তাইয়ুব উল্লাহ
মসজিদে নামাজ শেষে মোনাজাতে সহজে আমার কান্না আসে না। শেষবার কান্না আসছিল প্রায় ৮ বছর আগে, দাদিমার মৃত্যুর পরে। তাও আবেগে।
কিন্তু আজ জুমার নামাজের পর, ইমাম সাহেব যখন মোনাজাত ধরলেন। সবাই হাউমাউ করে কান্না শুরু করেছে। চোখের পানি ধরে রাখা কঠিন ছিল।
মৃতের বাড়ির মতো সবার কান্না যেন মনের ভেতর থেকে মোচড় দিয়ে উঠে। এতো আতঙ্কে দ্বীপবাসীকে কখনও দেখিনি।
শেষ বয়সে এসে মুরব্বিরা যেভাবে মোনাজাতে বিলাপ করছেন। সত্যিই আতঙ্কিত হবার মতো ঘটনা।
সমুদ্রের মাঝখানে যাদের জন্ম ও বসবাস, প্রাকৃতিক ঝড়-ঝঞ্ঝা যাদের নিত্যসঙ্গী্ প্রকৃতির সাথে সংগ্রাম করে যাদের জীবন চলা, তারাও আজ ভয়ে কাবু হয়ে গেছে।
দ্বীপের মানুষের মনে ভয় ঢুকেছে 'সিত্রাংকের' সময় থেকে। সামান্য ঘূর্ণিঝড়ের সময় যেভাবে জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল। বড় ঘূর্ণিঝড় হলে তা যে আরো ভয়াবহ হবে সেটাই সবার ধারণা।
গত তিনদিন ধরে ট্রলার, স্পিডবোট করে হাজারের উপর মানুষ জন্মভূমি সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ চলে গেছে। যারা যেতে পারে নাই বা যায়নি তারা যথেষ্ট আতঙ্কে আছে সেটা বুঝলাম জুমার পর মোনাজাতে।
আতঙ্কিত হবার অন্যতম কারণ। ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য গতিপথ সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও আশেপাশের এলাকা। কিন্তু দ্বীপে পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র নেই। নেই টেকসই বেড়িবাঁধ।
প্রাকৃতিক রক্ষাকবচ পাথরের বাঁধ নড়েবড়ে হয়েছে ১৯৯১ ও ১৯৯৪ সালের ঘূর্ণিঝড়ে। আর ভাঙনে বিলিন হয়ে গেছে বালিয়াড়ি ও কেয়াবন। অবিবেচকের মতো কাটা হয়েছে গাছ। অনিয়ন্ত্রিত তৈরি হয়েছে স্থাপনা। সবমিলিয়ে সেন্টমার্টিন এখন 'আতঙ্কের জনপদ!'
দোয়া আর প্রার্থনা ছাড়া এখন আর কারও করার কিছু নেই!
মহান আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুক।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন