ঠান্ডা গোশত

৪৪ পঠিত ... ১৭:৩২, জানুয়ারি ২৫, ২০২৪

419989379_400772895841131_3881094375365905126_n

 

সাদাত হাসান মান্টো
ভাষান্তর: হাসান ফেরদৌস

ইশের সিং ঘরে ঢুকতে না ঢুকতেই তড়াক করে বিছানা ছেড়ে লাফিয়ে উঠল কালবন্ত কাউর। তীক্ষ চোখে তাকে একবার দেখে দরজায় খিল এঁটে দিল সে। সময় মাঝরাত পেরিয়ে গেছে, সারা শহরে নেমে এসেছে এক অদ্ভুত নীরবতা।

কালবন্ত কাউর বিছানার ওপর যোগাসনের মতো হাঁটু গেড়ে বসে। ভেতরে ভেতরে ভয়ে একশা ইশের সিং হাতে কৃপাণ নিয়ে তার সামনে দাঁড়িয়ে। কোনো কথাবার্তা ছাড়া নিঃশব্দে কয়েক মুহূর্ত কেটে গেল। এই সুমসাম নীরবতায় বিরক্ত হয়ে কালবন্ত বিছানার একধারে তার পা দুখানি নাচানো শুরু করে।

তারপরও ইশের সিং টুঁ শব্দটিও উচ্চারণ করে না।

কালবন্ত দেখতে বড়সড়, তার নিতম্ব প্রশস্ত, বক্ষ পিনোন্নত, চোখ জোড়া তীক্ষ, আর কিঞ্চিত্ ছাইরঙা ঠোঁট দুটি কামরসে টসটস। তার চিবুক দেখেই ঠাহর করা যায় এ মেয়ে জাঁহাবাজ।

মাথার পাগড়ি কিঞ্চিত্ আলগা করে ইশের সিং তখনো ঘরের এক কোনায় দাঁড়িয়ে। হাতে যে ছুরিটা ধরা, সেটি থেকে থেকে কাঁপছিল। দেহের গড়ন দেখে বোঝা যায়, কালবন্ত কাউরের জন্য এমন এক শক্তপোক্ত পুরুষ মানুষই দরকার।

কালবন্তই প্রথমে নীরবতা ভঙ্গ করে, কিন্তু শুধু যে শব্দ দুটি সে উচ্চারণ করতে পারল তা হলো, ‘ইশের লক্ষ্মীসোনা’। ইশের কালবন্তের দিকে চোখ তুলে তাকাল, কিন্তু তার চোখের আগুন সহ্য করতে না পেরে চোখ সরিয়ে নিল।

‘ইশের,’ প্রায় চেঁচিয়ে ওঠে কালবন্ত, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে সামলে নেয় সে। ‘এই কয় দিন ছিলে কোথায়?’

‘জানি না,’ নিজের শুকনো ঠোঁটের ওপর জিহ্বা একবার বুলিয়ে নিয়ে জবাব দেয় ইশের।

‘জানি না, এ আবার কেমন উত্তর?’ ক্রুদ্ধস্বরে কালবন্ত জিজ্ঞেস করে।

হাতে ধরা কৃপাণখানা মাটিতে ফেলে বিছানায় এলিয়ে পড়ে ইশের। দেখে মনে হয় অনেক দিন ধরে সে যেন অসুস্থ। তার দিকে তাকিয়ে কালবন্তের করুণা হলো।

‘সোনা, কী হয়েছে?’ ইশের সিংয়ের কপালে হাত ছুঁয়ে আবেগঘন স্বরে প্রশ্ন করে কালবন্ত।

ইশের এতক্ষণ ছাদের দিকে তাকিয়ে ছিল। এবার কালবন্তের দিকে তাকিয়ে নরম করে তার মুখের ওপর হাত বুলাল, বলল, ‘কালবন্ত’। তার গলার স্বরে ছিল প্রবল বেদনার সুর। শক্ত করে জাপটে ধরে ইশেরের ঠোঁট কামড়ে ধরে কালবন্ত, ‘কী, সোনা, কী হয়েছে?’

মাথার পাগড়ি খুলে কালবন্তের দিকে খুব অসহায়ভাবে তাকায় ইশের সিং। তার প্রশস্ত নিতম্বে মৃদু আঘাত করে স্বগতোক্তি করে, ‘আস্ত পাগলি’!

মাথা ঝাড়া দিতেই ইশেরের ঝাঁকড়া চুল বেরিয়ে পড়ে। কালবন্ত তার সে চুলে হাত বুলাতে বুলাতে জিজ্ঞেস করে, ‘সোনা, এই কয় দিন ছিলে কোথায়?’

‘দাদিমার বাড়ি,’ কালবন্তের স্তন দুই হাতের মুঠোয় ঘষতে ঘষতে জবাব দেয় ইশের। ‘ধর্মগুরুর কসম, তোর মতো মেয়ে মানুষ আমি জীবনে দেখিনি।’ আহ্লাদির মতো ঝটকা টানে ইশেরের হাত সরিয়ে কালবন্ত জিজ্ঞেস করে, ‘তার আগে আমার গা ছুঁয়ে বলো, তুমি ছিলে কোথায়। কী, শহরে গিয়েছিলে, ঠিক না?’

‘না,’ নিজের চুলে গিঁট দিতে দিতে বলে ইশের।

‘মিথ্যুক, তুমি শহরে গিয়েছিলে, সেখানে লুটপাট করে টাকা-পয়সা এনেছিলে, আর এখন মিছে কথা বলছ,’ বিরক্ত হয়ে বলে কালবন্ত।

‘এ কথা যদি মিথ্যা হয়, তো আমি নিজের বাপের সন্তান না, আমি জারজ।’

কয়েক মুহূর্ত চুপ করে থাকে কালবন্ত, তারপর চেঁচিয়ে ওঠে, ‘কিন্তু সে রাতে তোমার হলো কী, আমি তো কিছুতেই বুঝতে পারছি না। আমার সঙ্গে বেশ তো শুয়েছিলে, বললে লুট করে আনা সব গয়না গায়ে দিয়ে সাজতে। কত চুমুটুমু খেলে। তারপর কী হলো কে জানে, হঠাত্ উঠে জামা-কাপড় পরে তুমি বাইরে চলে গেলে।’

সে কথা বলা মাত্রই ইশের সিং যেন কেমন ফ্যাকাসে হয়ে গেল। তা দেখে কালাবন্ত বলে ওঠে, ‘কী, চমকালে কেন? ধর্মগুরুর কসম, একটা কিছু গড়বড় নিশ্চয় হয়েছে।’

‘কসম, কিছু হয়নি, কোনো গড়বড় না।’ প্রাণহীন শুকনো গলায় বলে ইশের।

কালবন্তের সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। প্রতিটি শব্দ মেপে মেপে সে বলে, ‘ইশের, হয়েছেটা কী তোমার? আট দিন আগের সে মানুষ তো তুমি নও।’

কেউ যেন তাকে আঘাত করেছে, এমনভাবে তড়াক করে উঠে পড়ে ইশের। কালবন্তকে শক্তভাবে ধরে, তার সারা শরীরের ওপর হাত বোলাতে বোলাতে বলে, ‘আরে না, আমি সেই আগের মতোই আছি। তোকে আমি এমন আছড়ে-পাছড়ে ধরব যে তোর হাড়মাস সব গরম হয়ে উঠবে।’

কোনো বাধা দেয় না কালবন্ত, কিন্তু ফের সেই কথাই তোলে, ‘সে রাতে তোমার হয়েছিল কী?’

‘দাদিমার জ্বর এসেছিল।’

‘আবার মিথ্যা কথা?’

‘আরে না, ঠিক ঠিক বলছি।’

‘মিথ্যা বলো তো আমার এই শরীরের কসম।’

হাত দিয়ে কালবন্তের ঘাড় পেঁচিয়ে ধরে ইশের, তারপর খুব শক্তভাবে চুমু খায় তার ঠোঁটে। ইশেরের গোঁফের চুল কালবন্তের নাকে ঢুকে গেলে সে হাঁচি দিয়ে ওঠে। তাতে দুজনেই হেসে ওঠে।

গা থেকে জ্যাকেট খুলে রাখে ইশের। কালবন্তের দিকে লোলুপ চোখে তাকিয়ে বলে, ‘আয়, তাস খেলা যাক।’

কালবন্তের ঠোঁট ভিজে ওঠে। চোখ পাকিয়ে বলে, ‘ভাগ হারামি’!

কালবন্তের নিতম্বে চিমটি কাটে ইশের। সরে বসে বিষণ্ন গলায় কালবন্ত বলে, ‘আহ্, লাগে।’

ইশের আরও কাছে এসে কালবন্তের ঠোঁটে ঠোঁট ভিজায়, খুট করে কামড় বসায়। যেন আগুনের নিচে মোমবাতি, এভাবে গলে পড়ে কালবন্ত। গায়ের জামা ছুড়ে ফেলে দিয়ে ইশের বলে, ‘আয়, তাস বাটা যাক।’

কালবন্তের ঠোঁট থরথর করে কেঁপে ওঠে। ইশের এক এক করে তার গায়ের পোশাক খুলে নামায়, যেমন কসাই বকরি জবাইয়ের পর তার গা থেকে কেটে কেটে চামড়া খুলে নেয়। কালবন্তের উলঙ্গ দেহের দিকে নির্লজ্জের মতো তাকায় ইশের, তার হাতে খামচি দিয়ে বলে, ‘গুরুর নামে কসম খেয়ে বলছি, তোর মতো মাল আর হয় না।’

খামচির ফলে বাহুতে লালচে দাগ ধরে যায় কালবন্তের, সে দিকে তাকিয়ে সে বলে, ‘তুমি, তুমি বড় নিষ্ঠুর’।

তার ঘন, কাল গোঁফের নিচে মুচকি হাসে ইশের, বলে, ‘এবার তাহলে নিষ্ঠুর খেল শুরু হোক।’

নিষ্ঠুর খেলা শুরু হয় কালবন্তের ঠোঁটে চুমু খেয়ে, তার কানের লতিতে কামড় বসিয়ে। কালবন্তের স্তন ঘষতে থাকে ইশের, তার নিতম্ব খুবলে লাল করে ফেলে, দুই গাল চুমোয় ভরিয়ে দেয়, তার স্তনের বোঁটা ভিজিয়ে তোলে। কালবন্তের মনে হয় সে যেন গনগনে চুলোর ওপর বসানো হাঁড়ি। কিন্তু তাবত্ প্রাক্-প্রণয় সত্ত্বেও ইশেরের শিশ্ন অনুত্থিত রয়ে যায়। পাকা মল্লযোদ্ধার মতো যত জারিজুরি আছে, সবই কাজে লাগায় সে, কিন্তু কিছুতে কিছু হয় না। কালবন্ত তখন পুরোপুরি প্রস্তুত, ইশেরের এইসব জারিজুরি তার মোটেই ভালো লাগে না।

‘ইশের, সোনা, হয়েছে, আর না। এবার তুরুপের তাস ফেল,’ অস্ফুট স্বরে বলে সে।

সে কথা শুনে ইশেরের হাতের সব তাস যেন তছনছ হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। কালবন্তকে যে হাতে জড়িয়ে ধরে ছিল, তার মুঠি শিথিল হয়ে আসে; হাঁফাতে হাঁফাতে এলিয়ে পড়ে কালবন্তের পাশে। তার কপালজুড়ে ফোঁটা ফোঁটা ঘাম। এরপরও ইশেরকে প্রস্তুত করতে কালবন্ত বিস্তর চেষ্টা চালায়, কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না। ক্ষিপ্ত কালবন্ত বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়, দেয়ালে পেরেকে ঝোলানো চাদর টেনে নিয়ে গা ঢাকে। রাগে তার নাক স্ফিত হয়ে এসেছে, খ্যাপাটে গলায় কালবন্ত বলে, ‘ইশের, কোনো মাগীর সঙ্গে এই কটা দিন কাটালে, বল যে এখন তুমি এমন শুকনো চিঁড়েচিপ্টে হয়ে গেছ?’

