে আনা হলো সালমান খান, ক্যাটরিনা কাইফ ও সনু নিগমকে। যদিও আবছাভাবে এক পলক জেমস, মমতাজসহ কয়েকজন বাংলাদেশি শিল্পীকে মঞ্চে দেখা গেছে তবুও পুরো অনুষ্ঠানেই ছিল বলিউডিদের জয়জয়কার। অথচ ইন্ডিয়ান ফ্লেভারের এই অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় ছিলেন দুই বাংলাদেশি। এ ঘটনায় ভারত থেকে উপস্থাপক না আনতে পারার ব্যর্থতায় অনেকেই দায়ী করছেন বিসিবিকে।
এক বালতি দুধের মধ্যে এক ফোঁটা গো-মূত্র যেভাবে পুরো বালতিভর্তি দুধকে নষ্ট করে দেয়, তেমনি বাংলাদেশী উপস্থাপনা পুরো অনুষ্ঠানের মজাটাকেই নষ্ট করে দিয়েছে বলে দাবী অনেকেরই। ‘ভারতে কি ভালো উপস্থাপক নাই?’ এই প্রশ্নটিকে সারাদেশসহ ফেসবুকের দেয়ালে দেয়ালেও প্রতিফলিত হতে দেখা যায়। সালমান খান আর ক্যাটরিনা কাইফের নাচ দেখে বের হয়ে এক দর্শক জানান, ‘ক্যাটের নাচ ভালো লাগছে। ভাইজানের কোমড় দুলানোও! কিন্তু ভাই, পুরো প্রোগ্রামটারে খাইয়া দিছে উপস্থাপনা! তারকাদের ব্যাপারে আগে থেকে জানলেও উপস্থাপক যে বাংলাদেশ থেইকা নিতাছে তা জানতাম না। জানলে মোটেও আসতাম না। পরেরবার বিসিবি যেন উপস্থাপকদের কথাও জানাইয়া দেয়!’
অন্য একজন দর্শক বলেন, স্টেজও ভালো হয় নাই! ইন্ডিয়ার ছোট মোটো অখ্যাত শো-এরও এর চেয়ে সুন্দর স্টেজ হয়! কপিল শর্মা শো-তে সিধুর মতো আমাদের পাপনদার জন্য কোন রাজকীয় সিটও আছিলো না! এইটা মোটেও মানা যায় না। কোন ফিলই আসে নাই ভাই! ‘পাপনদা তো প্রধানমন্ত্রীর সাথে বসেন সবসময়!’ এই দর্শককে আমাদের প্রতিনিধি এই কথা মনে করিয়ে দিলে তিনি বলেন, ‘তাইলে সিধুর ওই চেয়ারসহ সিধুকেই নিয়া আসতে পারতো! ওর হাসিটা বহুত খুবসুরাত!’ অনুষ্ঠান সঞ্চালনে ভাষার ব্যাপারেও কথা বলেন অনেকে।
অন্য এক দর্শক জানান, ‘যেহেতু সব আর্টিস্টই ভারতীয় সেক্ষেত্রে উপস্থাপনাটাও তো হিন্দিতেই করতে পারতো! সালমান, ক্যাটরিনার সাথে ভারত থেকে কিছু দর্শকও ভাড়া করে আনতে পারতো! তাইলে না একটা ইন্টারন্যাশনাল ব্যাপার হইতো!
তবে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক মতামত দেন অন্য এক দর্শক। তিনি খুব আফসোস করে জানান, ‘পুরো অনুষ্ঠানটা ভারতে করলেই সবচেয়ে বেশি ভালো হইতো! ভারতের মাটিতে আমাদের অনুষ্ঠান! ব্যাপারটা বুঝতে পারতেছেন? তাছাড়া সাল্লু ভাই, ক্যাটজি, আর সনুর নিশ্চয়ই খুব কষ্ট হইছে মিরপুর দশ নাম্বারের জাম ঠেইলা স্টেডিয়াম আসতে!’ তিনি আরো বলেন, ‘সবচেয়ে ভালো হয় BPL কে Bharat Premier League নামে IPL এর সাথে মার্জ করে দিলে। তাইলে BPL টা আরো জমবো! আমরাও বিপিএল দেখতে ভারতে যাইতে পারবো। এইসব দেশি উপস্থাপনা আর চিয়ার লিডারও দেখা লাগবে না।‘
এ ব্যাপারে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় eআরকি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, 'আসলে গেস্ট যেহেতু সব ভারতীয়রাই ছিল, তাই আমরা ভাবলাম হোস্টটা অন্তত আমাদের থাক। পরেরবার সেটাও ভারত থেকে আনতে হবে। ইন ফ্যাক্ট, বিসিসিআইকেই আয়োজন করতে বলবো ভাবছি।' এই পর্যায়ে পাশ থেকে কার যেন ফিসফিসানি শোনা যায়, 'এই কে ফোন দিছে রে? ইন্ডিয়া থেকে কপিল শর্মা নাকি? হালায় তো বিপিএলের প্রোগ্রাম হোস্ট করবে এই কথা বইলা সাতদিন ধরে ফোন ধরে না...'