লেখা: আশিকুর রহমান রুপম
টিউশনি করাতাম একটা। বেতন ৮ হাজার। তবে স্টুডেন্ট এতো গ্যাপ দিতো যে, দুই মাসে পূর্ণ হত এক মাস। মানে দুইমাস পার হলে পেতাম ৮ হাজার টাকা।
একদিন পলাশীর মার্কেটে যেয়ে দেখি পড়ার টাইমে সে আমার কাছে না এসে জিএফকে বারবিকিউ সাব খাওয়াচ্ছে। টিস্যু দিয়ে মুখ মুছায় দিচ্ছে। এতো ভালোবাসা দেখে থাকতে পারি নাই। টোনাটুনির বিল দিয়া আসছি। পরের ক্লাসে ছাত্র এসে লজ্জিত হয়ে বলে ‘আমার পাশের বিল্ডিংয়ে থাকে স্যার। একটু ঘুরাইতে নিয়ে আসছিলাম।‘
এর দুইমাস পর সে হাওয়া। খোঁজখবর নাই আর। একদিন কোথাথেকে হলে এক ভদ্রলোকের আগমন। জানতে পারলাম তিনি স্টুডেন্টের বাবা। লোকটা বললো, ‘স্যার, আমি আপনাকে কত কষ্ট করে মাসে ১৫ হাজার টাকা দেই!’ শুনে আমি তো অবাক। কোথায় ১৫ আর কোথায় ৮?
এবার স্ক্যাম ফাঁস হল। ওনার স্ত্রী ছেলের নাম করে নিতো ১৫ হাজার টাকা। এখান থেকে ১২ হাজার টাকা দেয়া হত ছাত্রের বড় ভাইকে। সেই বড় ভাই পড়তো ঢাকা কলেজে, সেই সাথে ছিলো ছাত্রের লোকাল গার্জিয়ান। সে ২ রেখে ১০ দিত আমার ছাত্রকে। আর আমার গুণধর ছাত্র সেই ১০ থেকে আমাকে দিত মাসিক ৮ হাজার টাকা। যেহেতু সে অনেক গ্যাপ দিতো; তার দুই মাসে একমাস হয়; আমার পিছে মাসে যেতো ৪ হাজার টাকা। ওর লাভ ৬ হাজার টাকা।
সামারি:
প্রোজেক্ট কস্ট: ১৫ হাজার
আন্টির কমিশন: ৩ হাজার
বড় ছেলের: ২ হাজার
ছোট ছেলের: ৬ হাজার
কন্ট্রাক্টর (অধম শিক্ষক তথা আমি) : ৪ হাজার টাকা।
আর তোমরা আশা করো, এই দেশে মেগা প্রোজেক্টে দুর্নীতি হবে না!
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন