আমাদের উপমহাদেশে এই যুগে এসেও মেয়েসন্তান জন্ম নেওয়াটা খুব একটা ভালো চোখে দেখা হয় না। অনেক পরিবারে মেয়ে সন্তান জন্ম নেওয়ার পর তাদের বোঝা হিসেবে গণ্য করা হয়। এমনকি পাশের দেশ ভারতে মেয়ে জন্ম নেওয়ার পর তাদের জ্যান্ত কবর দেওয়ার কথাও শোনা গিয়েছে বেশ কয়েকবার। তবে এসব ঘটনার পুরোপুরি বিপরীতে গিয়ে ব্যতিক্রমী এক ঘটনা ঘটিয়েছেন ভারতের রাজস্থান রাজ্যের পিপলান্ত্রি গ্রামের মানুষেরা। এই গ্রামে কোনো মেয়েসন্তানের জন্ম হলে তার জন্ম উপলক্ষে ১১১টি গাছের চারা লাগিয়ে স্বাগত জানানো হয় তাকে।
বিস্ময়কর এবং দারুণ এই কাজটি শুরু করেছিলেন এই গ্রামেরই সাবেক গ্রাম প্রধান শ্যামসুন্দর পিলাউলি। তার নিজের মেয়ে অল্প বয়সে মৃত্যুবরণ করলে তার স্মরণে গাছ লাগানো শুরু করেন শ্যামসুন্দর এবং এরপর এটিকে রীতিমতো প্রথাতে পরিণত করে ফেলেন পুরো গ্রামের জন্য। শ্যামসুন্দর এখন আর গ্রামপ্রধান না থাকলেও এখনও তার এই রীতিটিকে মেনে চলছেন গ্রামবাসীরা। কোনো মেয়েসন্তান জন্ম নিলেই পুরো গ্রামের লোক একত্রিত হয়ে গাছের চারা লাগান। এমনকি কিছুটা বড় হওয়ার পর এই গ্রামের মেয়েরা এই গাছগুলোকেই রাখি পরিয়ে পালন করে রাখি দিবস।
এখনকার সময়ে শহরে থাকা মেয়েদের প্রতি হওয়া অসংখ্য অসমতা এবং বৈষম্যের এই যুগে রাজস্থানের এই প্রত্যন্ত গ্রামের স্বল্প শিক্ষিত মানুষদের এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। তাদের দেখে আমরাও আশায় দিন গুনি, এমন দিন একদিন নিশ্চিত আসবেই যেদিন মেয়ে সন্তানকে ঘরে বোঝা নয় আশীর্বাদ হিসেবে ভাববে প্রতিটি পরিবার।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন