পাবলিক পোস্টের কমেন্ট বক্সে কাঁঠাল পাতা বিক্রি করে এক মাসেই কোটিপতি

১৪৫৯ পঠিত ... ১২:১০, আগস্ট ২৫, ২০২১

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, মাত্র এক মাসের মধ্যেই শুন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন গাজীপুরের মকবুল হোসেন। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া দুই বিঘা জমিতে কাঁঠাল পাতা চাষ করে এমন সাফল্য পেয়েছেন কৃষক। কিন্তু কী করে সম্ভব হলো?
শুরুতে মকবুলের কাঁঠাল বাগান ছিলো। সেই বাগানে ছিলো পাকা পাকা হলুদ সব কাঠাল। কিন্তু গত সিজনে করোনার কারণে সঠিক দাম ও বিক্রি কোনোটাই হয়নি। দ্রুত পঁচনশীল কাঁঠাল সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের অভাবে বিরাট লোকসানের মুখে পড়েন মকবুল। উৎপাদন খরচও উঠে আসেনি তার। এমন অবস্থায় মকবুল হোসেন দিশেহারা হয়ে খুঁজতে থাকেন বিকল্প আয়ের আইডিয়া।

Kathal-pata

ফেসবুকের কমেন্টবক্সে ঘুরতে ঘুরতেই মুকবুলের মাথায় ভাবনাটি আসে- 'কাঁঠাল গেছে কিন্তু কাঁঠাল পাতা তো যায়নি! এই দিয়েই আমাকে কিছু করতে হবে।' পরীক্ষামূলক কার্যক্রম হিসেবে একজন বিশেষ নায়িকার প্রোফাইল পিকচারের কমেন্ট বক্সে পাঁচ কেজি পাতা নিয়ে গিয়েছিলো। এক মিনিটও লাগেনি পাঁচ কেজি পাতা শেষ হতে।

দিশা পেলেন মকবুল। ফেসবুকের কমেন্টবক্সে ক্রমবর্ধমান ছাগলের খাবার সরবরাহকারী হিসেবে গড়ে তোলেন নিজেকে। নায়িকাদের কমেন্টবক্স থেকে ব্যবসা বাড়িয়ে অনলাইন পোর্টালের কমেন্টবক্সে পাতা সরবরাহ করতে থাকেন তিনি৷ পাশের ভারতেও পাতা সরবরাহের অর্ডার পান এই কৃষক।

ধীরে ধীরে একটা বাগান থেকে পাঁচটা বাগানের মালিক হয়েছেন তিনি। বাড়ির উঠোন, আঙ্গিনাতেও করেছেন কাঁঠাল পাতার চাষ। এলাকার ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা 'জীবনের লক্ষ্য' রচনায় ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার এর পরিবর্তে মকবুলের মত আদর্শ কাঁঠাল পাতা খামারি হতে চাচ্ছে।

এমন অভিনব ব্যবসা নিয়ে কথা বলতে গেলে মকবুল জানায়, 'পাবলিক পোস্টের কমেন্ট বক্সে গালিগালাজ, আজাইরা কমেন্ট কিংবা ঘৃণা ছড়ালেও এরা তো আমাদের মতই মানুষ৷ পছন্দের খাবার তো তাদেরও খেতে মন চায়৷ কিন্তু সর্বক্ষণ কমেন্ট করার চাপে ফুসরত পায় না৷ সেজন্যই মানবিকতার টানে আমাকে এগিয়ে আসতেই হলো। প্রাণিসেবার পাশাপাশি নিজেও স্বাবলম্বী হলাম।'

এদিকে বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এদের সরলতার সুযোগ নিয়ে কাঁঠাল পাতার পরিবর্তে কদম পাতা দিচ্ছেন বলেও জানান মকবুল। মকবুল তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, 'বোকা, সরল হলেও ওদের ঠকানোর অধিকার আপনাদের নেই। ভালো হয়ে যান।'

১৪৫৯ পঠিত ... ১২:১০, আগস্ট ২৫, ২০২১

Top