ইশের সিং বিছানায় শুয়ে হাঁফায়, কোনো কথা বলে না।

‘কী, বেশ্যা মাগীটা কে, কথা বলছ না কেন?’ রাগে জ্বলে যাচ্ছিল কালবন্ত।

‘কেউ না, কেউ না, কালবন্ত।’ ইশেরের গলা শুনে মনে হয় সে ভীষণ ক্লান্ত।

পাছায় হাত রেখে মুখিয়ে ওঠে কালবন্ত, ‘বল, আমাকে সত্যি কথাটা বলতেই হবে। ধর্মগুরুর নামে কসম। কী, তোমার অন্য কোনো মাগী আছে?’

কিছু একটা বলার চেষ্টা করে ইশের, কিন্তু তাকে থামিয়ে দেয় কালবন্ত। ‘কসম খাওয়ার আগে একটা কথা মনে রেখো। আমিও নিহাল সিংয়ের বেটি। মিছে কথা বললে কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলব। বল, এবার কসম খেয়ে বল, অন্য কোনো মেয়েলোক আছে কি নেই?’

বিষণ্নভাবে মাথা দোলায় ইশের, নেই, ইঙ্গিতে সে বলে।

একেবারে দক্ষযজ্ঞ বাধিয়ে বসে কালবন্ত। মাটি থেকে কৃপাণখানা তুলে নেয় সে, যেন কলার খোসা ছড়াচ্ছে, এভাবে তার ঢাকনা খোলে, তারপর শাঁ করে ইশেরের ঘাড়ে একটা পোঁচড় দেয়। ফিনকি দিয়ে রক্ত ছোটে। পাগলের মতো কৃপাণ চালাতে থাকে কালবন্ত, আর অজ্ঞাতনামা মেয়েটির নামে খিস্তি করতে থাকে।

‘আহ্, থাম কালবন্ত, থাম,’ দুর্বল স্বরে বলে ইশের সিং। সে গলার স্বর এমন বিষণ্ন যে থমকে পড়ে কালবন্ত। রক্ত ততক্ষণে ইশেরের নাকে-মুখে ছড়িয়ে পড়েছে। কালবন্তের দিকে সে তাকায়, তার চোখে একই সঙ্গে কৃতজ্ঞতা ও প্রতিবাদ। ‘সোনা, তুই বড় বেহুঁশ হয়ে পড়েছিস। যা হয় তা ভালোর জন্যই হয়।’

কালবন্তের ঈর্ষা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ‘কে মাগীটা? ও কি তোর মা লাগে?’

রক্ত ততক্ষণে ইশেরের মুখে ছড়িয়ে পড়েছে। জিহ্বা দিয়ে চেটে নেয় সে রক্ত, সারা শরীর তার কেঁপে কেঁপে ওঠে।

‘ঐ, ঐ কৃপাণ দিয়ে ছয় ছয়টা মানুষ খুন করেছি আমি।’

‘বল, ঐ ছিনাল মাগীটা কে?’ কালবন্তের মাথায় তখন অন্য কোনো চিন্তা নেই, হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে সে।

ইশের সিংয়ের নিস্তেজ চোখ এক মুহূর্তের জন্য চিলিক দিয়ে ওঠে। ‘গুরুর দোহাই, ওকে গালমন্দ করিস না।’

চেঁচিয়ে ওঠে কালবন্ত, ‘কে, মাগীটা কে?’

‘বলছি, বলছি,’ ভাঙা ভাঙা গলায় মৃদুস্বরে বলে ইশের। ঘাড়ে হাত দিয়ে রক্ত স্পর্শ করে সে, মুখে মৃদু হাসি ধরে সে বলে, ‘পুরুষ মানুষ, কী অদ্ভুত জিনিস!’

