বন কেটে সাফারি পার্ক ও ১০টি কৌতুক

৬৯৭ পঠিত ... ১৪:৫০, অক্টোবর ১১, ২০২৩

Koutuk (1)

মৌলভীবাজারের জুড়ী এলাকার সংরক্ষিত বন লাঠিটিলায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সাফারি পার্ক নির্মাণ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সংরক্ষিত বনকে এতটাই গুরুত্ব দেয়া হয় যে, সেখানে স্থাপনা নির্মাণ তো অনেক পরের বিষয়, প্রবেশ করতেও বন বিভাগের অনুমতি লাগে। পরিবেশ আইন ভেঙে বন ও পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হবে এই সাফারি পার্ক।

কৌতুক নাম্বার ১: বন কেটে সাফারি পার্ক বানানোর এই পরিকল্পনাটি হাতে নিয়েছে স্বয়ং বন বিভাগ।

কৌতুক নাম্বার ২: বন কেটে সাফারি পার্ক নির্মাণের প্রকল্পের এলাকাটি একজন মন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা। সেই মন্ত্রী হলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী।

কৌতুক নাম্বার ৩: বন কেটে সাফারি পার্কের এই প্রকল্পটিতে হেলিপ্যাড নির্মাণের প্রস্তাবও রাখা হয়েছে।

কৌতুক নাম্বার ৪: প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। আইন না মানা, বাড়তি ব্যয়সহ নানান অসঙ্গতির বিষয় জানিয়ে ৩ সেপ্টেম্বর প্রকল্পটি অনুমোদন না করে ফেরত পাঠায়। এ বিষয়ে এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাফারি পার্ক নির্মাণ বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে যেসব প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তার ব্যাখ্যা আমরা তৈরি করেছি। ১ অক্টোবর তা পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে তা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কাছে চূড়ান্ত করে পাঠানো হবে।’ এই কর্মকর্তা হচ্ছেন, বন অধিদপ্তরের উন্নয়ন পরিকল্পনা ইউনিটের দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রধান বন সংরক্ষক মরিয়ম আক্তার।

কৌতুক নাম্বার ৫: পরিবেশবাদীরা বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। তবে এই আপত্তি আমলে নিতে চান না সরকারের এক মন্ত্রী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘‘লাঠিটিলা বনের বড় অংশের ভেতরে স্থানীয় অনেক ব্যক্তি দখল করে বসবাস করছেন। দখলদারদের সরিয়ে বনটিকে যাতে আরও ভালোমতো রক্ষণাবেক্ষণ করা যায়, সে জন্য সাফারি পার্কটি নির্মাণ করতে চাচ্ছি।’ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে যেসব আপত্তি তোলা হয়েছে, তার উত্তর দেওয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ওই পার্ক হলে স্থানীয় এলাকার উন্নতি হবে।‘ আর এই মন্ত্রী হলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাবউদ্দিন।

কৌতুক নাম্বার ৬: প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা সূত্রে জানা গেছে, পরিকল্পনা কমিশন বলেছে, সাফারি পার্ক নির্মাণ প্রকল্পটি ‘কমলা’ শ্রেণির। এ ধরনের প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র লাগে। তবে বন বিভাগ বলছে, প্রকল্পটি সবুজ শ্রেণির। তাই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র লাগবে না।

কৌতুক নাম্বার ৭: বন কেটে সাফারি পার্ক বানানোর এই প্রকল্পের আওতায় ৩০ কোটি টাকার বন্য প্রাণী কিনতে চায় বন বিভাগ।

কৌতুক নাম্বার ৮: বন কেটে সাফারি পার্ক বানানোর এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ১৭১ জন জনবল চেয়েছে বন বিভাগ। এ জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা। প্রকল্পের পরামর্শক বাবদ ১৫ কোটি ও নকশা তদারকির জন্য প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

কৌতুক নাম্বার ৯: প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এমন প্রস্তাব রাখা হয়েছে প্রকল্পটিতে।

কৌতুক নাম্বার ১০: বন কেটে সাফারি পার্ক বানানোর এই প্রকল্পের আওতায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘স্কাই ওয়াক’বানানোর প্রস্তাব দিয়েছে বন বিভাগ। স্কাই ওয়াক হচ্ছে কাচের তৈরি লিফট ও সিঁড়ি। কাচের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে পর্যটকেরা নিচে বন্য প্রাণী দেখবেন।

৬৯৭ পঠিত ... ১৪:৫০, অক্টোবর ১১, ২০২৩

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top