যেভাবে আমি বিয়েতে মাংস খেলাম

৮২৪ পঠিত ... ১৬:১৬, মার্চ ৩০, ২০২৩

Mangsho (1)

লেখা: মেহেদী হাসান পাটোয়ারী

বিয়ে খাওয়ার মাঝখানে খবর এসেছে বর পালিয়ে গেছে! চারিদিকে তুলকালাম কাণ্ড। এইদিকে আমার প্লেটে মাংস কম পড়েছে। চারিদিকে চেয়েও মাংস দেয়ার মতো কাউকে পেলাম না। অবশেষে অনেক উঁকিঝুঁকির পর দেখি কন্যারে ঘিরে সবাই দাঁড়িয়ে আছে। প্লেট হাতে নিয়ে বাবুর্চি টাইপের এক লোকরে বললাম, ‘ভাইসাব গরুর মাংসের হাঁড়ি কোথায়?’ সে আমার দিকে তাকিয়ে কর্কশ স্বরে বলে উঠলো, ‘ছেলে উধাও হয়ে গেছে আর আপনি খাবারের পিছনে এখনো পড়ে আছেন?’

বুঝলাম না, ছেলে গেছে তো কী হইছে? আমারে দাওয়াত দেয়া হইছে আমি খেতে এসেছি। এইদিকে কন্যা চিৎকার করে বলছে, ‘আমি বিয়ে না করে উঠবো না এক্ষুনি আমাকে বিয়ে দিতে হবে।‘ আমিও প্লেট হাতে নিয়ে বললাম, ‘হক কথা! বারবার কন্যা সাজা ভালো লক্ষণ না। আজই বিয়ে হওয়া উচিত।‘ দেখলাম দুই-তিনজন সহমত জানিয়ে মাথা নাড়া দিলো।

কন্যা আবার বলে উঠলো, ‘এই মুহুর্তে আমার বিয়ে না হলে আমি গলায় দড়ি দেবো।‘ আমি মুরগির রানে কামড় দিয়ে বললাম, ‘দেয়াই উচিৎ, এভাবে অপমান মেনে নেয়া যায় না।‘ এবারও কয়েকজন পাব্লিক মাথা নেড়ে বললো, ‘ঠিক ঠিক।‘

কন্যা কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো, ‘আব্বা আমি কিন্তু এক কথা দুইবার বলবো না। তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা করেন নয়তো অঘটন ঘটে যাবে।‘ মাংসের শেষ হাড্ডিতে কামড় দিয়ে বললাম, ‘দ্রুত ব্যবস্থা না হলে ভাংচুর হবে।‘ এবার সবাই মিলে আমার দিকে ঘুরে তাকালো। কন্যার বাপ আমার হাত ধরে বললো, ‘করো কী?’ আমি বললাম, ‘কিছু করি না, মাংসের হাঁড়িটা কোথায় বলতে পারেন?’ সে টাইট করে হাত চেপে বললো, ‘টাকা দুই লাখ দিবো ব্যবসা করবা আর এক্ষুনি আমার মেয়েকে বিয়ে করবা।‘ আশেপাশের সবাই বললো, ‘ঠিক ঠিক বিয়ে করা উচিত।‘

আমি ‘দুইলাখ কেন দশলাখ দিলেও বিয়ে করবো না’ বলতে গেছিলাম, কিন্তু সবার চোখের দিকে তাকিয়ে ভিতরের কথা ভিতরে রয়ে গেছে। হবু শ্বশুর আব্বা টেনে চেয়ারে বসিয়ে বললেন, ‘এই জামাইরে মাংস দিয়া যাও।‘

এ কী মুসিবতে পড়লাম! আমি কি এভাবে মাংস খেতে চেয়েছিলাম?

৮২৪ পঠিত ... ১৬:১৬, মার্চ ৩০, ২০২৩

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top