Woke প্রজন্মের খারিজি পদ্ধতির আলাপ

১৩২ পঠিত ... ১৬:২২, জুন ০৫, ২০২৪

22 (7)

পশ্চিমে  Woke প্রজন্ম ঘুম থেকে জাগা তারুণ্য বলেই পরিচিত, যারা গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, পরিবেশ ও বৈষম্য সম্পর্কে সচেতন। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাম্প্রতিক ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভ এরকম এওকেনিং বলে প্রশংসিত। কিন্তু শ্রীখণ্ডে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্ক, স্টাডি-সার্কেল, বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনার সঙ্গে কখনও সম্পৃক্ত ছিল না, ক্লাসরুমের আলোচনায় অংশ নেয়নি; অথচ ২০১০ সালে ইন্টারনেটে ব্লগ ও ফেসবুক বিস্তৃতি পেলে যারা ঘুম থেকে জেগে সক্রিয় হয়ে ওঠে ইন্টেলেকচুয়াল হতে; তাদের বদ্ধমূল ধারণা, পৃথিবীর সব বুদ্ধিবৃত্তিক আলাপের সূচনা হয়েছে তাদের মাধ্যমে; এদেরকে শ্রীখণ্ড স্টাইলের Woke প্রজন্ম বলা যায়।

এখন আমরা দেখবো পশ্চিমের কিছু মানুষ শ্রীখণ্ডে জন্মালে কীভাবে স্থানীয় Woke'রা তাদেরকে ক্যানসেল বা খারিজ করে দিত।

জাস্টিন ট্রুডো: ট্রুডো এতো যে ভালো মাইনষের ভং ধইরা আছে; দিমু অর বেডরুমের ব্যাবাক কাহিনী ফাঁস কইরা। স্ত্রীকে ঘরে থুইয়া একবার সে যখন আমগো হাওরে হাউজবোটে আম্রিকান বান্ধবী নিয়া ঘুরতে আসছিলো; তহনই বুইঝা গেছি ব্যাটা লুইস। গে-লেসবিয়ানগো সাপোর্ট দিয়া পোগোতিচিল হইলেও আমরা অর চরিত্র খারাপ বইলা অর সেকুলার সাট্টিফিকেট কাইড়া নিলাম।

নোম চমস্কি: যেইদিন হেই বুইড়া ব্যাডা চাটগাঁ-র মেহের ফ্যাশানের জুম মিটিং-এ আসছে; সেইদিনই বুইঝা গেছি লুকটা ভাদাইম্যা; অর খাইয়া কাজ নাই। কেউ কুনোখানে ডাকে না নিশ্চয়। আমগো সন্দ হয়, হের মুসলিম ব্রাদারহুডের লগে কুনো কানেকশন আছে; ছাগু একখান। ঐহানে পিএইচডি করতাছে বশির ভাই; সে কইছে, ছাত্ররা চমস্কির ক্লাসে যাইতে মজা পায়না; তার নলেজ অবসিলিট হইয়া গেছে।

বিল গেটস: বান্ধবীরে নিয়া বাগান বাড়িতে গিয়া ধরা খাইছে বউয়ের কাছে, ঠিক হইছে। লুলরে লুল। এই যে অরে দেহেন আফ্রিকায় গিয়া চ্যারিটি করতেছে, এইগুলি আসলে হোয়াইট সুপ্রিমেসির নাটক। সে আসলে আফ্রিকায় দাদন ব্যবসা করতে গেছে। ক্ষুদ্র ঋণের টেকাটুকা আদায়ের সময় ঠিকই কৃষ্ণাঙ্গের ছাপড়ার টিন খুইলা নিবে। আত্মহত্যা করবে অনেকে ঋণ শোধ করতে না পাইরা। আমৃকায় একখান ছুপ্পু ভাই থাকলে ঠিকই বিল গেটসের চুরিদারি ধইরা চোর দমন কমিশনরে ফাইল রেডি কইরা দিতে পারতো। *দক তারে শুনানির জন্য ডাইকা খাঁচায় ভরতে পারতো।

ইলন মাস্ক: লুকটা পাগল, আমি তো বুঝি না লোকে কেন তারে এতো গোণায় ধরে। আমি তারে পুছি না। বিয়া করছে কয়খান দেখছেননি। এই যে টুইটার কিইনা এক্স বানাইছে, সে ইচ্ছামতো লোক ছাঁটাই করছে। উগান্ডার লোক খাইতে পায় না, আম্রিকার হোমলেসরা সস্তা মদ খাইয়া হতাশায় উবুত হইয়া থাকে; আর সে স্পেসশিপ বানায় মঙ্গলে যাওয়ার জন্য। আমার বদরুল ভাই নাসায় গিয়া দেইখা আসছে; ঐখানকার বিজ্ঞানীরা কিছুই জানে না। তারা ভোদাই ইলনরে বোকা বানাইয়া টেকা নিতেছে আর মঙ্গলে যাওয়ার আশা দেখাইতেছে। এই যে এক্সে দুইডা মত প্রকাশ কইরা খুব তারে ডেমোক্রেটিক ভাবতেছেন; অর চাইতে অটোক্রেটিক আর দুইজন নাই।

মার্ক জুকারবার্গ: মার্কের বাপে অরে টেকা দিছিলো; হয় বার্গারের দোকান খোল; অথবা ইউনিভার্সিটিতে পড়। সে যোগ দিলো গোয়েন্দা সংস্থার প্রজেক্টে। ফেসবুক হইতাছে আপনেগো পারসোনাল ইনফরমেশন কালেকশনের জায়গা। সাবধান, অহনই টেলিগ্রামে আইসা পড়েন। কী পোলারে বাঘে খাইলো, যেইদিন সে চাইনিজ মাইয়ারে বিয়া করছে, ঐদিনই আমৃকার সার্বভৌমত্ব কম্প্রোমাইজড হইছে। পেন্টাগন বুঝতেছে না; যেইদিন প্যান্টটা গন হইয়া যাইবো; ঐদিন বুঝবো, ততদিনে দেরি হইয়া যাইবো। ফেসবুকে লিখতেছি কইয়া জুকির বেড রুমের গল্প কইতে পারতেছি না; ইনবক্সে আসেন ফুসুর ফাসুর করি।

খ্রিস্টিনা আমানপোর: হেতে আবার সাংবাদিক হইলো ক্যামতে; ইরাক যুদ্ধের সময় মার্কিন মেরিনের ট্যাংকে শুইয়া যে এমবেডেড জার্নালিজম করে, আমি তারে আর্মি ব্যাকড এডিটর মনে করি। হেতে কী ইউনিভার্সিটি সংবাদদাতা আছিলো। আমরা তো সেইখান থিকা শুরু করছি। খ্রিস্টিনা হইলো সি আইএ-এর পেইড এজেন্ট। মোসাদের কাছেও যে টেকাটুকা লয়; এইডা তো বোঝাই যায়। আবার দেখছেন্নি আমগো ডেমোক্রেসি শিখায়। হু নোজ লন্ডনে গিয়া খাম্বা তারেকের কাছ থিকা টেকাটুকা লইছে কিনা। কোন মুখে সে মোদির ভাইয়ের সমালোচনা করে; নিজেগো স্কিন হেডগো কি চোখে পড়ে না।

ঋষি সুনাক: হেই ব্যাডা নিজে ভালো ইউনিভার্সিটিতে পড়ছে, বড় লোকের মাইয়া বিয়া করছে, বরিস জনসনরে ব্যাক স্ট্যাব কইরা প্রাইম মিনিস্টার হইছে। অহন কয়, সবাই ইউনিভার্সিটিতে যাওয়ার দরকার নাই, অন্য কাম করো। সে আসলে কামলা প্রোডিউস করতে চায়; ড্রেন সাফ করার লোক চায়। দিছে তো বৃটেনের অর্থনীতিরে শেষ কইরা। বড় ইউনিভার্সিটিতে পইড়া গ্রাজুয়েশনের সময় বাপ-মায়ের লগে দাঁড়াইয়া ছবি না তুললে কী সমাজে সম্মান থাকে নাকি! ম্যানুয়াল লেবার দিবো ক্যান ভালো ছাত্রেরা; তারা গরমের মইদ্দ্যে কোট পইরা বিসিএস (বৃটিশ সিভিল সার্ভিস) হইবো; নাইলে ব্যাংকার হইবো; বাড়ি-গাড়ির মডগেজ শোধ কইরা গলফ খেইলা সাতগ্রামে সুনাম ছড়াইবো। আর ঋষি আসছে তাগো কামলা বানাইতে। মাই ফুট।

ইউভাল নোয়াহ হারারি: যেইদিন হারারি ছলে বলে ইজরায়েলের পক্ষে জাস্টিফিকেশন দিছে; হেইদিন বুঝছি, লেঞ্জা ইজ ভেরি ডিফিকাল্ট টু হাইড। তার বই পড়া বাদ দিয়া দিছি। সে নেতানিয়াহুর গোয়েবলস হইয়া উঠবো। তার সুন্দর সুন্দর কথা শুইনা ক্যান জানি সন্দ হইতো; হ্যাতে বাইরে যা দেখায়; ভেতরে তা নয়। জায়নিস্ট কুনহানকার। তার উচিত আমগো থিকা শিখা; কী কইরা ব্যালেন্স কইরা কথা কইতে হয়, সাপও মরবে কিন্তু লাঠিও ভাঙ্গবে না। একই লগে বজরং দল আর হেফাজতরে দুই কান্ধে নিয়া দেখোনা আমরা কী সুন্দর চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বানাইছি। ব্যাটা হারারি, হাইরা যাওয়াই যার কাম।

ইমানুয়েল ম্যাখোঁ: নেহাত ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ আইসা নেত্রীর দোয়া চাইছে কইয়া; তারে কিছু কইনা। তাও তলে তলে ব্যাটা এয়ারবাস বেচার ধান্দা করতেছে। দেখছেননি সে এক বুড়িরে বিয়া করছে; যেই পোলা স্কুলে তার শিক্ষিকার প্রেমে পড়ে আর বড় হইয়া তারেই বিয়া করে; সে কত ডেঞ্জারাস হইতে পারে! অরে নিয়া বহুত আশা আছিলো, মুসলিম ছাগুগো বাইর কইরা দিবে ফ্রান্স থিকা! কিন্তু হইলো আর কোথায়! ফ্রান্স প্রবাসী জগন্নাথ দাদা বলতেছিলো, ভোট ব্যাংকের কথা চিন্তা কইরা সে পিছাইয়া আসছে। এইরকম স্পাইনলেস লোক দিয়া কিছু কী হইবো!

খ্রিস্টোফার নোলান: ব্যাডায় গাঞ্জা খাইয়া মুভি বানায়; আগা মাথা কিছু নাই। ইনসেপশন দেইখা মনে হইলো অযথা আঁতলামি করতেছে। ওপেন হাইমার মুভিতে খেয়াল করছেন কী সে একটা ভিলেনরে কী কইরা হিরো বানাইলো। না পারতে হিরোশিমা-নাগাসাকির ঘটনা সামান্য উল্লেখ করছে। মনে কয় নোলান সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ারের যুদ্ধাপরাধীর নাতি। আমগো লুকজনরে লাগাই দিছি, তার হাঁড়ির খবর নিয়া আসতে। নোলান কুনো পদেরই না; তাই ফিল্ম মেকিং ছাইড়া দিয়া তার গাঞ্জা বেচা উচিত।

এইভাবে ফেসবুকের পাঞ্চিং ব্যগে সবাইকে খারিজ করে; স্বৈরাচারের বেলুনটাকে ফুলে উঠতে দিয়ে তাকে নিরাপদ তন্দ্রার বালিশ বানিয়ে ‘দুনিয়ার কেউ কিচ্ছু জানেনা, জানি শুধু আমি আর আমার সারিন্দারা’ এমন  ভীষণ আত্মতৃপ্তিতে ঘুমিয়ে পড়ে শ্রীখণ্ড।

১৩২ পঠিত ... ১৬:২২, জুন ০৫, ২০২৪

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top