এসএসসি পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বিশেষ পরামর্শ: কী করবে, কী করবে না

৭২০০ পঠিত ... ২২:৪৮, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৭


এসএসসি জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। এই পরীক্ষার সময় যা মনে চায় তাই করা যাবে না। কঠোরভাবে নিয়ম মেনে চলতে হবে। এই কথাগুলো নিশ্চয়ই নানাজন বলেছে ইতিমধ্যে। কিন্তু কোনটা মানবে আর কোনটা মানবে না সেটা বুঝতে পারছ না। তাই তোমাদের জন্য এগিয়ে এসেছে eআরকি। রইলো কিছু পরামর্শ।


যা যা করবে

১। সর্বদা ফোনে পর্যাপ্ত পরিমান মেগাবাইট রাখার চেষ্টা করবে। কখন কোন যায়গা থেকে কোন সাজেশানের ছবি ডাউনলোড করতে হয় বলা তো যায় না!

২। সামাজিক গণমাধ্যমে সর্বোচ্চ সময় দেয়ার চেষ্টা করবে। ফেসবুক হোয়াটস্যাপ ইত্যাদিতে আসা প্রত্যেকটা ছবি এবং মেসেজই এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ!

৩। পরীক্ষার এই সময়টায় হোয়াটস্যাপ, ফেসবুকে ১০ জন ১৫ জনকে ফরোয়ার্ড করার জন্য নানারকম মেসেজ, স্ক্রিনশট ইত্যাদি পাবে। সেইসব মেসেজ অবশ্যই ফরোয়ার্ড করতে হবে! এইসব মেসেজ আনসিন করে রাখবে না বা এড়িয়ে যাবে না প্লিজ। এসব উপেক্ষা করার কারনে অনেকে এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করে এখন কারওয়ানবাজারে সবজি বেঁচে, কেউবা eআরকিতে লেখালিখি করে।


৪। গার্লফ্রেন্ড যদি ব্যাচমেট হয় তবে তার সাথে সেফ পজিশনে থেকে কথা বল। মনে রাখবে, বোর্ড পরীক্ষা মানেই ব্রেকআপ, ব্রেকআপ মানে ডিপ্রেশন, ডিপ্রেশন মানে কলেজ লাইফ ভালো যাবে না, কলেজ লাইফ ভালো না যাওয়া মানে ভার্সিটি অ্যাডমিশন টেস্ট খারাপ হওয়া, অ্যাডমিশন টেস্ট খারাপ হওয়া মানে আবারও ডিপ্রেশন, ডিপ্রেশন মানে ফেল, ফেল মানে ডিগ্রি নাই, ডিগ্রি না থাকলে কাজ পাবে না, কাজ না থাকলে খেতে পাবে না, না খেলে চেহারা বাজে হয়ে পড়বে, চেহারা বাজে হলে বিয়ে করতে পারবে না, বিয়ে না করলে একলা হয়ে পড়বে, একলা একলা অসুস্থ হয়ে পড়বে, এবং শেষ পর্যন্ত মারা যাবে।

সুতরাং, গার্লফ্রেন্ডের সাথে বোর্ড পরীক্ষার সময় মেপে কথা বল। (এই সাজেশনটি লেখক ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দিয়েছেন, তাই পরীক্ষিত সত্য, হেলা করবে না!)

৫। সিট প্ল্যান দেখে তোমার সামনে পেছনে বসা পরীক্ষার্থীদের খুঁজে বের কর। তাদের চা কফি, ইয়ে মানে যা খেতে চায় তা নিয়মিত খাওয়াও। পরীক্ষার আগে খাওয়াও, পরীক্ষার মাঝখানে খাওয়াও, পরীক্ষার পর খাওয়াও। একদম খাওনের উপরে রাখ। পরীক্ষা চলাকালীন সময় হাতেনাতে ফল পাবে।

৬। বাসার দেয়ালে টিকটিকি আছে কি না পরীক্ষা কর। না থাকলে আমদানি কর। পরীক্ষার আগের রাতে দেখবে, দেয়ালের টিকটিকির দিকে তাকিয়ে থাকতেও কী যে ভালো লাগছে!

