সার্জিও ইনগ্রাভেল একজন জার্মান ইলাস্ট্রেটর, যিনি ট্রেডিশনাল আঁকাআঁকির সাথে খুব চমৎকার করে ডিজিটাল মাধ্যমকে মিশিয়েছেন। শুধু যে আঁকার মাধ্যমেই বৈচিত্র্য ঘটিয়েছেন তা নয়, আঁকাআঁকির বিষয়টাও যথেষ্ট বৈচিত্র্যপূর্ণ। যাপনের নানান সংকটকে তিনি তুলে ধরেছেন দৈনন্দিন জীবনে আমাদের অনুষঙ্গ হয়ে যাওয়া বিষয়গুলোকে দিয়ে। স্মার্টফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেট থেকে শুরু করে ম্যাচের কাঠি, স্ট্র, ওয়াইনের গ্লাস কিছুই যেন বাদ যায় নি।
এমন ব্যতিক্রমী আর্টে নিজেকে নিয়ে আসার ব্যাপারে সার্জিও ইনগ্রাভেল স্মরণ করেন ২০১০ সালে সিডনি থেকে বেইজিং-এ তার পাঁচ মাসের দীর্ঘ সফরের কথা। পুরো শহরে অনেকগুলো বড় শহরে ঘুরেছিলেন। সেখানে দেশ বিদেশের অসাধারণ সব, পেইন্টার, কার্টুনিস্ট আর ডিজাইনারের সাথে তার দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়। ট্যুর শেষে জার্মানি ফিরে তিনি ভাবতে লাগলেন নিজের জন্য নতুন এক স্টাইলের কথা।
এর আগে তিনি ওয়াটার কালার পোট্রেট আর ড্রয়িং-ই করতেন। কিন্তু তিনি খুঁজছিলেন এমন এক স্টাইল, যা দিয়ে দ্রুত এবং স্পষ্ট মনের ভাবনাটা এঁকে দেয়া যায়। সেই ভাবনা থেকেই যাপিত জীবনের অনুপ্রেরণায় শুরু করেন নতুন সিরিজ ‘মাইন্ডশটস।’ অনেকটা যেন মন পিস্তল হয়ে গুলি করছে। আঁকাআঁকিগুলো দেখলে কাছাকাছি রকমের অনুভূতি পেতেই পারেন।
আইডিয়া নিয়ে সার্জিও বলেন ‘কাজের সময়, কথা বলতে বলতে, কিংবা সিনেমা দেখার সময় অথবা বন্ধুদের সাথে আড্ডায়, এমনকি ডাক্তারের ওয়েটিং রুমে বোরড হতে হতে যেসব ভাবনা আমার মাথায় উঁকি দেয়, সেসবকেই আমি মাইন্ডশট বলি। কিছু আমাদের সমাজের সমালোচনা করে, কিছু একেবারেই হাস্যকর।’ নতুন স্টাইলে তার আঁকা প্রথম ছবিটি নিয়ে বলেন ‘ঐ ট্যুরে কালো ধোঁয়ায় ঢাকা বেশ অনেকগুলো বড় বড় শহরে আমার ঘোরা হয়েছিল। সেখান থেকেই প্রথম ‘মাইন্ডশট’ আঁকার অনুপ্রেরণা পাই। একটি পাখির ছবি যে কি না অক্সিজেন মাস্ক পরে আছে।’
পরবর্তীতে মাইন্ডশট-এর কম্পাইলেশন নিয়ে একটি বইও প্রকাশ করেন সার্জিও। নিজস্ব ব্লগে এবং ইন্সটাগ্রামে সার্জিওর মাইন্ডশট এবং আঁকাআঁকির সব আপডেট পাওয়া যাবে। সার্জিওর আঁকা ৪০টি মাইন্ডশট আজ থাকছে eআরকির পাঠকদের জন্য।