হলে থাকার যে ২০টি প্রিয় অভিজ্ঞতা সবাই ঘরে থেকে মিস করছেন

৯৫৯ পঠিত ... ২১:৩৩, জুন ০৫, ২০২০

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ তার আবাসিক হলগুলো। কতই না ঘটনা ঘটে নিত্যদিন হলগুলোর প্রতিটা রুমে! কতই না স্মৃতি! সাধারণত ঘর ছেড়ে হলে থাকা শিক্ষার্থীরা ঘর নিয়ে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। এবার ঘরে ঘরে থাকতে নিশ্চয়ই সবাই মিস করছেন হলজীবনকেই! দেখুন তো, হলজীবনের এই মুহূর্ত কিংবা অভিজ্ঞতাগুলোই মিস করছেন কি না?

১# হলে জন্মদিন পালন নিয়ে থাকে চূড়ান্ত সতর্কতা। বন্ধুরা জন্মদিন ভুলে গেলেই ভালো! না হলে নামকাওয়াস্তে একটা কেক কেটে ট্রিট দাবি করে নান্না কিংবা স্টারে! 

২# অসুস্থ হয়ে আপনার ল্যাবড়াছ্যাবড়া অবস্থা। কিন্তু এটাকেও বন্ধুরা মজার বিষয় বানিয়ে ছাড়বে। তাঁরা বলবে, ‘মাম্মাহ, তোমগো কী কপাল। ভাবী তো বোধহয় এখন সে-ই আদরযত্নে রাখছে। রোগের ছুতায় তো এখন নিয়মিত ভাবীর রান্না খাও বোধহয়। শালার আমরা যে কেন অসুস্থ হই না…

৩# করোনার কারণে অনেকদিন ধরে বন্ধু-বান্ধবের সাথে দেখা নাই। এ নিয়ে নিশ্চয়ই অডিও বা ভিডিও কলে হতাশা চলে। কিন্তু হলে থাকলে ঘটনা অন্যরকম হতো। কোন কারণে বন্ধুদের সাথে টানা কয়েকদিন দেখা না হওয়া মানেই- আপনি রুমে বসে পড়ে ফাটায় ফেলতেছেন! 

৪# আপনি রুমে একা আছেন শুনলেই বন্ধু প্রশ্ন করতো, ‘মামা, এইচডি চলে নাকি?!’

৫# সামনের দুই মাস টিউশনি থাকবে না। আপনি আছেন চিন্তায়। হলের বন্ধু এসে বলবে, তাই নাকি ব্রো? সামনের দুই মাস তো ধুমায়া পড়তে পারবি!

৬# কোন সমস্যা কিংবা জরুরি কারণে দুই দিন হলের বাইরে ছিলেন। সমস্যা কিংবা জরুরি কারণ আপনার হলের বন্ধুর কাছে কোন ইস্যু না। জরুরি ইস্যু হলো, আপনার দুই দিনের মিলের টাকা বেঁচে গেছে!    

৭# জুনিয়র ভাবে হলের করিডোরে চলার পথে যেন সিনিয়র সামনে না পড়ে। ওই জুনিয়র আবার সিনিয়র হয়ে ভাবে, চলতি পথে যেন দুই একজন জুনিয়র থাকে... সালাম নিতে ভালোই লাগে!

৮# হলে সবচেয়ে বেশি পরিচয় সংকটে ভোগে কাপড় ধোওয়ার বালতি। এত হাত বদল হয় যে বুঝতেই পারে না তার আসল মালিক কে! 

৯# আয়না সবচেয়ে ঝকঝকে থাকে মেয়েদের হলে। ছেলেদের লিফটের আয়নায় কাজ হয়ে যায়! 

১০# হলের ছেলেমেয়েদের কিছু 'মিডনাইট সিনড্রোম' আছে। তাঁরা মাঝরাতে দল বেঁধে রাস্তায় গান গাইতে বেরিয়ে পড়ে। আকাশ পানে চেয়ে হলের মাঠে শুয়ে থাকে। মাঝরাতে চায়ের কাপের টুংটাং শব্দ কতই না মধুর ছিল!   

১১# হলে শিক্ষার্থী পরিচালিত খাবার মেস থাকে। কিছু ছেলেপেলে আছে যারা মেস খোলা মাত্রই ঢুকে যাবে! এক মিনিটও দেরি করে না।   

১২# রিডিং রুমে টানা দুই দিন যাওয়া মানে,পরিচিত মহলে আপনি রিডিং রুমের প্রেসিডেন্ট! কেমন আছে আপনাদের প্রেসিডেন্ট বন্ধুরা? নাকি আপনিই প্রেসিডেন্ট?    

১৩# হলে যে বন্ধু/সিনিয়র/জুনিয়র ভালো রান্না পারে তাকে সবাই 'স্যার' ডাকে! ঘরে বসে নিশ্চয়ই সেই রাধুনী স্যারেরা বহুদিন স্যার ডাক শোনেনি!

১৪# বড় কোন খেলা থাকলে টিভি রুমে খুব ভিড় হয়। যথারীতি চেয়ার দখলের জন্য অনেকেই আগে গিয়ে বসে থাকে। জুনিয়ররা সতর্ক থাকে দাঁড়িয়ে থাকা সিনিয়রের সাথে যেন কোনভাবে চোখাচোখি না হয়ে যায়। ভদ্রতার খাতিরে সীট ছেড়ে দেয়া লাগে যদি! 

১৫# হলের ব্যস্ততম জায়গা বাথরুম। ভোরে দেখবেন কেউ গোসল করছে, ঘুমোতে যাওয়ার আগেও দেখবেন কেউ না কেউ গোসল করছে! 

১৬# ছেলেদের হল সারারাত খোলা থাকে। মেয়েদের হল একটা নির্দিষ্ট সময়ে বন্ধ হয়। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায়, ওই সময়ে ছেলেদের হলও স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়!   

১৭# ছেলেদের হলে 'বিশেষ ছোট প্যান্ট' ছাড়া সবকিছুই শেয়ার হয়! অভ্যাসবশত বাসায় কোন অঘটন ঘটাননি তো?!   

১৮# মেয়েদের হলে 'নতুন প্রেম' একটি বিশেষ ঘটনা। 'ব্রেকাপ' তার চেয়ে বড় বিশেষ ঘটনা! দুইটাতেই বান্ধবীরা ট্রিট দাবি করে! 

১৯# রুমের একজনের জন্মদিন হলেই রাতেরবেলা সবাই তার রুমে চলে এসে শুরু হওয়া আড্ডা আর চিল, সেসব কি ভোলা যায়!

২০# মেয়েদের হলের গেস্টরুম আদতেই একটা বৈঠকখানা। বন্ধুরা যায়। বান্ধবীরা গেস্টরুমে আসে। কত শত আলাপ। কত শত দুষ্টুমি…

 

(একটু বেশি স্মৃতিকাতরও আবার হবেন না যেন! এই দুঃসময় শেষে আবারও সব হবে! গল্পের ঝাঁপি খুলে যাবে… বন্ধুত্ব-প্রেম-আড্ডা, সব হবে। পড়ালেখা হবে (ধুরু!)। তবে তার আগে সুস্থ থাকতে হবে, বেঁচে থাকতে হবে।)

৯৫৯ পঠিত ... ২১:৩৩, জুন ০৫, ২০২০

Top