ঢাকা ও ঢাকার হুঁকা

৮১ পঠিত ... ১৭:২৮, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩

ঢাকা-ও-ঢাকার-হুঁকা

আগের ঢাকায় হুঁকার নল বানানোর ব্যবসা যেমন রমরমা ছিল তেমনি লাভজনক ছিল। ঢাকা শহরে প্রায় একশ পরিবার ছিল যাদের একমাত্র কাজ হুঁকার নল বানানো।

পূর্ববঙ্গের তিন-চতুর্থাংশ লোক যে, ‘নৈচা' ব্যবহার করে তা সরাসরি আসে সিলেট থেকে। নৈচাবন্দরাও সিলেটের লোক। ধনী লোকেরা সাধারণত হুঁকায় যে নল ব্যবহার করেন তা বানানো হয় আবলুশ কাঠে ।

হুঁকার নল বিভিন্ন রকম, যেটা সবচেয়ে বেশি নজরে পড়ে সেটা হলো প্যাঁচানো। দেড় প্যাঁচ দিয়ে যেটা বানানো সেটাকে বলে দেড়-খাম। অনেক প্যাঁচ যেটাতে সেটা হলো, সত্তর-খাম। আর মাঝখানে যেটার জোড়া থাকে সেটা হলো, কোনাদার।

একসময় বিশ্বের বহু দেশ থেকে মানুষজন জীবন বদলানোর আশায় ঢাকায় আসত । কারণও ছিল, মসলিন, অর্থলগ্নি, লবণ-গাঁজা-চামড়ার ব্যবসায় করে তারা রাতারাতি জমিদার বনে যান । ১৮৩৮ সালে আদমশুমারিতে প্রাপ্ত ঢাকা শহরের পেশাজীবীদের তালিকা থেকে অন্যান্য পেশার সঙ্গে কাঠকয়লা-হুঁকার গোলা বিক্রেতা ও নৈচাবন্দ তৈরির কারিগরদের প্রমাণ পাওয়া যায়।

ঢাকার মহল্লাগুলো পেশার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। ঢাকার বিভিন্ন এলাকার নাম সুপ্রাচীন ঢাকারই ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সযত্নে বহন করে চলছে। তাদেরই একটি টিকাটুলী। নৈচাকর আর টিকাওয়ালা দুটি পেশাই হুঁকার সঙ্গে জড়িত। এক সময় হুঁকা টানার বেশ চল ছিল বাংলা মুলুকে। আর ঢাকার এই নৈচাবন্দটোলা আর টিকাটুলী ছিল হুঁকিখ্যাত।

ঢাকায় হুঁকার নল বা নৈচা প্রস্তুত কারিগররা পরিচিত ছিল নৈচাবন্দি নামে। ঢাকায় হুঁকার ব্যাপক ব্যবহার ছিল। শহরের প্রায় সব শ্রেণিই হুঁকায় আসক্ত ছিল। বিভিন্ন ধরনের হুঁকার জন্য আকর্ষণীয় ও নানা আকার-আকৃতির নৈচা তৈরি হতো ঢাকায়।

আস্তে আস্তে বিড়ি-সিগারেটের আধিক্যের ফলে হুঁকার ব্যবহার কমতে থাকে। নৈচা তৈরি শিল্পের বিলুপ্তি ঘটে।

তবে এখন নৈচা কারিগরদের বিলুপ্তি ঘটলেও, হুঁকা নবরূপে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । ছনের ঘরের ছলিমদ্দিনের হুঁকার টান এখন জাতে উঠেছেক। গুলশান-বনানীতে অভিজাত মানুষ শান্তির টান দেয় সিসা নাম নিয়ে ছলিমদ্দিনের হুঁকার নব সংস্করণে।

৮১ পঠিত ... ১৭:২৮, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top