যৌন হয়রানির প্রতিবাদে উত্যক্তকারীর সঙ্গে সেলফি তুলে ইন্সটাগ্রামে

২৩২৩ পঠিত ... ১২:৫৮, অক্টোবর ০৮, ২০১৭

মেয়ে দেখে শিস দেয়া, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করা, 'এই সুন্দরী কই যাও' কিংবা 'আমার সাথে রুমে যাবা?' জাতীয় নানা ধরণের আপত্তিকর বা কুরুচিকর কথাবার্তা বলা, এমনকি পোশাকে বা গায়ে হাত দেয়া আমাদের দেশের মতো অন্যান্য অনেক দেশেই একটি বড় সমস্যা। সোজা বাংলায় যেটাকে আমরা যৌন হয়রানি বলেই জানি। কিন্তু ক’টা মেয়ে উত্যক্তকারীকে গিয়ে বলবে, 'আসেন ভাই একটা সেলফি তুলি'? শুনতে অসম্ভব মনে হলেও তেমনটাই করেছেন নেদারল্যান্ড-এর আমস্টারডামবাসী ছাত্রী নোয়া ইয়ন্সমা।

 

২০ বছর বয়সী নোয়া বাসা থেকে বের হলেই পড়েন বিড়ম্বনায়। শুধু শিস বা নোংরা কথাই না, শুনতে হয় শারীরিক সম্পর্ক করার প্রস্তাবও। এসব মারাত্মক যৌন হয়রানিতে হয়রান হতে হতে নোয়া বুঝে উঠতে পারছিলো না কী করবে। কাউকে বললে বা কারো সাহায্য নিলে হীতে বিপরীত হতে পারে, তাই শেষমেশ নোয়া বেছে নেয় এক অদ্ভুত পদ্ধতি। উত্যক্তকারীদের সঙ্গে সেলফি তুলে নোয়া তা শেয়ার করতে থাকে ছবি শেয়ার করার সামাজিক ওয়েবসাইট ইনস্টাগ্রামে। আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যতজন লোক তাকে উত্যক্ত করেছে, প্রত্যেকের সঙ্গে নোয়া তুলেছে সেলফি, উত্যক্তকারী কী বলেছে আ ক্যাপশনে লিখে পোস্ট করেছে ইন্সটাগ্রামে। প্রতিটা পোস্ট যেন এভাবে হয়ে গেছে একেকটা যৌন লাঞ্ছনার গল্প। প্রতিটি ছবিতেই তার নিজের ক্লান্ত, বেদনাদায়ক অভিব্যক্তি এবং উত্যক্তকারীর হাস্যোজ্জ্বল চেহারা বিশ্বকে দেখাতে চেয়েছে যৌন হয়রানি ব্যাপারটা সারা বিশ্বের নারীদের সাথে কত ঘনঘন ঘটে এবং তা কতটা ক্লান্তিকর, নির্মম। নোয়া জানতো না যৌন হয়রানির স্বীকার হলে কী করতে হয়। তাই উত্যক্তকারী দের সাথে সেলফি তোলাটা ছিলো নোয়ার একটা পরীক্ষামাত্র। নোয়া এরই মধ্যে @dearcatcallers (https://www.instagram.com/dearcatcallers) নামে নিজের ইন্সটাগ্রাম পেজে সারা বিশ্বের নারীরা যেন উত্যক্তকারীর সঙ্গে সেলফি তুলে পাঠিয়ে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় সেই আহ্বান জানিয়েছে। নোয়া চায় নারীরা যেন যৌন হয়রানির স্বীকার হয়ে চুপটি হয়ে বসে না থেকে সম্মিলিত ভাবে সংগ্রাম করে।

নোয়ার এই প্রকল্পে সৃষ্টি হওয়া সচেতনতার কারণেই হোক আর অন্য যে কারণেই হোক, ২০১৮ সালের জানুয়ারির এক তারিখ থেকে নেদারল্যান্ড এ যৌন হয়রানি, আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ হবে। অপরাধীদের জরিমানা হবে ১৯০-২২০ ইউরো। আর নোয়ার এই সাহসী প্রকল্প যেহেতু ভাইরাল হয়েছে সেহেতু আশা করা যায় অন্যান্য আরো দেশগুলো এই আইন অনুসরণ করবে।

উত্যক্তকারীদের সঙ্গে তোলা নোয়ার কয়েকটি সেলফি এবং ক্যাপশনগুলো থেকে ঘটনাগুলো কতটা কুরুচিকর তার এক ঝলক দেখে নিতে পারেন-

২৩২৩ পঠিত ... ১২:৫৮, অক্টোবর ০৮, ২০১৭

Top