পর্বতারোহী গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর মতিঝিল মডেল স্কুল

৮১৩ পঠিত ... ২২:১১, অক্টোবর ২১, ২০১৯

৯ তলা স্কুল ভবন। কিন্তু নেই কোন লিফট। এক দিন দু-দিন না। দীর্ঘ অর্ধযুগ ধরে মতিঝিল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ৯ তলার এই বিশাল ভবন জয় করে আসছে। খবর: প্রথম আলো।

অভিভাবকদের অভিযোগের জবাবে ভালো না লাগলে স্কুল চেঞ্জ করার কথাও বলেন কর্তৃপক্ষ। স্কুলের আয়, সরকারী অনুদান ও স্কুলের নামে বেসরকারী ব্যাংকে ফিক্সট ডিফোজিট থাকলেও বিল্ডিংয়ে লিফট লাগাতে নারাজ কর্তৃপক্ষ। মানুষ যদিও বলছে কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করে টাকা বাঁচানোর ধান্দায় লিফট করছে না।

স্কুলের কর্তৃপক্ষ তো শিক্ষা নিয়েই কাজ করেন। শিক্ষার্থীদের সুবিধা অসুবিধা কেন তারা বোঝেন না? এমনটা তো হতে পারে না। ঠিক এই জায়গাতেই খটকা লাগে eআরকির টিমের। আর সেজন্য অনুসন্ধানি কাজে লেগে যায় eআরকি টিম।

সরেজমিনে গিয়ে ৯ তলা সিড়ি বেয়ে কোমরে হাত দিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাই কারণ। কর্তৃপক্ষের কথা শুনে আমাদের হাঁপানি বেড়ে গিয়ে শ্রদ্ধায় (৯ তলা হেঁটে ওঠার কারণেও হতে পারে) মাথা নুয়ে আসে। কর্তৃপক্ষ জানান, তারা আসলে শুধু বই আর একাডেমিক পড়ালেখায় আটকে থাকতে চান না। তারা তাদের সব শিক্ষার্থীদের চ্যালেঞ্জিং মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চান। আর তারই একটি পার্ট লিফট না লাগানো!

কর্তৃপক্ষের একজন বলেন, 'শুধু বইতে পড়ে থাকলে হবে না। জয় করতে হবে বিশ্ব। আমরা মূলত আমাদের শিক্ষার্থীদের পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করার জন্য তৈরি করছি। আর তারই প্রাথমিক ধাপ হিসেবেই তাদেরকে দিয়ে প্রতিদিন ৯ তলা বিল্ডিং জয় করাই! এতে শিক্ষার্থীরা যেমন শারীরিকভাবে নিজেদের প্রস্তুত করছে তেমনি প্রস্তুত করছে মানসিকভাবেও। আপনারাই বলেন, ছোট থেকে যদি মানসিক আর শারীরিক শক্তিটা গড়ে না উঠে তাহলে কীভাবে তারা জয় করবে এভারেস্ট? এভারেস্ট কি মুখের কথা!'

জানা গেলো, তাদের মূল টার্গেট মূলত সবচেয়ে কম সময়ে এভারেস্ট জয়ের রেকর্ডটি মতিঝিল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের দখলে আনা। আর সেজন্য আরো কিছুদিন পর শিক্ষার্থীদের প্র‍্যাকটিসে দৌঁড়ে ৯ তলায় উঠার সেশনও যোগ করবে বলে জানান। এভারেস্ট জয় করার এই হাতে-কলমে শিক্ষা প্রক্রিয়ার প্রাক-প্রাথমিক শাখা খুলে সেখানে ৬ বছরের কম বয়সী শিশুদেরও ট্রেনিং চালু করার কথাও জানা তারা।

এদিকে এমন খবর পেয়ে এভারেস্ট পর্বত জয় করা অনেক পর্বতারোহী নিজেদের বাচ্চা কাচ্চাদেরকে এই স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন। উদগ্রীব হয়ে আছে এভারেস্ট জয় করার স্বপ্ন থাকলেও জয় করতে না পারা পর্বতারোহীরাও! অধরা এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিজেদের বাচ্চাদের সাথে সাথে তারাও এই স্কুলে ভর্তি হতে চান।

এমনই একজন আফসোস করতে করতে আমাদের জানান, 'ইশ, আমাগো সময় যদি এমন সিস্টেম থাকতো! বড্ড উপকার হইতো। তবে আশা হারাচ্ছি না। সন্তানের সাথে আমিও ভর্তি হমু। এরপর এখান থেকে টেনিং নিয়ে সন্তানের সাথে একসাথে এই অধরা স্বপ্নকে ধরবো। নতুন করে জোশ পাইতেছি শইল্লে, মাসলে মাসলে!'

বেশ কিছু অভিভাবক মতিঝিল মডেল স্কুল ও কলেজের কর্তৃপক্ষের কাছে সাঁতার, দৌঁড় প্রতিযোগিতা, জিমেন্যাস্টিক, দীর্ঘলম্ফ, উচ্চলম্ফ-এর বিশ্ব রেকর্ডগুলো ভেঙ্গে দেয়ার লক্ষে পরবর্তী প্রজন্মে তৈরি করার জন্য এমন জীবনমুখী ট্রেনিং চালু করার অনুরোধ রাখেন।

৮১৩ পঠিত ... ২২:১১, অক্টোবর ২১, ২০১৯

Top