ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের খুনের পর থেকে বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কয়েকদিন আগে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের রাতের আঁধারে বহিরাগত রাজনৈতিক কর্মীদের নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। এই ঘটনা নিয়ে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের ডাক দেয়। এই আলোচনায় নতুন করে আরও একটি আলোচনা উঠেছে, বুয়েটে কি আসলেই সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি দরকার আছে কি না! eআরকিও ভেবে দেখেছে, বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতির উপযোগীতা।
১#
গেস্টরুম কালচার ছাড়া একটা বিশ্ববিদ্যালয় যে দেশে কল্পনাই করা যায় না, সে দেশের সেরা একটি বিদ্যাপিঠ কীভাবে গেস্টরুম বিহীন থাকে? হাজার বছরের ঐতিহ্য সমৃদ্ধ এই গেস্টরুম কালচার ফিরিয়ে আনার জন্য বুয়েটে অবশ্যই সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি দরকার আছে।
২#
ছাত্ররাজনীতি ছাড়া শিক্ষার্থীরা হল পাবে কী করে! হল তো দেয় প্রিয় অভিভাবকেরা। যদি ছাত্ররাজনীতি না থাকে, তাহলে তো আদু ভাইরাও সিট দখল করতে পারবে না। আবার অন্য কাউকেও সিট দেওয়া হবে না। জনসংখ্যাবহুল এই দেশে এভাবে হলগুলো খালি রাখা উচিত না। অবিলম্বে প্রিয় অভিভাবকদের দুয়েকটি করে ভিআইপি রুম, এবং বাকিদের মধ্যে কয়েকটি গণরুম বিলি করার জন্য হলেও ছাত্ররাজনীতি প্রচণ্ডভাবে দরকার।
৩#
ছাত্ররাজনীতি ছাড়া বুয়েটের শিক্ষার্থীরা চাঁদাবাজি আর টেন্ডারের ভাগ পাবে কী করে! কেবল দলীয় প্রশাসন এই ভাগ নিয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ বঞ্চিত হবে। শিক্ষার্থীরা বাইক কেনার টাকা পাবে না। ফলে ওরা তেল কিনবে না। দেশীয় অর্থনীতি মন্দার মুখে পড়বে। এই সংকট থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে আনা।
৪#
বুয়েট শান্ত ও সঠিকভাবে চলতেছে। বাংলাদেশের একটা বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে এমন চলে? গেস্টরুম থেকে যদি প্রতিরাতে চিৎকার না আসে, তাহলে সেটি আবার কেমন বিশ্ববিদ্যালয়? একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগ থাকবে, গণরুম থাকবে, ম্যানার শেখানোর নামে গালিগালাজ থাকবে—তবেই না সেটি একটি পরিপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় হবে। এসব কারণে হলেও বুয়েটে ছাত্রনীতির দরকার আছে।
৫#
এখানে ছাত্ররা ল্যাব করছে, ক্লাস করছে, আড্ডা দিচ্ছে, বন্ধুরা মিলে দেশ-অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করছে, কনসার্ট হচ্ছে, শিল্প-সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করছে—একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন অধপতন তো মেনে নেয়া যায় না। অথচ আজ এখানে ছাত্ররাজনীতি থাকলে বুয়েটের সকল ছেলেমেয়েদেরকে মিছিলে নেয়া যেত, বড়ভাইকে ফুল দিতে দেয়া অনুষ্ঠানে নেয়া যেত। ছাত্ররাজনীতি ছাড়া তো এইসব সম্ভব না।
৬#
সেই কবে আবরার ফাহাদ নিয়ে বুয়েট আলোচনায় এসেছে, এরপর তো আর বুয়েট আলোচনায় নেই। প্রতিবছর একটা করে আবরার ফাহাদের ঘটনার দরকার আছে। এজন্য হলেও বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতির দরকার আছে।