কৌতূহলী এক আপুর প্রশ্নের জবাব দিতে দাঁড়িয়ে পড়লেন এক দায়িত্বশীল ভাই

১৭৫০ পঠিত ... ১৯:৪১, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯

সরকার থেকে শুরু করে ব্রেকাপ করে চলে যাওয়া প্রেমিকা-প্রেমিকা; এদেশে কেউই কারো কৌতূহল মেটায় না। হচ্ছেটা কী, জানতে চেয়ে গলা ফাঁটালেও সেই ফাঁটা গলাকে অগ্রাহ্য করে কর্তৃপক্ষ নিজের কাজ করে যায়, আর মুখ ঘুরিয়ে হনহনিয়ে চলে যায় প্রেমিক-প্রেমিকারা! হচ্ছে টা কী; জানতে চাওয়া এই আমরা কেবল কৌতূহলের স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়েই থাকি।

তবে পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে দেশে। কৌতূহল মেটানোর সেই জাতীয় দায় ঘাড়ে (নাকি অন্য কোথাও?) নিয়েই এখন দাঁড়িয়ে পড়ছে অনেক দায়িত্বশীল ভাইয়েরা।

হ্যাঁ, সম্প্রতি এমনই এক ভাইয়ের দেখা পাওয়া গেছে বাংলাদেশেরই এক অজানা রাস্তায়। তার সামনে পোস্টার, পোস্টারে চারপাশের নানান সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ‘হচ্ছেটা কি?’ জানতে চাচ্ছেন জিজ্ঞাসু মননের কৌতূহলী এক আপু। আর সেই ছবি দেখেই সটাং দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন এই দায়িত্বশীল ভাইটি।

বিস্তারিত জানতে আমরা প্রথমে সুজুকির শোরুমে ছুটে যাই। তবে আমাদের কৌতূহল মেটাতে তারা সফল হননি। স্রোতের বিপরীতে হাঁটা এই মহান ভাইটিকে খুঁজে পাওয়ার জন্য অবশেষে ফেসবুকের দেয়ালে পোস্ট করেছিলাম আমরা। সেখানেই নিজেকে মহান এই কৌতূহল নিবারক দাবি করে আমাদেরকে মেসেজ দেন তিনি। তাকে অভিনন্দন জানিয়ে এমন কাজের অনুপ্রেরণা জানতে চাইলে ভাইটি তার করুণ অতীতের গল্প শোনান আমাদের, 'ছোটবেলা থেকেই কেউ কোন প্রশ্নের উত্তর দেয়নি আমাকে! আমার বয়স যখন ২০, তখনও পর্যন্ত প্রায়ই সকালে কোন কথা বার্তা ছাড়াই মা ঘুম থেকে তুলে পুকুরে নিয়ে ফালাইতো। এমন কি কনকনে শীতেও। কখনো কখনো চিকন গাছের ডাল দিয়ে পিটাইতো! এমন অমানবিকতার কারণ সম্পর্কে অনেক জানতে চেয়েছিলাম। কেউ কিছুই বলেনি! শুধু বলেছে, তুই বিছানা নষ্ট করিস। অথচ আমার বিছানা ঠিকই থাকতো! উল্টো প্রতিরাতেই বিছানা ধোয়ার জন্য বিশেষ পানিও আমি প্রডিউস করতাম।'

এমন হৃদয়বিদারক অতীতের কথা বলতে গিয়ে ভাইটি কিছুটা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। সাথে আমরাও। আরো একটু আবেগতাড়িত হতে আমরা ভাইটির কাছে পরবর্তী সুখের জীবন সম্পর্কে জানতে চাই! আরো বেশি দুঃখ ভারাক্রান্ত সুরে তিনি বলেন, 'আর সুখ! আমার গা থেকে নাকি পাঁঠার গন্ধ আসে কইয়া প্রেমিকা চইলা গেছিলো। কয়েকদিন আগেই ‘বুড়া বয়সেও বিছানা নষ্ট করা তোর মতো বুড়া খাচ্চরের সাথে থাকবো না’ বলে বউটাও চলে গেছে। তাদের কাছে কতবার জানতে চেয়েছি ‘হচ্ছেটা কি? যাচ্ছো কেন? কোন উত্তর দেয়নি।'

ভারি মন নিয়ে বলতে থাকলেন ভাইটি, 'সেই থেকেই আমি প্রতিজ্ঞা করেছি, বেঁচে থাকতে আর কোন মানুষকেই কৌতূহলী মন নিয়ে মরে যেতে দিবো না! যেখানে দেখবো কৌতূহলের স্থির দেয়াল সেখানেই দাঁড়িয়ে যাবো। জ্ঞানপানি দিয়ে মিটিয়ে যাবো দেয়ালের থুক্কু মানুষের কৌতূহল। তাছাড়া জীবন থেকে পাওয়া কষ্টে জর্জরিত হতে হতে আমার ডায়বেটিস হয়ে গেছে। এমনিতেও যেখানে সেখানে দাঁড়ানো লাগে! ইয়ে মানে বিশেষ কাজে আরকি...'

এ পর্যন্ত বলার পর তিনি 'ভাই একটু উঠি, প্রেশার আসছে, হালকা হয়ে আসি' বলে উঠে গেলে আমাদের প্রতিবেদকও আর সময় নষ্ট না করে হালকা মুতে শুয়ে পড়েন।

১৭৫০ পঠিত ... ১৯:৪১, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯

Top