 

যা যা করবে না

১। ছেলে পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে একটি উপদেশ, পরীক্ষার এই মৌসুমে সুন্দরী মেয়েদের ফাঁদে পড়বে না। অনেক ভোলাভালা ছেলে এই হরমোনাল রাশের কারণে মহামুল্যবান সাজেশন এবং প্রশ্নপত্র বিলিয়ে দেয়, যা পরবর্তীতে ওই মেয়ের বন্ধুসমাজে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে প্রশ্ন ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় তা রিসেট করা হয়।

২। পরীক্ষার হলে অংক পরীক্ষায় তোমার সহপাঠীদের উত্তর '১৮৯০' আর তোমার উত্তর যদি '০.০০০০৭' আসে তবে একদম ঘাবড়াবে না! অংক ভুলভাল যা-ই করেছ, বন্ধুর প্রাপ্ত উত্তরটি উত্তরের জায়গায় বসিয়ে দাও। উত্তর ভালো যার, সব ভালো তার!

৩। পরীক্ষার হলে যখন দেখবে সবাই ক্যালকুলেটর ব্যবহার করছে, আর তুমি পুরো প্রশ্নপত্র খুঁজে একটাও অংক পাচ্ছো না যেটায় ক্যালকুলেটর লাগে, তখন আস্তে চুপ করে যাও। ভাব কর যে এইসব ছোটখাটো অংকে তোমার ক্যালকুলেটর লাগে না।


৪। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পরীক্ষা সংক্রান্ত বইসহ অন্যান্য যেকোনো বই পড়া থেকে বির‍ত থাক। দেখবে, আগামীকাল যে পরীক্ষা, সে পরীক্ষার বই ছাড়া বাকি যে কোনো বই ভালো লাগছে! কোনোটাই পড়ার দরকার নেই! (আমার এসএসসি পরীক্ষার সময় ইন্টারমিডিয়েট এর ম্যাথ বইটা ভালো লেগেছিলো। নিজের পড়া বাদ দিয়ে সেসময় আমি ইন্টারমিডিয়েট এর সম্পাদ্য নামক চিত্রকর্মদের দিকে কী মুগ্ধনয়নে তাকিয়ে থাকতাম, আহা!)

৫। পরীক্ষার হলে সুন্দরী ম্যাডাম গার্ড পড়লেই ভেবে নিও না তিনি নকল করার সুযোগ দেবেন। যিনি যত সুন্দরী হন তিনি ততটাই কড়া হন। ইহা শতভাগ পরীক্ষিত। তবে সুন্দরী ম্যাডামের সঙ্গে যদি তরুণ বয়সী আরেকটা স্যার থাকেন, তবে ভালো কিছু আশা করা যেতে পারে। ম্যাডামের অ্যাটেনশন পুরো তিন ঘন্টা ওই স্যারই ধরে রাখবেন, তুমি তখন যা মন চায় চালিয়ে যেতে পারবে!


৬। ফেসবুক হোয়াটস্যাপ থেকে কোনোভাবেই বের হবে না। আবার ভুল করেও ইউটিউবে ঢুকবে না। এক ইউটিউবে ঢুকলেই রাত কাবার! সকালে উঠে দেখবে, ইনবক্সে হাজার হাজার প্রশ্ন এসে পড়ে আছে। উত্তর পড়ার সময় কই!

৭। এইসব কী পড়ছ তুমি? এইটা এসএসসি পরীক্ষা, eআরকি নয়। পরীক্ষার সময় অবশ্যই eআরকি জাতীয় ওয়েবসাইটে ঢোকা থেকে বিরত থাক। এই সময়টা ফেসবুকে থাকলে এতক্ষনে চার সেট প্রশ্ন পেয়ে যেতে!

(এই রচনার প্রতিটা উপদেশ শতভাগ পরীক্ষিত! তারপরও যদি জায়গা মতো ক্লিক না করে, দ্রুত ভ্যান চালানো শুরু করো!)

৭২০০ পঠিত ... ২২:৪৮, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৭

Top