‘যা বলার পষ্টাপষ্টি বল’, অধৈর্যের সাথে বলে কালবন্ত।

রক্তাক্ত গোঁফের নিচে দেঁতো হাসি দেয় ইশের। ‘বলছি, বলছি। তুই আমার গলায় ছুরি দিয়েছিস, তোকে এখন সব কথা বলতে হবে ধীরে ধীরে।’

পুরোনো কথা স্মরণ হওয়ায় ঠান্ডা ঘাম কপাল বেয়ে নামে ইশেরের। ‘কালবন্ত, জান আমার। বুঝতে পারছি না কোত্থেকে শুরু করি! শহরে দাঙ্গা শুরু হলে তাতে সবার মতো আমিও অংশ নিই। লুটের মাল আমি তোকে এনে দিয়েছি, কিন্তু সে সময় একটা কথা তোকে বলা হয়নি।’

ব্যথায় কুঁকড়ে ওঠে ইশের, কিন্তু সে দিকে নজর না দিয়ে কালবন্ত জিজ্ঞেস করে, ‘কী, কী কথা?’

গোঁফের ওপর জমে থাকা রক্তের ফোঁটার ওপর ফুঁ দিতে দিতে ইশের বলে, ‘যে বাড়িটায় আমি হামলা করি, সেখানে সব মিলিয়ে সাতজন মানুষ ছিল। তার ছয়জনকে আমি খুন করি, ঐ কৃপাণ দিয়ে, যেটা দিয়ে তুই আমাকে পোঁচ দিয়েছিস। সে বাড়িতে এক সুন্দরী মেয়েমানুষ ছিল। মেয়েটাকে আমি নিজে তুলে আনি।’

গভীর আগ্রহে সব কথা শুনতে থাকে কালবন্ত। গোঁফের ওপর জমা রক্ত ফুঁ দিয়ে সরাতে আরেকবার চেষ্টা করে ইশের। ‘কালবন্ত, জানু, তোকে বলে বোঝাতে পারব না, কী সুন্দর ছিল মেয়েটা! ওকেও খুন করতাম, কিন্তু ওকে দেখে মনে মনে বললাম, ইশের সিং, তুই তো রোজ কালবন্ত কাউরের সাথে ঘুমোস। একবার না হয় আরেকটা ফল চেখে দেখ।’

কালবন্ত শুধু অস্ফুট স্বরে বলে, ‘ওহ, আচ্ছা।’

‘মেয়েটাকে ঘাড়ে তুলে নিয়ে আমি বেরিয়ে আসি। যাবার সময়…হ্যাঁ, কী যেন বলছিলাম, ও হ্যাঁ, তারপর নদীর ধারে একটা ঝোপের কাছে নিয়ে ওকে নামালাম। ভাবলাম, দেরি না করে তক্ষুনি তাস বাটি। কিন্তু পর ভাবলাম, না থাক…।’ ইশেরের গলা একদম শুকিয়ে কাঠ।

‘তারপর কী?’ ঢোক গিলে জিজ্ঞেস করে কালবন্ত।

‘তারপর তুরুপের তাস চাললাম, কিন্তু… কিন্তু…’ ইশেরের গলা ততক্ষণে একদম মিইয়ে এসেছে।

‘কিন্তু কী?’ ইশেরকে ঝাঁকি দিয়ে বলে কালবন্ত।

ইশের সিং তার ক্লান্ত, ঘুমকাতুরে চোখ দুটি খুলে তাকায়, কালবন্তের সারা শরীর তখন কেঁপে কেঁপে উঠছে।

‘মেয়েটা ছিল মরা। একটা মরা মেয়ে মানুষের লাশ…একদম ঠান্ডা গোশত। আমার হাতটা একটু ধর, কালবন্ত।’

কালবন্ত কাউর নিজের হাত রাখে ইশেরের হাতের ওপর। বরফের চেয়েও ঠান্ডা সে হাত।

৪৪ পঠিত ... ১৭:৩২, জানুয়ারি ২৫, ২০২৪

Top